রাষ্ট্রদ্রোহের আরেক মামলায় বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দিয়েছে পুলিশ। একই মামলায় বিএনপি নেতার সঙ্গে আসামি করা হয়েছে একুশে টেলিভিশনের সাবেক চেয়ারম্যান আবদুস সালাম এবং একই টেলিভিশনের চাকরিচ্যুত দুই সাংবাদিক কনক সারোয়ার ও মাহতির ফারুকী খান।
মঙ্গলবার ঢাকা সিএমএম আদালতে ডিবি পুলিশের ইন্সপেক্টর ইমদাদুল হক ওই অভিযোগপত্র জমা দেন।
অর্থপাচার মামলায় সাত বছরের কারাদ- পাওয়া তারেক রহমান বর্তমানে যুক্তরাজ্যে অবস্থান করছেন। ২০০৪ সালের একুশে আগস্টের গ্রেনেড হামলা মামলা, জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট ও অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলাসহ বেশ কটি মামলায় তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি আছে। এ ছাড়া বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কটূক্তি ও আদালত অবমাননা মামলারও আসামি তিনি।
সবশেষ অভিযোগপত্র জমা দেয়ার মামলাটি হয় ২০১৫ সালের ৮ জানুয়ারি। যুক্তরাজ্য থেকে উস্কানিমূলক বক্তব্য দিয়ে তিনি সরকার পতন ও দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অভিযোগ করছেন বলে ওই মামলায় বলা হয়। তারেক রহমানের ওই বক্তব্যটি তখন ইটিভি সরাসরি সম্প্রসার করেছিল।
২০১৫ সালের ৮ জানুয়ারি তারেক রহমান এবং আবদুস সালামের বিরুদ্ধে তেজগাঁও থানার এসআই বোরহানউদ্দিন রাষ্ট্রদ্রেহের এই মামলাটি দায়ের করেন। এই মামলায় গত বছর ১৯ জানুয়ারি আদালতে স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি দেন সালাম।
অভিযোগে বলা হয়, ২০১৫ সালের ৪ জানুয়ারি যুক্তরাজ্য বিএনপির এক সভায় তারেক রহমান প্রায় ৫০ মিনিট ধরে বক্তব্য দেন। তাঁর এই দীর্ঘ বক্তব্য একুশে টেলিভিশন সরাসরি সম্প্রচার করে। এই বক্তব্যে বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতিকে নিয়ে কটাক্ষকর বক্তব্য রাখেন তারেক রহমান। ২০০৯ সালে বিডিআর বিদ্রোহ নিয়েও তিনি বিভ্রান্তিকর দাবি করেন।
পুলিশের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিএনপি নেতা উস্কানিমূলক বক্তব্যের মাধ্যমে সেনাবাহিনীর মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি করে সেনাবাহিনীকে উস্কে দেয়ার চেষ্টা করেছেন। এর মাধ্যমে সেনাবাহিনীতে তিনি বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করেছেন। একইভাবে তিনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মধ্যে অসন্তোষ ও বিভক্তি সৃষ্টির চেষ্টা করেন।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, তারেক রহমান ঢাকা শহরকে অন্য জেলা থেকে এবং ঢাকার এক এলাকাকে অন্য এলাকা থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেওয়ার জন্য তার দলের নেতাকর্মীদের নির্দেশ দেন। ফলে বিএনপি জামাতসহ ২০ দলীয় জোটের সমর্থকরা গত ৫ জানুয়ারি (২০১৫ সালের) দেশের বিভিন্ন স্থানে ধ্বংসাত্মক কার্যক্রমের মাধ্যমে জানমালের ব্যাপক ক্ষতি করার উস্কানি পায়।
পুলিশ প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠিত, গণতান্ত্রিক ও আইনানুগ সরকারের বিরুদ্ধে মিথ্যা, বানোয়াট, ভিত্তিহীন, উস্কানিমূলক বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রকাশ করে আসামিরা রাষ্ট্রদ্রোহিতার অপরাধ করেছেন।
ইটিভিতে তারেক রহমানের ওই বক্তব্য প্রচারের পরই ২০১৫ সালের ৫ জানুয়ারি মধ্যরাতে টিভি কার্যালয়ের নিচ থেকে সালামকে আটক করে গোয়েন্দা পুলিশ। এরপর তাকে ক্যান্টনমেন্ট থানার পর্নোগ্রাফি আইনের একটি মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখায়।
(ঢাকাটাইমস/৬সেপ্টেম্বর/ডব্লিউবি)