পদে থাকার বৈধতা: দুই মন্ত্রীর বিষয়ে রিটের শুনানি শুরু
নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
০৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ১৮:১৭:৪৫

সংবিধান রক্ষার শপথ ভঙ্গ করার পরও খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের মন্ত্রিত্ব পদের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিট আবেদনের শুনানি শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার বিচারপতি মাইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি আশিষ রঞ্জন দাসের বেঞ্চে এই রিটের শুনানি শুরু হয়। দুই পক্ষের বক্তব্য শেষে শেষে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত মূলতবি হয় শুনানি।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ইউনুছ আলী আকন্দ সোমবার হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এই রিট আবেদন করেন। আইনে সংবিধান রক্ষার শপথ ভঙ্গ করলে শাস্তি বলা নেই। প্রথম দিনের শুনানিতেও রিটকারী আইনজীবীর কাছে এ্ বিষয়টি জানতে চান বিচারক।
ইউনুছ আলী আকন্দ জানান, এই প্রশ্নের জবাবে তিনি আদালতে বলেছেন, ‘পাবলিক সার্ভেন্ট ডিসমিসাল অন কনভিকশন অর্ডিনেন্স অনুযায়ী কোনো ব্যক্তির ১০ হাজার টাকা জরিমানা হলে তিনি রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকতে পারেন না। কিন্তু দুই মন্ত্রীর জরিমানা হয়েছে ৫০ হাজার টাকা। তাই তাদের আর পদে থাকার যোগ্যতা নেই।
আদালত তার যুক্তির পরিপ্রেক্ষিতে তাকে শপথ ভঙ্গের আইন ও এ সংক্রান্ত দেশি-বিদেশি নজির আদালতে উত্থাপনের নির্দেশ দেন।
এই রিট আবেদনে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন মোতাহার হোসেন।
এর আগে গত শনিবার এই দুই মন্ত্রীকে উকিল নোটিস পাঠান ইউনুছ আলী আকন্দ। দুই মন্ত্রী ‘সংবিধান রক্ষার শপথ ভেঙেছেন’ বলে সর্বোচ্চ আদালতের পর্যবেক্ষণ আসার পরও তারা ‘কোন কর্তৃত্ববলে’ পদে রয়েছেন, তা জানতে চাওয়া হয় সেখানে।
নোটিস পাওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দুই মন্ত্রীর জবাব চাওয়া হয়েছিল নোটিসে। জবাব না দেওয়ায় এই রিট করা হয়েছে বলে জানান ইউনুছ।
তার রিট আবেদনে বলা হয়, আপিল বিভাগের ওই রায়ের পর মন্ত্রী ও সংসদ সদস্য পদ ‘আঁকড়ে থাকার কোনো অধিকার’তাদের নেই।
মানবতাবিরোধী অপরাধে জামায়াত নেতা মীর কাসেম আলীর আপিল রায়ের আগে প্রধান বিচারপতিকে নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করেন দুই মন্ত্রী। গণমাধ্যমে এই খবর প্রকাশ হওয়ার পর দুই মন্ত্রীর বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ আনা হয়। আর দুই মন্ত্রীর নিঃশর্ত ক্ষমার আবেদন করেন। এই আবেদন প্রত্যাখ্যান করে প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহাসহ আট সদস্যের আপিল বিভাগ গত ২৭ মার্চ দুই মন্ত্রীকে ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড করে। গত বৃহস্পতিবার প্রকাশ হওয়া রায়ে দেখা যায়, পাঁচ বিচারপতি লিখেছেন, দুই মন্ত্রী বিচার বিভাগ নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করে সংবিধান রক্ষার শপথ ভঙ্গ করেছেন।
এ বিষয়ে মন্ত্রী কামরুলের কোনো প্রতিক্রিয়া না পাওয়া গেলেও মোজাম্মেল শনিবার এক আলোচনা অনুষ্ঠানে বলেছেন, তিনি ‘জেনেশুনে’ সংবিধান লঙ্ঘন করেননি। দুই মন্ত্রী সোমবার মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকেও অংশ নিয়েছেন।
এরই মধ্যে বিএনপির পক্ষ থেকে দুই মন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করা হয়েছে। সেই সঙ্গে গত ২৭ মার্চ থেকে তাদের সই করা সব ফাইল বাতিলের দাবি করা হয়েছে।
(ঢাকাটািইমস/০৬সেপ্টেম্বর/ডব্লিউবি)