ফরিদপুরে চামড়া নিয়ে বিপাকে ব্যবসায়ীরা
শেখ মফিজুর রহমান শিপন, ঢাকাটাইমস
১৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ১৯:০২:১৬

এই বছরে কোরবানির পশুর চামড়ার ভাল দাম না পেয়ে হতাশ ফরিদপুর অঞ্চলের ব্যবসায়ীরা। এই জেলায় অনেক পরিবার চামড়া বেচতে না পেরে এখানে বাড়িতে ফেলে রেখেছে পশুর চামড়া। আর এতে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পরিবেশ নষ্ট করছে।
গত তিন বছর ধরেই ক্রমাগত চামড়ার দাম কমিয়ে আসছেন ব্যবসায়ীরা। এবার ঈদের আগে ব্যবসায়ীদের সংগঠন ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশন যে দর বেঁধে দিয়েছে সেই দরে চামড়া কিনতে পারেনি বেশিরভাগ মৌসুমি ক্রেতারা। এখন আড়তে চামড়া নিয়ে গিয়ে মাথায় হাত তাদের।
ফরিদপুর জেলার নয়টি উপজেলায় ঈদুল আজহায় ধর্মপ্রাণ মানুষ বিভিন্ন ধরনের পশু কোরবানি দিয়েছে অর্ধ লক্ষাধিক। কিন্তু এই পশুর চামড়া বেচতে গিয়ে হতাশ এই অঞ্চলের মানুষ। কোরবানিদাতা অনেক পরিবার তাদের প্রিয় পশুর চামড়া বেচতে না পেরে ফেলে রেখেছে বাড়িতে, কেউ আবার পাশের এতিমখানা বা ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে দান করে দিয়েছেন।
বোয়ালমারী কওমি মাদ্রসার শিক্ষক মো. মিরাজুল ইসলাম জানান, সরকারে বেঁধে দেয়া দামের অর্ধেকের ও কম মূল্যে চামড়া বিক্রয় করতে হয়েছে ব্যবসায়ীদের কাছে। অনেকে আবার ভালো দাম না পেয়ে স্থানীয় বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ও এতিমখানায় বিনামূল্যে দান করে দিয়েছে বলে তিনি জানান।
বোয়ালমারীর সোতাসী এলাকার রহমানিয়া আরাবিয়া মাদ্রাসা ও এতিমখানার অধ্যক্ষ মাওলানা মিজানুর রহমান জানান, ছাগলের চামড়া প্রতিটি ৩০ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রয় করতে হয়েছে, অন্যদিকে খুব ভাল গরুর চামড়া সর্বোচ্চ ৬শ থেকে ৮শ টাকায় বিক্রয় করতে হয়েছে।
তিনি বলেন, যদি সঠিক দামটি আমরা পেতাম তাহলে ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলো আর্থিক স্বচ্ছলতা ভালো হতো।
তিনি বলেন, বাজার ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, চামড়া সংরক্ষণের প্রয়োজনীয় লবণ না সরবরাহ থাকায় চামড়ার ব্যবসায় এই ধস নেমেছে।
এবার ট্যানারি মালিকদের সংগঠন ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশন রাজধানীতে লবণযুক্ত চামড়ার দাম নির্ধারণ করেছে বর্গফুটপ্রতি ৫০ টাকা। ঢাকার বাইরে এই দাম ৪০ টাকা। অর্থাৎ লবণছাড়া দাম হওয়ার কথা আরও কম। কিন্তু এই হিসাব ধরে চামড়া কিনতে পারেনি মৌসুমি ব্যবসায়ীরা।
ক্রয় মূল্যের চেয়ে এবার আড়তে দাম কম বলা হচ্ছে তিন থেকে চারশ টাকা। এই অবস্থায় ফরিদপুরের মোটা অংকের টাকা লোকসানের আশঙ্কায় পড়েছেন মৌসুমি ব্যবসায়ীরা।
একাধিক চামড়া ব্যবসায়ী জানান, চামড়া ব্যবসায় জড়িত বেশকিছু প্রতিষ্ঠানও ছিল। কিন্তু ভারতে চামড়া পাচার, ট্যানারি মালিকরা টাকা সময়মতো টাকা পরিশোধ না করাসহ নানা কারণে ব্যবসায় উৎসাহ হারিয়েছেন প্রতিষ্ঠানের উদ্যোক্তারা।
ফরিদপুর শরিয়াতুল্লাহ বাজার কমিটির সভাপতি নূর ইসলাম মোল্লা জানান, এবার লবণের দাম হঠাৎ করে বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে। কেবল দাম বেড়েছে তা নয়, ৭৫ কেজির বস্তা লবণ পাওয়া গেছে ৫৭ কেজি পর্যন্ত। অথচ লবণ ছাড়া চামড়া প্রক্রিয়াজাত করা যায় না।
(ঢাকাটাইমস/১৪ সেপ্টেম্বর/প্রতিনিধি/এলএ)