সাকার রায় ফাঁস: স্ত্রী-পুত্র খালাস, পাঁচজনের সাজা
আদালত প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
১৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ১৪:১১:৪৭

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর রায় ফাঁসের মামলায় আইনজীবী ফখরুল ইসলামের ১০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। একই সঙ্গে তাকে এক কোটি টাকা অর্থদণ্ড এবং তার সহকারী মেহেদী হাসান, মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়া বিএনপি নেতার সহকারী মাহবুবুল আহসান ও আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের দুই সাবেক কর্মচারী নয়ন আলী ও ফারুক হোসেনকে সাত বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
সকালে সাইবার ক্রাইম ট্রাইব্যুনালের বিচারক কে এম শামসুল আলম এই রায় ঘোষণা করেন। এই মামলায় সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর স্ত্রী ফারহাত কাদের চৌধুরী ও ছেলে হুম্মাদ কাদের চৌধুরীকেও আসামি করেছিল পুলিশ। তবে তাদেরকে কোনো সাজা দেয়নি আদালত। রাষ্ট্রপক্ষ তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ করতে পারেনি বলে জানিয়েছেন বিচারক।
গত ১৪ আগস্ট এই রায় ঘোষণা করার কথা ছিল। তবে আসামিরা হাজির না হওয়ায় সেদিন রায় ঘোষণা পিছিয়ে ২৮ আগস্ট তারিখ দেয় আদালত। তবে সেদিনও রায় ঘোষণা হয়নি।
গত ৪ আগস্ট মামলার আসামি সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ছেলে হুম্মাম কাদের চৌধুরী নিরুদ্দেশ হন। পরিবারের পক্ষ থেকে হুম্মামকে গোয়েন্দা পরিচয়ে তুলে নেয়ার অভিযোগ করা হয়েছে। তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এই অভিযোগকে অমূলক বলছে।
সকালে রায় ঘোষণার আগে সাইবার ক্রাইম ট্রাইব্যুনালে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর স্ত্রী ফারহাত কাদের চৌধুরী উপস্থিত থাকলেও ছিলেন না হুম্মাম কাদের চৌধুরী।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর কাদের চৌধুরীর মামলা দেখাশোনা করতেন আইনজীবী ফখরুল ইসলাম। তার পরিকল্পনা ও নির্দেশেই ২০১৩ সালের ১ অক্টোবর বিএনপি নেতাকে দেয়া মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণার আগেই ট্রাইব্যুনালের কম্পিউটার থেকে তার একাংশ ফাঁস হয়।
সদস্য সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর রায় ঘোষণার আগেই ট্রাইব্যুনালে তার আইনজীবী ও পরিবারের সদস্যরা রায়ের খসড়া কপি সংবাদকর্মীদের দেখান। তারা তখন অভিযোগ করেছিলেন, আইন মন্ত্রণালয় এই রায় লিখে দিয়েছে আর ট্রাইব্যুনাল সেটি পড়েছে।
কিন্তু পরে তদন্তে বেরিয়ে আসে আসল ঘটনা। পরদিন ট্রাইব্যুনালের রেজিস্ট্রার এ কে এম নাসির উদ্দিন মাহমুদ বাদী হয়ে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনে শাহবাগ থানায় একটি মামলা করেন। ঢাকার মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) তদন্ত শেষে ২০১৪ সালের ২৮ আগস্ট সাকার স্ত্রী, ছেলে ও আইনজীবীসহ সাতজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয়।
পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়, সালাউদ্দিন কাদেরের আইনজীবীর সহকারী মেহেদী বড় অঙ্কের অর্থের লোভ দেখিয়ে ট্রাইবুনালের দুই কর্মীর মাধ্যমে রায়ের খসড়ার অংশবিশেষ বের করেন। ওই অংশটিই রায়ের দিন আদালতে সাংবাদিকদের দেখানো হয়।
পরে ট্রাইব্যুনালের দুই সাবেক কর্মচারী নয়ন আলী ও ফারুক হোসেন এ মামলায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন বলেও রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীর জানিয়েছেন।
গত ১৫ ফেব্রুয়ারি এই সাত আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে সাইবার ট্রাইব্যুনালে তাদের বিচার শুরু হয়। সাক্ষ্য শুরু হয় ওই বছরের ২৮ মার্চ।
মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে চট্টগ্রামের ত্রাস সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর মৃত্যুদণ্ড এরই মধ্যে কার্যকর হয়েছে। গত ২১ নভেম্বর দিবাগত রাতে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়।
(ঢাকাটাইমস/১৫সেপ্টেম্বর/ডব্লিউবি)