ঢাকা: দেশের সর্বত্র ইন্টারনেট পৌঁছে দেয়ার লক্ষ্যে ইন্টারনেটের ব্যান্ডউইথ এর মূল্য কমানোর ক্ষেত্রে সরকারি বেসরকারি এবং ডাটা কানেক্টিভিটি, ইন্টারনেট ও সফটওয়্যার প্রতিষ্ঠানের উচ্চ পদস্থ নীতিনির্ধারনগণের উপস্থিতিতে বেসিসের উদ্যোগে ৩১ আগস্ট শনিবার রাজধানীর একটি হোটেলে গোলটেবিল সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়।
এতে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বিটিআরসি’র চেয়ারম্যান সুনীল কান্তি বোস, ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আবু বকর সিদ্দিক এবং তথ্য ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. নজরুল ইসলাম খান। সংলাপে সঞ্চালকের দায়িত্ব পালন করেন ইউনিভাসিটি অব এশিয়া প্যাসিফিক এর উপাচার্য এবং বিশিষ্ট তথ্য প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ ড. জামিলুর রেজা চৌধুরী।
সংলাপে বক্তারা বলেন, সরকার ইন্টারনেটের দাম কমানো সত্বেও সারাদেশে সুলভে উচ্চমানের ইন্টারনেটের সেবা না পৌঁছানোর প্রধান কারণ হচ্ছে দেশব্যাপী ফাইবার অপটিক ট্রান্সমিশন নেটওয়ার্কের অপ্রতুলতা। এ ব্যাপারে সরকারি বিনিয়োগ যেমন কম, তেমনি অনেক জায়গায় বাজার এবং সহায়ক নীতি কাঠামো না থাকায় প্রাইভেট সেক্টরও যথাযথ বিনিয়োগ করছে না। এ প্রেক্ষিতে অতিসত্ত্বর একটি সরকারের পক্ষ থেকে একটি সুস্পষ্ট নীতিমালা প্রণয়নের সুপারিশ করেন।
বিটিআরসি চেয়ারম্যান তার বক্তব্যে উল্লেখ করেন, সারাদেশে বিশেষ করে সকল জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে ইন্টারনেট সংযোগ পৌঁছে দেয়ার লক্ষ্যে বর্তমানে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে বিদ্যমান সকল শক্তি, সামর্থ্য এবং অবকাঠামো সমন্বিতভাবে কাজে লাগাতে হবে। তিনি বলেন, বিটিআরসি নিয়ন্ত্রকের ভূমিকায় নয়, বরং জনস্বার্থ রক্ষায় সহায়ক সহজ নীতি প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করতে চায়। অচিরেই বিটিসিএল আরো ৪৮০০ কি.মি. ফাইবার অপটিক ক্যাবল স্থাপন করতে যাচ্ছে বলেও তিনি জানান।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব মো. আবু বকর সিদ্দিক বলেন, কেবলমাত্র নাগরিক সেবা নিশ্চিত করতে সরকারের অনেক অলাভজনক প্রতিষ্ঠান উপজেলা পর্যায়ে কাজ করছে। অথচ বেসরকারী উদ্যোক্তারা কেবল ব্যবসায়িক লাভ ছাড়া কোনো বিনিয়োগ করতে উৎসাহী হন না। তিনি টেলিকম খাতের উদ্যোক্তাদের এ ব্যাপারে আরো উদার হওয়ার পরামর্শ দেন।
সংলাপে সারাদেশের ১৮ হাজার সরকারী দপ্তর, কয়েক হাজার বিদ্যালয়ে মাল্টিমিডিয়া শ্রেণিকক্ষসহ ইউনিয়ন পরিষদের তথ্য কেন্দ্রে ব্যবহারের জন্য দেশব্যাপী ব্রডব্যান্ড সংযোগ স্বল্পখরচে নিশ্চিত করা প্রয়োজন বলে বক্তাগণ উল্লেখ করেন। মোবাইল অ্যাপস থেকে আয়ের সুষম বণ্টনের ব্যাপারেও একটি সুস্পষ্ট নীতিমালা থাকা বাঞ্চনীয় বলেও সভায় মত প্রকাশ করা হয়।
সংলাপে অন্যান্যের মধ্যে অংশ নেন বেসিসের সভাপতি ফাহিম মাশরুর, সিনিয়র সহ-সভাপতি শামীম আহসান, আইএসপিএবি ও বেসিস-এর সহ-সভাপতি সৈয়দ আলমাস কবির, এটুআই-এর পলিসি এডভাইজার আনীর চৌধুরী, সামিট কমিউনিকেশন্স এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক আরিফ আল ইসলাম, ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ফরিদ খান, ম্যাংগো টেলিসার্ভিসেস এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসুদ কবির, অ্যামটবের মহাসচিব টিআইএম নুরুল কবির প্রমুখ। উল্লেখ্য, সংলাপের সহ-আয়োজক ছিল দি এশিয়া ফাউন্ডেশন।