logo ১০ মে ২০২৫
সড়ক যেন দোলনা
তানিম আহমেদ, ঢাকাটাইমস
১১ সেপ্টেম্বর, ২০১৩ ১০:৫৩:২৫
image


ঢাকা: কামরুল আহসান গাবতলী-সদরঘাট রাস্তায় নিয়মিত যাতায়াত করেন। তার অফিস সদরঘাট। স্বাভাবিকভাবে গাবতলী থেকে সদরঘাট যেতে সময় লাগার কথা এক ঘন্টা। কিন্তু সেখানে তার সময় লাগে দুই থেকে আড়াই ঘন্টা। শুধু তাই নয়, প্রতিদিনই একটি করে ‘পেইন কিলার’ খেতে হয় কামরুলকে। কারণ পুরো রাস্তাটিই খানাখন্দে ভরা। গাড়ির ঝাঁকুনিতে শরীর ব্যথায় বুদ।



মঙ্গলবার ঢাকাটাইমস টোয়েন্টিফোর ডটকমের এ প্রতিবেদকের কাছে এমনই প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন কামরুল আহসান।



কামরুল বলেন, সড়ক নয় এ যেন দোলনা। মনে হয় ফ্যান্টাসি কিংডমের কোন রাইডে আছি। শুধু তিনিই নয়, এমন তিক্ত অভিজ্ঞতা সড়কটিতে নিয়মিত যাতায়াতকারী সবার। ভাঙ্গা আর গর্তে ভরা এ সড়কে তাদের পোহাতে হয় চরম ভোগান্তি।



সরেজমিন  গিয়ে দেখা যায়, গাবতলী থেকে বাবুবাজার ব্রিজ পর্যন্ত প্রায় সম্পূর্ণ সড়কটিই খানা-খন্দে ভরা। ৪০ মিনিটের পথ যেতে লাগে দেড় ঘণ্টারও বেশি।





ব্রাদার্স পরিবহনের টিকিট চেকার মাহবুব রশিদ ঢাকাটাইমস টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, হেঁটে চলার  মতো পথ নেই, সেখানে গাড়ি কীভাবে চলে তা কল্পনা করা যায় না। ব্রাদার্স পরিবহনের চালক নিজাম বলেন, একদিন গাড়ি চালালে অসুস্থ হয়ে যাই, পরদিন গাড়ি চালাতে পারি না।



এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দেড় মাস আগে যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়েদুল কাদের এই রাস্তা পরিদর্শনে এসেছিলেন। তিনি আমাদের আশ্বাস দিয়েছিলেন অল্প কিছু দিনের মধ্যে এই রাস্তা ঠিক করে দেয়া হবে। কিন্তুু এখনও ঠিক করা শুরু হয়নি। এই রাস্তা ঠিক করার দাবিতে এলাকাবাসী মানববন্ধন করেছে। নেতারা আশ্বাস দেন কিন্তু পূরণ করেন না। তাদের শুধু নির্বাচনের সময় দেখা যায়।



কলেজ ছাত্র রবিন বলেন, বিকল্প না থাকায় এই রাস্তা দিয়ে চলাচল করি। ছালছাবিল পরিবহনের হেল্পার বলেন, সকালে একটা চাকা পাংচার হয়েছে সেটা ঠিক করেছি। এখন আরেকটা চাকা পাংচার হয়েছে। গাড়ির মেয়াদ দুই বছর হলে এখানে তা এক বছরও টিকে না।



চকবাজারের ব্যবসায়ী সাইফুল বলেন, এই রাস্তাটি রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ সড়ক কিন্তু সরকার কোনো তদারকি করে না।  দেখলে মনে হয় এটা রাস্তা নয় যেন ধান ক্ষেত। এই রাস্তা ঠিক হলে আমাদের উত্তরবঙ্গের সাথে সহজে লেনদেন করা যেত।



ছালছাবিল পরিবহনের ব্যবস্থাপক আনছার ভূঞা বলেন, মালিক গাড়ি বিশ দিন বন্ধ রেখেছিল লোকসানের কারণে। কিন্তু আমরা অনেক অনুরোধ করে গাড়ি রাস্তায় নামিয়েছি। কারণ গাড়ি না চললে আমাদের রোজগার বন্ধ হয়ে যাবে। পরিবার না খেয়ে থাকবে।





ব্রাদার্স ও ছালছাবিল পরিবহনের বাস ছিল ১৫০ টি। এখন ১০০টির মত আছে। আবার তার মধ্যে কিছু গ্যারেজে আছে ।



সরেজমিনে দেখা গেছে, গাবতলী থেকে মোহাম্মদপুর পর্যন্ত রাস্তা খানা-খন্দে ভরা, মোহাম্মদপুর থেকে কোম্পানীঘাট পর্যন্ত রাস্তা কিছুটা ভালো, কোম্পানীঘাট থেকে সেকশন পর্যন্ত গর্ত আর গর্ত, সেকশন থেকে লোহার ব্রিজ পর্যন্ত কিছুটা ভালো, লোহার ব্রিজ হতে বাবুবাজার ব্রিজ পর্যন্ত গর্ত। সামান্য বৃষ্টি হলে মনে হয় রাস্তায় চলাচলে সমস্যা হয়।





সড়কের লালবাগ অংশের এমপি মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন ঢাকাটাইমস টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, খুব তাড়াতাড়ি মেরামত করা হবে। যোগাযোগমন্ত্রীর সাথে আমি কথা বলেছি। বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে।



গাবতলীর এমপি আসলামুল হকের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি।



(ঢাকাটাইমস/১০সেপ্টেম্বর/টিএ/এমএম/জেডএ/ঘ.)