ঢাকা: দেশের আর্থ-সামাজিক অগ্রগতিতে শিল্পখাতের অবদান ক্রমেই সুসংহত হচ্ছে। ২০১২-১৩ অর্থ বছরে শিল্পখাত শতকরা ৮ দশমিক ৯৯ ভাগ প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে। গত চার বছরে জাতীয় আয়ে শিল্পখাতের অবদান শতকরা ২৯ ভাগ থেকে বেড়ে ৩২ ভাগে দাঁড়িয়েছে। এ প্রবৃদ্ধির পেছনে ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পখাতের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।
জাতীয় ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প সমিতি, বাংলাদেশ (নাসিব) এর বার্ষিক সাধারণ সভা-২০১৩ ও নতুন নির্বাচিত কেন্দ্রিয় কমিটির আভিষেক উপলক্ষে আয়োজিত ’আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পখাতের অবদান’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তারা এ কথা বলেন। গতকাল রাজধানীর একটি হোটেলে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। শিল্পমন্ত্রী দিলীপ বড়ুয়া এতে প্রধান অতিথি ছিলেন।
নাসিব কেন্দ্রিয় কমিটির নব নির্বাচিত সভাপতি মির্জা নূরুল গণি শোভন এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে এফবিসিসিআই’র প্রেসিডেন্ট কাজী আকরাম উদ্দিন আহমেদ, বিসিক চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর সিকদার, নাসিবের সহসভাপতি অধ্যাপক মাসুদা এম. রশিদ চৌধুরীসহ নব নির্বাচিত কমিটির নেতারা বক্তব্য রাখেন।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, টেকসই ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পখাত গড়ে তোলার মাধ্যমে শিল্পসমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মাণের লক্ষ্য অর্জন সম্ভব। এক্ষেত্রে উৎপাদিত পণ্যের বাজার সৃষ্টি ও পণ্য বৈচিত্রকরণে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা বাড়াতে হবে। তারা ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পখাতের উদ্যোক্তাদের দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য তৃণমূল পর্যায়ে প্রশিক্ষণ ও সহজশর্তে ঋণ সুবিধা বাড়ানোর তাগিদ দেন। একই সঙ্গে তারা এ শিল্পখাতের উদ্যোক্তাদের উৎপাদিত পণ্যের উপযুক্ত মূল্য নিশ্চিত করতে উপজেলা পর্যায়ে সরকারি উদ্যোগে বিক্রয় ও প্রদর্শনী কেন্দ্র স্থাপনের পরামর্শ দেন।
শিল্পমন্ত্রী বলেন, ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পখাত হচ্ছে শিল্পভিত্তিক অর্থনীতির মেরুদন্ড। শ্রমঘন শিল্পায়নের মাধ্যমে কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও দারিদ্র্য বিমোচনে এ খাত গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। এ খাতের উন্নয়নে সরকার জাতীয় হস্ত ও কারু শিল্পনীতি প্রণয়ন করছে। মহাজোট সরকারের বাস্তবসম্মত আর্থিক নীতিমালার কারণে গত চার বছরে গড়ে ৬ দশমিক ১৮ শতাংশ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন সম্ভব হয়েছে। বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দার মাঝেও বাংলাদেশ অর্থনৈতিকভাবে সম্ভাবনাময় এগারটি দেশের একটিতে পরিণত হয়েছে। বিশ্ব মন্দা বাংলাদেশি পণ্য রপ্তানির নতুন সম্ভাবনা তৈরির পাশাপাশি রেমিট্যান্স প্রবাহ জোরদার করে জনগণের ক্রয়ক্ষমতা বাড়িয়েছে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
দিলীপ বড়ুয়া বলেন, শিল্পায়নের জন্য বিদ্যুতের সহজলব্যতা অন্যতম শর্ত। মহাজোট সরকার নিজস্ব উৎপাদন বৃদ্ধির পাশাপাশি প্রতিবেশি দেশ ভারত থেকে বিদ্যুৎ আমদানি করে টেকসই শিল্পখাত গড়ে তোলার উদ্যোগ নিয়েছে। ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প উদ্যোক্তাদের অর্থায়ন সমস্যার সমাধানে বন্ধকী ছাড়া ঋণ প্রদান, বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোতে এসএমই ডেস্ক স্থাপন, সিঙ্গেল ডিজিট সুদে ঋণ প্রদান, মহিলা উদ্যোক্তাদের প্রশিক্ষণ ও তথ্য-প্রযুক্তি সেবা জোরদার করা হয়েছে। সরকার নিজে শিল্প স্থাপন না করলে ও দক্ষ বেসরকারি খাত গড়ে তোলার লক্ষ্যে কাজ করছে বলে তিনি জানান।
(ঢাকাটাইমস/০৯ অক্টোবর/এজেড/১৪.২০ঘ.)