logo ০৫ মে ২০২৫
প্রধানমন্ত্রী হতে চেয়েছিলেন এরশাদ
হাবিবুল্লাহ ফাহাদ, ঢাকাটাইমস
০৫ ডিসেম্বর, ২০১৩ ০০:০২:২৪
image


ঢাকা: ৩০০ সংসদীয় আসনের বিপরীতে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন জাতীয় পার্টির প্রার্থীরা। নির্বাচনে যাওয়ার সব প্রস্তুতিও ছিল ঠিকঠাক। কিন্তু দৃশ্যত কোনো ছাড়াই মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার পর দিন ৩ ডিসেম্বর নির্বাচন থেকে সরে আসার ঘোষণা দেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। শেষ মুহূর্তে এসে এরশাদের এ ঘোষণা নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনসহ বিভিন্ন মহলে নতুন কৌতূহলের জন্ম দেয়। গত দুদিন ধরে এনিয়ে চলছে নানা আলোচনা-সমালোচনাও। সবাই খুঁজে ফিরছেন রাজনীতিতে ‘আনপ্রেডিক্টেবল’ বলে পরিচিত এরশাদের পাল্টে যাওয়ার রহস্য।

সরকারের নীতি নির্ধারণী সূত্র ঢাকাটাইমস টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানায়, প্রধানমন্ত্রী হতে চেয়েছিলেন সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার কাছে এ প্রস্তাব দিয়েছিলেন তিনি। সঙ্গে ছিল বেশকিছু দাবি-দাওয়া। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী প্রস্তাবে রাজি না হওয়ার নির্বাচন থেকে সরে আসার ঘোষণা দিয়েছেন এরশাদ।  

সূত্র আরও জানায়, প্রধানমন্ত্রীকে এরশাদ বলেন, তিনি ইতিমধ্যে সবার কাছে আওয়ামী লীগের ‘দালাল’ বলে পরিচিত হয়েছেন। সব দল নির্বাচনে না গেলে তিনি নির্বাচনে যাবেন না-এমন ঘোষণা থেকেও সরে এসেছেন। তাই এখন তাঁর একটিও চাওয়া  তিনি প্রধানমন্ত্রী হবেন। অন্তত দুই বছরের জন্য তাঁর এই চাওয়ার পূরণের দাবি জানিয়েছিলেন এরশাদ। পাশাপাশি বিভিন্ন আসন থেকে নিজ দলের পছন্দের প্রার্থীদের নির্বাচিত হওয়ার নিশ্চয়তাও চেয়েছিলেন সাবেক এই সেনাশাসন। শুধু তাই নয়, নির্বাচনী খরচের জন্য আসন প্রতি এক কোটি টাকা করেও দাবি করেছিলেন তিনি। এসব দাবি মেনে নিলেই নির্বাচনে যাবেন বলে জানিয়েছিলেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান।  

সরকারের নির্ভরযোগ্য সূত্র ঢাকাটাইমস টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানায়, এরশাদের এসব দাবি-দাওয়ার কথা শুনে অনেকটাই অবাক হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তবে জাতীয় পার্টির নির্বাচনী খরচের জন্য শত কোটি টাকা দেয়ার রফা হয়েছিল। কিন্তু এরশাদ তাতেও রাজি হননি। তাই সংশ্লিষ্টরা ধারণা করছেন, এরশাদের কাছে এর চেয়েও বড় আকারের কোনো প্রস্তাব রয়েছে। সেই প্রস্তুাব লুফে নিতেই এরশাদ হঠাৎ করেই নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন।     

এর আগে গত ১১ নভেম্বর এক বক্তৃতায়  এরশাদ বলেছিলেন,  ‘সব দলের অংশ গ্রহণ ছাড়া নির্বাচনে গেলে মানুষ থুতু দেবে’। কিন্তু এর সাতদিন পর ১৮ নভেম্বর ভোল পাল্টে ফেলেন তিনি। বলেন, ‘সরকারকে সরাতে যেহেতু নির্বাচনের দরকার হয়, তাই ‘নির্বাচনে না গেলে মানুষ আমাকে থুতু দেবে’। এ বক্তব্যের পর নির্বাচনকালীন সরকারের মন্ত্রিসভাতে জাতীয় পার্টি থেকে ছয়জন মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী ও একজন উপদেষ্টা শপথ নেন। তাঁর দাবি অনুযায়ী পছন্দের একাধিক মন্ত্রণালয়ও দেয়া হয় জাতীয় পার্টির মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীদের। গত ২ ডিসেম্বর ৩০০ সংসদীয় আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থীরাও মনোনয়নপত্র জমা দেন। ঢাকা-১৭ আসনে নির্বাচন করার জন্য এরশাদ নিজেও মনোনয়নপত্র জমা দেন। কিন্তু তার একদিন পর হঠাৎ নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়ে এরশাদ বলেন, আগে তিনি নির্বাচনে না যাওয়ার যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তা রক্ষা করতেই নির্বাচনে যাবেন না তিনি। এর ধারাবাহিকতায় ৪ নভেম্বর দলের মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীদের পদত্যাগেরও নির্দেশ দেন। আজ জাপার মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীদের পদত্যাগের কথা রয়েছে। তবে নির্বাচন বর্জনের ঘোষণার পর নির্বাচন কালীন সরকারের মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকে জাতীয় পার্টির নেতারা নির্বাচনে যাওয়ার ব্যাপারে তারা সম্মত বলে জানিয়েছিলেন।

(ঢাকাটাইমস/ ৫ ডিসেম্বর/ এইচএফ/ ১২.০০ঘ.)