ঢাকা: অবৈধ প্রক্রিয়ায় মুক্তিযোদ্ধা সনদ নেয়ার অভিযোগে চার সচিব ও এক যুগ্ম-সচিবের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সুপারিশ জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পৌঁছেছে।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী বুধবার জানান, আগের দিন দুদকের সুপারিশ হাতে পেয়েছেন তিনি।
সুপারিশ অনুযায়ী এখন ওই কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার প্রক্রিয়া শুরু হবে কি না জানতে চাইলে সরাসরি উত্তর না দিয়ে বলেন, বিষয়টি মন্ত্রণালয়ে বৈঠকে সিদ্ধান্ত হবে।
তিনি বলেন, এরা কোন প্রক্রিয়ায় সনদ নিয়েছেন এবং কারা তাদের সনদ দিয়েছেন তা খতিয়ে দেখা হবে।
স্বাস্থ্য সচিব নিয়াজ উদ্দিন মিয়া, সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) সচিব এ কে এম আমির হোসেন এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক সচিব মোল্লা ওয়াহিদুজ্জামান (বর্তমানে প্রতিমন্ত্রী মর্যাদায় বেসরকারীকরণ কমিশনের চেয়ারম্যান) অবৈধ প্রক্রিয়ায় মুক্তিযোদ্ধার সনদ নিয়েছেন বলে প্রমাণ পেয়েছে দুদক।
এছাড়া মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব কে এইচ মাসুদ সিদ্দিকী (বর্তমানে ওএসডি) এবং মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব (ওএসডি) আবুল কাসেম তালুকদারও একই প্রক্রিয়ায় মুক্তিযোদ্ধা সনদ নিয়েছেন বলে দুদকের তদন্তে প্রমাণ মিলেছে।
এই চার সচিব ও এক যুগ্ম-সচিবের মুক্তিযোদ্ধা সনদ বাতিল করে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে জনপ্রশাসন ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়কে সুপারিশ করেছে দুদক।
দুদকের সুপারিশ অনুযায়ী এদের মুক্তিযোদ্ধা সনদ ও গেজেট বাতিল করবে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়। আর এদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়ার কর্তৃপক্ষ জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
দুদকের অনুসন্ধানে মুক্তিযোদ্ধা সনদ নেয়ার প্রক্রিয়ায় অনিয়ম ধরা পড়ায় এদের বিরুদ্ধে আ্ইনি ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করা হয়েছে বলে এর আগে দুদক চেয়ারম্যান সাংবাদিকদের জানিয়েছেন।
সরকারি কর্মচারী বিধি অনুযায়ী, এই পাঁচ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে বিভাগীয় মামলা ছাড়াও প্রতারণার মামলা হতে পারে।
সরকারের এই শীর্ষ কর্মকর্তারা কর্মজীবনের শেষ সময়ে এসে চাকরির মেয়াদ এক বছর বাড়াতে মুক্তিযোদ্ধার সনদ নেন বলে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ। মাসুদ সিদ্দিকী মুক্তিযোদ্ধার সনদ নেয়ার সময় ওই মন্ত্রণালয়েরই সচিবের দায়িত্বে ছিলেন।
সরকারি নিয়ম অনুযায়ী, চাকরিতে যোগদানের সময়ই মুক্তিযোদ্ধার সনদ দেখানোর কথা।
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যে ১৮২ জন সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীর মুক্তিযোদ্ধা সনদ বাতিল করে তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দিয়েছে।
(ঢাকাটাইমস/১০সেপ্টেম্বর/এইচআর/এমএম)