logo ০৩ আগস্ট ২০২৫
২০১৫ হবে টেলিকম খাতের কঠিন সময়
ঢাকাটাইমস ডেস্ক
১৮ নভেম্বর, ২০১৪ ০২:২৮:২৫
image


ঢাকা : দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার টেলিকম অপারেটরদের আগামী বছর কঠিন সময় পার করতে হবে বলে জানিয়েছে ফিচ রেটিংস। যদিও সার্বিকভাবে খাতটি স্থিতিশীল থাকবে বলেই পূর্বাভাস দিয়েছে সংস্থাটি।

ফিচ রেটিংস সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, থ্রিজি ও ফোরজি নেটওয়ার্ক বাবদ আগামী বছর এ অঞ্চলের টেলিকম অপারটেরদের বড় অঙ্কের বিনিয়োগ করতে হবে। এতে করে তাদের মূলধনি ব্যয় অনেক বেড়ে যাবে।

এর প্রভাব পড়বে এফসিএফে (ফ্রি ক্যাশ ফ্লো)। এ সময় অপারেটরদের এফসিএফ অনেক কমে যাবে। রাজস্ব আয়ের প্রবৃদ্ধিও এক অঙ্কের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে। সর্বোপরি হ্রাস পাবে মুনাফা।

দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলো বিশেষ করে ফিলিপাইন, শ্রীলংকা ও থাইল্যান্ডের টেলিকম অপারেটরদের ২০১৫ সালে বড় ধরনের বিনিয়োগের প্রয়োজন হবে বলে জানিয়েছে ঋণমান নির্ধারণকারী সংস্থা ফিচ রেটিংস।

সংস্থাটি বলছে, এসব দেশের সেলফোন অপারেটরগুলো তাদের আয়ের ২৫-৩০ শতাংশ বিনিয়োগের পরিকল্পনা করছে। এ অর্থ ব্যয় হবে মূলত নেটওয়ার্ক অবকাঠামো উন্নয়ন অথবা স্পেকট্রাম ক্রয় বাবদ। ক্রমবর্ধমান গ্রাহকের কারণে নতুন করে স্পেকট্রাম বরাদ্দ নেয়ার প্রয়োজন হবে ভারতের প্রথম সারির টেলিকম অপারেটরদেরও।

সিঙ্গাপুরের টেলিকম অপারেটরদের মূলধনি ব্যয় আগামী বছর কিছুটা কমলেও এফসিএফ বাড়বে না বলে মনে করছে ফিচ রেটিংস। সংস্থাটির মতে, দেশটির সেলফোন অপারেটরদের চলতি বছরের মূলধন ব্যয় তাদের মোট আয়ের ১৪ শতাংশ হলেও আগামী বছর তা কমে দাঁড়াবে ১০-১১ শতাংশ।

ফিচ রেটিংস বলছে, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, শ্রীলংকা ও ফিলিপাইনের টেলিকম অপারেটরদের রাজস্ব আয় কিছুটা বাড়বে। মোবাইল ডিভাইস নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলো নিয়মিতই তাদের ডিভাইসের দাম কমিয়ে আনছে। পাশাপাশি টেলিযোগাযোগ প্রতিষ্ঠানগুলো মোবাইল ইন্টারনেট সেবা বৃদ্ধির লক্ষ্যে সেবার পরিধি বাড়াচ্ছে। এ কারণে তাদের আয় বাড়লেও তা এক অঙ্কের ঘরেই সীমিত থাকবে।

এদিকে সিঙ্গাপুরের টেলিযোগাযোগ প্রতিষ্ঠানগুলোর আয় আগামী বছর কিছুটা বাড়বে বলে প্রতিবেদনে জানানো হয়। সিঙ্গাপুরের প্রতিষ্ঠানগুলো নতুন নতুন সেবা বাজারে আনতে বর্তমান সেবাগুলোর সরবরাহ হ্রাস করছে। ফলে তাদের নতুন সেবাগুলো বাজারে দ্রুত প্রসারিত হচ্ছে। তীব্র প্রতিযোগিতার মুখে মালয়েশিয়ার টেলিযোগাযোগ প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রবৃদ্ধি খুব বেশি হবে না।

এ অঞ্চলের টেলিযোগাযোগ প্রতিষ্ঠানগুলো বিপণন খাতেও বিপুল পরিমাণ অর্থ বিনিয়োগ করছে। ফলে ফিলিপাইন, মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়ার মতো দেশের টেলিযোগাযোগ প্রতিষ্ঠানগুলোর মুনাফা হ্রাস পেতে পারে। সাম্প্রতিক সময়ে মোবাইল ডিভাইসে ভয়েজ বা টেক্সটের চেয়ে মোবাইল ইন্টারনেটের ব্যবহার বাড়ছে। ফলে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোকেও সেভাবে নিজেদের সেবা সরবরাহের ধরনের পরিবর্তন আনতে হচ্ছে। এতে করে বিনিয়োগের পরিমাণ যেমন বাড়ছে, অন্যদিকে নতুন খাতে দক্ষতা অর্জনে প্রতিষ্ঠানগুলোর বেশ সময় লাগছে।

বিশ্লেষকদের মতে, সাম্প্রতিক সময়ে অধিক বিনিয়োগের ফলে প্রতিষ্ঠানগুলোর আয় হ্রাস পেলেও অদূর ভবিষ্যতে এ বিনিয়োগ ফল দিতে শুরু করবে। কিন্তু আপাতত প্রতিষ্ঠানগুলোকে এ অবস্থার সঙ্গে টেক্কা দিয়ে বাজারে টিকে থাকতে হবে। এ কথা সত্য, বিনিয়োগের কারণে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থার অনেকাংশেই উন্নয়ন হবে। এতে করে গ্রাহকরা আপাতত লাভবান হলেও প্রতিষ্ঠানগুলোকে লাভের অর্থ তুলতে কিছুটা সময় লাগতে পারে। তবে আগামী বছর প্রতিষ্ঠানগুলোকে বেশ কঠিন সময় পার করতে হবে বলেই জানিয়েছে ফিচ রেটিংস।

(ঢাকাটাইমস/১৮নভেম্বর/এমএটি)