ঢাকা : ‘বর্তমান প্রেক্ষাপটে শেয়ারবাজারের সম্ভাবনা’ শীর্ষক এক গোলটেবিল বৈঠকে পুঁজিবাজারের স্বচ্ছতার স্বার্থে জাতীয় সংসদে দ্রুত ‘ফাইন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং অ্যাক্ট’ পাসের দাবি জানিয়েছেন বক্তারা। একই সঙ্গে নতুন প্রাথমিক গণপ্রস্তাব (আইপিও) আসার ক্ষেত্রে তথ্যসমূহ যথাযথ যাচাই-বাছাইয়ের ওপরও গুরুত্বারোপ করেন তারা। গতকাল জাতীয় প্রেস ক্লাবে অনলাইন নিউজপোর্টাল দ্য রিপোর্ট টুয়েন্টিফোরডটকম এবং অ্যাপোলো ইস্পাত-এর যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত গোলটেবিল আলোচনায় বক্তারা এ আহ্বান জানান।
দ্য রিপোর্ট সম্পাদক তৌহিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে গোলটেবিলে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ড. এবিএম মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন পুঁজিবাজার বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক আবু আহমেদ।
এছাড়া বক্তব্য রাখেন ডিএসই’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক অধ্যাপক ড. স্বপন কুমার বালা, সাবেক সভাপতি মো. শাকিল রিজভী ও আহসানুল ইসলাম টিটু, সিএসই‘র ব্যবস্থাপনা পরিচালক ওয়ালি-উল-মারুফ মতিন এবং বিএমবিএর ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. মনিরুজ্জামান প্রমুখ।
মীর্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশের শেয়ারবাজারের যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে। এ বাজারে যত বিপর্যয় হোক না কেন সম্ভাবনার সুযোগ রয়েছে। এ সম্ভাবনা বাস্তবায়নের জন্য সরকারসহ সব রেগুলেটরদের দক্ষতা ও নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করতে হবে। এগুলো বাস্তবরূপ দিতে পেশাদার ব্যবস্থাপনা, গুড গভর্ন্যান্স, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, ভাল কোম্পানি তালিকাভুক্ত করাতে হবে। একই সঙ্গে নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর মধ্যে সমন্বয় হলে পুঁজিবাজারে সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত হবে।
রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর শেয়ার পুঁজিবাজারে ছাড়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, পুঁজিবাজারে সরকারি প্রতিষ্ঠানের তালিকাভুক্তির ক্ষেত্রে রাজনৈতিক সদিচ্ছার অভাব রয়েছে। মন্ত্রী ও সচিবদের বিরোধিতার কারণে এটা সম্ভব হয় না।
অধ্যাপক আবু আহমেদ অবিলম্বে সংসদে ‘ফাইন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং অ্যাক্ট’ পাসের দাবি জানিয়ে বলেন, এটা না হওয়ার কারণে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর হিসাবে অস্বচ্ছতা থেকে যাচ্ছে। এর ফলে শেয়ার অতিমূল্যায়িত হচ্ছে ও নানা রকম ম্যানিপুলেশন হচ্ছে। এছাড়া পুঁজিবাজারে কোন কোম্পানি তালিকাভুক্তির ক্ষেত্রে বিএসইসি’র উচিত শুধু ইস্যু ম্যানেজারের তৈরি পেপারের ওপর নির্ভরশীল না থেকে সরজমিন কোম্পানিগুলো পরিদর্শন করা, প্রদত্ত তথ্য যাচাই করা এবং কোম্পানির ট্যাক্স ফাইল দেখা।
স্বপন কুমার বালা বলেন, ফিন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং অ্যাক্ট গত ১০ই নভেম্বর মন্ত্রিসভায় চূড়ান্ত অনুমোদন পেয়েছে এবং পরবর্তী সংসদ অধিবেশনে তা পাস হতে পারে।
শাকিল রিজভী বলেন, শেয়ারবাজারের সবকিছু অডিট রিপোর্টের ওপর নির্ভর করে। সুতরাং শেয়ারবাজারের উন্নয়নের জন্য অন্য সঠিক ও মানসম্মত অডিট হওয়া দরকার।
মনিরুজ্জামান বলেন, দেশের শীর্ষস্থানীয় কোম্পানিগুলোর চেয়েও আইপিওতে আসা কোম্পানিগুলোর মুনাফা বেশি হয়ে থাকে। এর মধ্যে অনেক দুর্বল কোম্পানিও থাকে। কিন্তু এটা কিভাবে সম্ভব তা খতিয়ে দেখা দরকার।
দ্য রিপোর্ট সম্পাদক তৌহিদুল ইসলাম বলেন, নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলো যদি তাদের স্ব-স্ব দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করে তাহলে শেয়ারবাজার এগিয়ে যাবে।
(ঢাকাটাইমস/২৫নভেম্বর/এমএটি)