ঢাকা: লেখক ও পাঠকদের মধ্যে সমন্বয় করেন প্রকাশকরা। ফলে প্রকাশকরা তাদের অনুপ্রেরণা হিসাবে কাজ করেন।
রবিবার দুপুরে সপ্তাহিক ‘এই সময়’-এর সভাকক্ষে ‘লেখক ও পাঠক তৈরি করতে প্রকাশকদের ভূমিকা’ র্শীষক গোলটেবিল আলোচনা সভায় এমন মন্তব্য করেন প্রকাশকরা।
‘এই সময়’ এর সহযোগী সম্পাদক স্বকৃত নোমানের সঞ্চালনায় গোলটেবিল আলোচনায় প্রকশকরা বলেন, পাঠক ও লেখক তৈরি করতে প্রকাশকরা অনেক ভূমিকা রাখে। লেখক একটি পাণ্ডুলিপি তৈরি করে প্রকাশকদের হাতে দেয়। পান্ডুলিপিটি প্রকাশের উপযোগী করে পাঠকদের হাতে তুলে দেয় প্রকাশক। আর প্রকাশকরা লেখক ও পাঠকদের অনুপ্রেরণা হিসাবে কাজ করছেন।
গোলিটেবিল আলোচনায় জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশক সমিতির সভাপতি ও আগামী প্রকশনীর প্রকাশক ওসমান গণি বলেন, প্রকশনা শিল্প না থাকলে এদেশের অনেক লেখক তৈরি হতো না। কারণ লেখকদের বই পাঠকদের মাঝে ছড়িয়ে দেওয়া হয় এই শিল্পের মাধ্যমে।
তিনি বলেন, দেশে এখন তরুণ লেখকের অনেক অভাব রয়েছে। যদি এ বিষয়টি আরো দীর্ঘ হয় তাহলে ভবিষতে লেখক সংকট হতে পারে।
পলল প্রকাশনীর প্রধান নির্বাহী খান মাহবুব বলেন, ‘প্রকাশক না থাকলে আজ বরিশালের জীবনানন্দ হয়তো কবি জীবনানন্দ হতো না। প্রকাশক বুদ্ধদেব বরিশালের ট্রাঙ্ক থেকে জীবনানন্দের পান্ডুলিপি এনে প্রকাশ করে পাঠকদের সামনে তুলে ধরেন।’
তিনি বলেন, ‘এখন দেখা যায় লেখক ও প্রকাশকদের মাঝে বিশ্বাসহীনতা কাজ করছে। বই প্রকাশকের আগে লেখক আন্তরিক থাকেন। আর বই প্রকাশ হয়ে গেলে তৈরি হয় দুরত্ব। তাই প্রকাশক এবং লেখকদের সাঝে সমন্বয় সাধন করতে হবে।’
অন্বেষা প্রকাশনের প্রকাশক শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘লেখক তার নিজস্ব চেতনা থেকে লেখেন আর পাঠক সেই লেখা তার নিজস্ব চেতনা থেকেই পড়ে। এ দুয়ের সমন্বয় সাধন করে প্রকাশক।’
তাম্রলিপি প্রকাশনার প্রকাশক এ কে এম তারিকুল ইসলাম রনি বলেন, ‘একজন লেখককে আগে থেকে তৈরি হতে হবে। যেন তার বই পাঠক পড়ে। এজন্য লেখককে আগে থেকেই বিভিন্ন পত্রিকায় লিখতে হবে। তিনি যদি আগে তৈরি হয়ে লেখেন তাহলে তার বই পাঠক গ্রহণ করবে।’
জাগৃতি প্রকাশনী ফয়সল আরেফিন দীপন বলেন, ‘লেখক ও পাঠক তৈরিতে আমাদের সরকার ও গণমাধ্যমের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে হবে। সরকারের উচিত এই শিল্পকে এগিয়ে নিতে কাগজের ভর্তুকি দেওয়া এবং গণমাধ্যমের উচিত হবে শুধু একুশে বই মেলায় সীমাবদ্ধ না থেকে সারা বছরই বইয়ের প্রচার করা।’
উৎস প্রকাশনের প্রকাশক মোস্তফা সেলিম বলেন, ‘প্রত্যেক প্রকাশক কোন না কোনভাবে লেখক এবং পাঠক তৈরি করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। প্রকাশকদের অনেক সীমাবদ্ধতা রয়েছে। তারপরও প্রকাশকরা কাজ করে যাচ্ছে।’
সভায় আরো আলোচনা করেন, অনুপম প্রকাশনীর প্রকাশক মিলনকান্তি নাথ, আহমেদ পাবলিশিং হাউসের প্রকাশক মেসবাহ উদ্দিন আহমেদ, ইত্যাদি গ্রন্থ প্রকাশনার প্রকাশক জহিরুল আবেদীন জুয়েল, নওরোজ কিতাবিস্তানের মঞ্জুর খান চৌধুরী চন্দন, রোদেলা প্রকাশনীর প্রকাশক রিয়াজ খান, শিখা প্রকাশনীর নজরুল ইসলাম বাহার, সন্দেশ প্রকাশনের লুৎফর রহমান চৌধুরী প্রমুখ।
(ঢাকাটাইমস/১১জানুয়ারি/টিএ/ জেডএ.)