logo ০৩ এপ্রিল ২০২৫
আখেরতো সবাই গোছায়: বদিউজ্জামান সোহাগ
১৯ মে, ২০১৫ ০০:১৭:০৪
image


ছাত্রলীগের বর্তমান কমিটির সভাপতি বদিউজ্জামান সোহাগ। গত চার বছর তিনি ছাত্রলীগকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। শাসক দল আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতীম এই সংগঠন নিয়ে তার আমলে অনেক সমালোচনার জন্ম দিয়েছেন। টেন্ডারবাজি থেকে শুরু করে চাঁদাবাজি এবং নিজেদের মধ্যে খুন-খারাবির বিস্তর অভিযোগ ওঠে এই সংগঠনটির বিরুদ্ধে। তবে ব্যক্তিগতভাবে আস্থাভাজন ও সজ্জন ব্যক্তি হিসাবে তার পরিচিতি রয়েছে ছাত্র সমাজে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র সোহাগ জাতীয় সম্মেলনের মাধ্যমে ছাত্রলীগের হাল ধরেন। ২০১১ সাল থেকে তিনি এই পদে রয়েছেন। দুই বছরের জন্য দায়িত্ব নিলেও থেকেছেন চার বছর। এরই মধ্যে সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে। গত চার বছরে ছাত্রলীগের কর্মকা-সহ নানা বিষয় নিয়ে কথা হয় তার সঙ্গে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন তানিম আহমেদ

ঢাকাটাইমস: সভাপতি হিসাবে চার বছর দায়িত্ব পালন করেছেন। নিজেকে কতটুকু সফল মনে করছেন?

বদিউজ্জামান সোহাগ: বর্তমান কমিটির সফলতা অনেক। আমরাই সবচেয়ে বেশি জেলা কমিটি করেছি। এছাড়াও প্রায় চারশত থানার সম্মেলন হয়েছে। জেলা নেতাদের নিয়ে ঢাকায় বর্ধিত সভা করেছি। ছাত্র রাজনীতি নিয়ে কর্মশালা করেছি। সদস্য সংগ্রহ করেছি। গণজাগরণ মঞ্চেও আমরা ভূমিকা পালন করেছি। ৫ জানুয়ারির সাধারণ নির্বাচনে আমরা সবচেয়ে বেশি ভূমিকা পালন করেছি। আর এই ভূমিকা পালন করতে গিয়ে বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাসীদের হাতে আমাদের ১০/১২ জন নেতা শহীদ হয়। এরপরও গত ৫ জানুয়ারি বিএনপি-জামায়াতের কর্মসূচি প্রতিরোধ করেছি। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে তারেক রহমানের কটূক্তির প্রতিবাদে সারাদেশে ছাত্রলীগ প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে। তার বিরুদ্ধে আমরা ৬০টিরও বেশি মামলা করেছি। এ প্রতিবাদ আমরা ছাড়া আর কেউ করেনি। এমনকি বুয়েটে (খালেদা জিয়ার আদালতে হাজিরার দিন) তারা আমাদের উপর আঘাত করলে আমরা পাল্টা আঘাত করেছি। তাই বলতে পারি গত চার বছরে সাংগঠনিকভাবে যেমন কাজ করেছি তেমনি রাজনৈতিক ভাবেও আমরা কাজ করেছি। তবে আমি মনে করি আমরা কতটুকু সফল হয়েছি সেটা নির্ধারণ করবেন নেত্রী।

ঢাকাটাইমস: ছাত্রলীগ নিয়ে অনেক প্রশ্ন আছে। ব্যক্তিগতভাবে আপনার সুনাম রয়েছে ছাত্রসমাজে। এর পরও ভালো-মন্দের দায় আপনার ওপরই বর্তায়। নিজেকে ব্যর্থ মনে করছেন কি না?

বদিউজ্জামান সোহাগ: ব্যর্থতা নেই বলবো না। আমাদের ব্যর্থতাও আছে অনেক। যেমন বিভিন্ন জায়গায় আমাদের নেতাকর্মীরা সংঘর্ষে লিপ্ত হয়েছে। সেটা আমরা শতভাগ নিয়ন্ত্রণ করতে পারি নাই। দুই/একজন আছেন যারা আমাদের সংগঠন বিরোধী কাজ করেছে তাদের বিরুদ্ধেও তেমন ব্যবস্থা নিতে পারি নাই।

ঢাকাটাইমস: ছাত্র-ছাত্রীদের অধিকার রক্ষায় ছাত্র সংগঠন হিসাবে ছাত্রলীগের একটা ভূমিকা তো রয়েছে। সে দিক থেকে আপনারা কি কোনো ভূমিকা রাখতে পেরেছেন বলে মনে করেন?

বদিউজ্জামান সোহাগ: ছাত্র রাজনীতি শুরু হয়েছে ছাত্রদের অধিকার নিয়ে। তারপর মানুষের মৌলিক অধিকার, স্বাধীনতা, সাংবিধানিক, অসাম্প্রদায়িক অধিকার আদায়ে কাজ করতে হচ্ছে। এখন ছাত্রদের দাবি আদায়ে তেমন রাজপথে নামতে হচ্ছে না। যেমন এদেশে ২৬ হাজার প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে সেগুলোকে জাতীয়করণ করতে কোনো আন্দোলন করতে হয়নি। মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রদের বিনামূল্যে বই দেয়া হচ্ছে এজন্য তাদের রাস্তায় নামতে হয়নি। আর এ সময় আমাদের ছাত্রদের মাঝে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ছড়িয়ে দিতে হবে। বিশেষ করে সবাই যে রাজনীতি করবে কিংবা রাজনীতিবিদ হবে তেমন নয়। তাই তাদের মধ্যে নেতৃত্বের গুণাবলী সৃষ্টি করার কাজ করতে হবে। সাংস্কৃতিক চর্চা করতে হবে। এছাড়াও বিভিন্ন আন্দোলনে ছাত্রদের যে ভূমিকা ছিল তাও ছাত্রদের মাঝে ছড়িয়ে দিতে হবে। আমরা মনে করি এদেশের তরুণ প্রজন্মই আগামীর নেতৃত্বে আসবে তাই তাদের গড়ে তুলতে ছাত্র রাজনীতি ভূমিকা রাখবে।

ঢাকাটাইমস: এই যে সব অধিকারের কথা বললেন সেগুলোও কি ছাত্রলীগ যথাযথভাবে পালন করতে পেরেছে বলে মনে করেন?

বদিউজ্জামান সোহাগ: অবশ্যই ছাত্রলীগ এসব ভূমিকা পালন করতে পেরেছে। কারণ গত চার বছরে যে সব ইস্যূ আমাদের সামনে এসেছে সেসব বিষয়ে আমরা দায়িত্ব পালন করেছি। যেমন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়সহ তিনটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন পরিবর্তনের চেষ্টা হয়েছিল। সেখানে সরকারের সাথে বৈঠক করে একটা সমাধান করেছি এবং সরকার আমাদের দাবি মেনে নিয়েছিল।

ঢাকাটাইমস: পুরানো ঐতিহ্য থেকে ছাত্র রাজনীতি ধীরে ধীরে সরে যাচ্ছে। রাজনীতি বাদ দিয়ে নিজেদের আখের গোছাতে ব্যস্ত হচ্ছে এমন অভিযোগ রয়েছে নেতাদের বিরুদ্ধে, কি জবাব দেবেন?

বদিউজ্জামান সোহাগ: আখেরতো সবাই গোছায়। বাংলাদেশে যে যেখানে সুযোগ পেয়েছে সে সেখানে সুযোগ গ্রহণ করেছে। তবে আমি মনে করি যদি ছাত্র সংসদ নির্বাচন নিয়মিত চালু থাকতো, তাহলে ছাত্র নেতাদের নৈতিকতার জায়গাটা আরও উজ্জ্বল হতো। ছাত্র রাজনীতির নৈতিকতা যতটুকু ম্লান হয়েছে এর জন্য এটা অন্যতম দায়ী। ছাত্র সংসদ নির্বাচন এবং নিজ নিজ ছাত্র সংগঠনের নিয়মিত নির্বাচন হলে নিয়মিত ছাত্রদের নেতৃত্বে আসার প্রতিযোগিতা সৃষ্টি হবে। এতে ছাত্র সংগঠনের ঐতিহ্য যতটুকু ম্লান হয়েছে ততটুকু বেশি উজ্জ্বল হবে।

ঢাকাটাইমস: ছাত্র সংসদের নির্বাচন হচ্ছে না দীর্ঘ দিন ধরে, সমস্যাটা ঠিক কোথায় বলে মনে করেন?

বদিউজ্জামান সোহাগ: এটা পরিকল্পিতভাবেই বন্ধ করে রাখা হয়েছে। ৭২ সালের সংবিধান ছাত্র, শিক্ষক ও শ্রমিকসহ বিভিন্ন পেশার মানুষকে যে অধিকার দিয়েছে ৭৫ পরবর্তী সময়ে সামরিক শাসকরা সেগুলোকে মিস ইউজ করছে। তারা বাংলাদেশে ট্রেড ইউনিয়নকে নিষিদ্ধ করেছে। ছাত্র রাজনীতিকে নিষিদ্ধ করার চেষ্টা করেছিল। আর ছাত্র রাজনীতি কুলুষিত করার জন্য ছাত্র সংসদ নির্বাচন বন্ধ করা হয়েছে।

ঢাকাটাইমস: আপনাদের সমর্থিত দল এখন ক্ষমতায় আছে। ছাত্র সংসদ নির্বাচনের জন্য আপনারা কতটুকু চেষ্টা করেছেন, বাধাটা ঠিক কোথায় বলে মনে করছেন?

বদিউজ্জামান সোহাগ: এ নিয়ে আমরা আমাদের বক্তব্য বিভিন্ন সভা সেমিনারে দিয়েছে। আমরা আমাদের অবস্থান পরিষ্কার করেছি। সংসদ নির্বাচন দেয়ার দাবিও তুলেছি।

ঢাকাটাইমস: তারপরও হয়নি কেন?

বদিউজ্জামান সোহাগ: সেটা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের ব্যাপার। বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী ছাত্র সংসদ নির্বাচন দেয়ার এখতিয়ার কেবল মাত্র বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের। ছাত্র সংসদ না থাকার কারণে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অনেক সময় দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়ে। তাই আমি মনে করি ছাত্র সংসদ আগের আদলে না থাকলেও নতুন মাত্রায় তা চালু করা যেতে পারে। যেমন প্রাথমিক এবং মাধ্যমিক স্কুলে হচ্ছে। তাই নতুন মাত্রায় হলেও ছাত্র প্রতিনিধি থাকা উচিত।  

ঢাকাটাইমস: অভ্যন্তরীণ কোন্দল থেকে শুরু করে নানা অভিযোগে ছাত্রলীগের বেশ কয়েকজন নেতাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। পরে আবার তাদেরকে ভালো জায়গায় পদায়ন করা হয়েছে এমনটা কেন, কী বলবেন?

বদিউজ্জামান সোহাগ: এরকম নজির খুবই কম। যারা শৃঙ্খলা ভঙ্গ করে কিংবা সংগঠন বহির্ভূত কাজ করে তাদেরকে মূল নেতৃত্বে না আনার চেষ্টা করা হয় এবং হয়েছেও তাই।

ঢাকাটাইমস: ছাত্রলীগের মধ্যে অভ্যন্তরীণ কোন্দল থেকে শুরু করে নিজেদের মধ্যে সংঘাত-সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ার রেকর্ড রয়েছে। এ ব্যাপারে আপনার বক্তব্য কী?

বদিউজ্জামান সোহাগ: এটা স্থানীয় নেতৃত্বের বিরোধের কারণেই হয়ে থাকে।  যেমন কুমিল্লায় যেটা হয়েছে সেটা তাদের দীর্ঘদিনের স্থানীয় রাজনৈতিক কোন্দেলের কারণেই হয়েছে। আবার অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে দেখা যায় আমাদের প্রতিপক্ষ ছাত্র সংগঠনগুলো সক্রিয় না থাকার কারণে প্রথম বর্ষের কোনো শিক্ষার্থী কোনো সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়লে বলা হয় ছাত্রলীগ নিজেদের মধ্যে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েছে। আবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ৪০ হাজার শিক্ষার্থী রয়েছে। তারা সকলেই ছাত্রলীগ করে না। দেখা যায় তারা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়লে এর দায় ছাত্রলীগের ওপর গিয়ে পড়েছে।

ঢাকাটাইমস: বিরোধী ছাত্র সংগঠনের নেতারা সহাবস্থান না থাকার জন্য ছাত্রলীগকে দায়ী করছে। এ ব্যাপারে আপনা বক্তব্য কী?

বদিউজ্জামান সোহাগ: ওরা দাবি করলে হবে নাকি? এমন কোনো ছাত্র আছে নাকি যে হলে থাকে না কিংবা ক্লাশে আসতে পারে না। অছাত্র নেতাদেরতো বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন প্রশ্রয় দিতে পারে না।

ঢাকাটাইমস: বিভিন্ন সময়ে ছাত্রলীগে অবৈধ অনুপ্রবেশকারী ঢুকে অপকর্ম করছে বলে বলা হয়, আসলে সত্যিটা কী?

বদিউজ্জামান সোহাগ: এখানে বিভিন্ন ফ্যাক্টর কাজ করে। বিশ্ববিদ্যালয়ে অন্যান্য ছাত্র সংগঠনের অনুপস্থিতির কারণে এটা হচ্ছে। যেমন আমরা যখন কলেজের ছাত্র ছিলাম তখন গণমাধ্যমে দেখতাম ঢাবির আইন বিভাগে দুই দল ছাত্রদের সংঘর্ষ। আর আমি গত দশ বছরে দেখি নাই দুই দল ছাত্রদের মধ্যে সংঘর্ষ। অন্যদিকে ঘটনা ঘটলেই বলা হয় ছাত্রলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষ।

ঢাকাটাইমস: বিশ্ববিদ্যালয়ে সহাবস্থান না থাকার কারণ কী হতে পারে বলে মনে করেন?

বদিউজ্জামান সোহাগ: এটা না থাকার অন্যতম কারণ হল বাম ছাত্রসংগঠনগুলোর দেউলিয়াত্ব, ছাত্রদল এবং শিবিরে অছাত্রদের নেতৃত্ব। অছাত্র ছাত্র নেতারাতো ক্যাম্পাসে আসতে পারে না।

ঢাকাটাইমস: ছাত্রলীগের নেতৃত্বের বিরুদ্ধে দুর্নীতির বিস্তর অভিযোগ উঠেছে, কী জবাব দেবেন?

বদিউজ্জামান সোহাগ: আমরা চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলতে পারবো আমাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির কোন অভিযোগ নেই, কেউ প্রমাণ করতে পারবে না। আমাদের আগের কমিটির বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ থাকলেও আমাদের বিরুদ্ধে নাই।

ঢাকাটাইমস: ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে টেন্ডার বাণিজ্যের অভিযোগ রয়েছে, এ নিয়ে নিজেদের মধ্যে রক্তারক্তিও হয়েছে, বিষয়টিকে কীভাবে দেখেন?

বদিউজ্জামান সোহাগ: টেন্ডারতো এখন অনলাইনে দাখিল করতে হয়। আর ছাত্রলীগ কিভাবে টেন্ডার বাণিজ্য করবে? ছাত্রলীগ নেতাদেরতো ২৯ বছর বয়সে শেষ হয়ে যায়। ২৯ বছর বয়সীদেরতো ট্রেড লাইসেন্সও দেয়া হয় না।

ঢাকাটাইমস: ছাত্রলীগের নেতৃত্ব সিন্ডিকেটের হাতে বন্দী-এ অভিযোগ সম্পর্কে কী বলবেন?

বদিউজ্জামান সোহাগ: এটা সম্পূর্ণ ভুয়া সংবাদ। ছাত্রলীগ বাংলাদেশের একমাত্র সংগঠন যার সম্মেলনে সরাসরি ভোটের মাধ্যমে নেতৃত্ব নির্বাচন হয়। এটাতো ছাত্রদল না যে রাতের আধারে কমিটি ভেঙ্গে দিয়ে সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে নতুন কমিটি ঘোষণা করা হবে। আমাদের ছাত্রলীগের বর্তমানে যেসকল প্রার্থী রয়েছে তারা এখন জেলার নেতাদের সাথে সম্পর্ক রাখছে। তাদের সাথে প্রতিদিন কথা বলছে। ১০১টি সাংগঠনিক জেলা ইউনিটের খোঁজখবর রাখছে। অন্য সংগঠনের নেতারাতো জেলার নেতাদের চিনে না। ছাত্রলীগের সর্বোচ্চ জায়গা হল দেশরতœ শেখ হাসিনা। তিনি যেভাবে আমাদের গণতান্ত্রিক শিক্ষা দিচ্ছেন সেখানে সিন্ডিকেটের প্রশ্ন অবান্তর। আর ছাত্রলীগের কোন সিন্ডিকেট থাকে সেটা হলো শেখ হাসিনা সিন্ডিকেট এবং সেটা পজিটিভ। আমরা বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে ধারণ করি।  ছাত্রলীগ শেখ হাসিনা ছাড়া অন্যকোনো নেতার কাছে মাথানত করে না।

ঢাকাটাইমস: ছাত্রলীগের নেতৃত্ব নির্বাচনে সর্বোচ্চ বয়স নিয়ে একটা বিতর্ক রয়েছে। এটা নিয়ে আপনি কী বলবেন?

বদিউজ্জামান সোহাগ:  বয়স নিয়ে কোনো বিতর্ক নেই। যদি বিতর্ক থেকে থাকে সেটা মীমাংসিত। অতীতে যেভাবে নির্ধারিত হয়েছে এবারও সেভাবে নির্ধারিত হবে। সম্মেলনেরর দিন (২৫ জুলাই) পর্যন্ত বয়স গণনা হবে। আমাদের গঠনতন্ত্র এবং সাংগঠনিক রীতিনীতি মেনেই সম্মেলন হবে।

ঢাকাটাইমস: ছাত্রলীগের কমিটিতো দুই বছরের জন্য। কিন্তু আপনারা এটাকে চার বছর টেনে নিয়ে গেছেন। এর ফলে অনেকে বয়সে কারণে নেতৃত্বে আসতে পারছেন না। এটা কেন?

বদিউজ্জামান সোহাগ: এটা আমাদের একটা প্রথা হয়ে গেছে। তার চেয়েও  বড়কথা জাতীয় রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের কারণে আমরা আমাদের কার্যক্রম ঠিকমত করতে পারেনি। তারপর ১৩ সালে আমরা বিএনপি-জামায়াতের নৈরাজ্য প্রতিরোধে ব্যস্ত ছিলাম। গতবছর নির্বাচনের পর আমরা জেলা সম্মেলনে ব্যস্ত ছিলাম।  আবার গত তিন মাসও তাদের সহিংসতা প্রতিরোধে ব্যস্ত ছিলাম। এতে আমাদের সংগঠনেরও ক্ষতি হয়েছে। অতীতেও জাতীয় রাজনীতির কারণে ছাত্রলীগের সম্মেলন দেরি হয়েছে।

ঢাকাটাইমস: বিলম্বে সম্মেলনের কারণে ছাত্রলীগের নেতৃত্বে প্রভাব পড়বে কিনা?

বদিউজ্জামান সোহাগ: ছাত্রলীগ এমন কোনো সংগঠন নয় যে এখানে নেতৃত্বের সংকট হবে। নেতৃত্ব দেওয়ার মতো অনেক নেতাকর্মী ছাত্রলীগে রয়েছে। এটা নিয়ে আমরা আতঙ্কিত নই।

ঢাকাটাইমস: ছাত্রলীগের আগামীর নেতৃত্বের কাছে আপনাদের কি আশা থাকবে? বদিউজ্জামান সোহাগ: আমরা মনে করি নতুন যারা নেতৃত্বে আসবেন তারা আমাদের চেয়েও মেধাবী এবং যোগ্য। দেশ এখন তথ্যপ্রযুক্তির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।  অনেক সময় দেখা যায় গণমাধ্যম আমাদের ভাল সংবাদগুলো প্রচার করে না। তারা নেগেটিভ সংবাদই প্রচার করে। তারপরও সামজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কারণে সেগুলো প্রকাশ হয়। এ নতুন মাত্রার কারণে আগামী দিনের নিয়মিত মেধাবী ছাত্ররা নেতৃত্ব দিতে পারবে।

ঢাকাটাইমস: সময় দেয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।

বদিউজ্জামান সোহাগ: আপনাকেও ধন্যবাদ।

(ঢাকাটাইমস/১৯মে /টিএ/এআর)