সুন্দরী মনির ফাঁদে একশ ব্যবসায়ী
নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
২৭ মে, ২০১৫ ০০:১৬:২২

ঢাকা: দেখতে সুন্দরী, তাই ব্যবসায়ীরা ফাঁদে পড়েন সহজে। প্রলোভন দেখিয়ে বাসায় ডেকে এনে আপত্তিকর ছবি তুলে মুক্তিপণ আদায় করাই ছিল সুন্দরী মনির কাজ। এভাবে তিনি ফাঁদে ফেলেছেন শতাধিক ব্যবসায়ীকে।
তার সঙ্গে রয়েছে আরও ১০ জনের একটি সিন্ডিকেট। নগরীর হালিশহর ও খুলশী এলাকায় দীর্ঘদিন এমন অপকর্মের ফাঁদ পাতেন তিনি। সর্বশেষ গত রবিবার গভীর রাতে এক ব্যক্তিকে ফাঁদে ফেলতে গিয়ে পুলিশের হাতে ধরা পড়েন তিনি। এরপর বেরিয়ে আসে নানা চাঞ্চল্যকর কাহিনী।
পুলিশ জানায়, শান্তিবাগ বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এসময় তার সঙ্গে সিন্ডিকেট চক্রের সদস্য রনি ও লিটন নামের আরও দুই যুবক গ্রেপ্তার হন। ২৩ বছরের মনি আক্তার সব সময় তার বয়স দিয়ে পুরুষদের আকর্ষণ করতে চাইতো। সুযোগ পেলেই বিছানায় নিয়ে যাওয়ার অফার করতো। তবে গত রোববার শাহাদাত নামের এক ব্যক্তিকে কম টাকায় প্লট বিক্রির লোভ দেখিয়ে বাড়িতে নিয়ে আসে কাজল নামের এক ব্যক্তি। সেই কাজলও মণির সঙ্গে সিন্ডিকেটে কাজ করতো। প্রথমে শাহাদাতকে প্রতারক মনির সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেয়া হয়।
মনি কথা বলার ছলে দরজার ছিটকিনি লাগিয়ে শাহাদাতকে কাপড় খুলতে বাধ্য করে। একইসঙ্গে তার সহকর্মীরা মনির সঙ্গে আপত্তিকর ছবি তুলতে থাকে। শাহাদাত এ ঘটনা থেকে বাঁচার আকুতি জানালে তারা দুই লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে।
শাহাদাত বিষয়টি তার পরিবারকে জানালে তারা প্রাথমিকভাবে ২০ হাজার টাকা পাঠায় বিকাশের মাধ্যমে। কিন্তু মনি ও তার চক্রের সদস্যরা তাকে ওই বাড়িতে আটকে রাখে।
এ ঘটনায় স্থানীয় থানায় মামলা করার পর পুলিশ তদন্তে নামে। তারা কৌশলে মণির সঙ্গে যোগাযোগ করে টাকা পরিশোধ করার কথা জানায়।
টাকার লোভে রনি নামের প্রতারক চক্রের আরেক সদস্য বড়পুল এলাকায় তাসফিয়া কমিউনিটি সেন্টারের সামনে এলে পুলিশ তাকে আটক করে। এরপর রনির স্বীকারোক্তি অনুযায়ী মণির বাসা থেকে শাহাদাতকে উদ্ধার করে মনি ও লিটনকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে জিজ্ঞাসাবাদে তারা তিনজন জানায়, এ ঘটনার সঙ্গে এরশাদ ও মামুনসহ আরও বেশ কয়েকজন জড়িত।
খুলশী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সুকান্ত চক্রবর্তী বলেন, মণি পুরুষদের ব্ল্যাকমেইলিং করতে ওস্তাদ। সে তার রূপের মোহে অনেক মানুষকে নিঃস্ব করেছে বলে জেনেছি। সে স্বীকার করেছে টাকার বিনিময়ে ছেলেদের বাসায় ডেকে এনে কাপড়চোপড় খুলে আপত্তিকর ছবি তুলতো।
প্রতারণার শিকার শাহাদাত বলেন, মানসম্মানটা উদ্ধার করতে পেরেছি তাতেই আল্লাহর কাছে শুকরিয়া। তা না হলে ব্ল্যাকমেইলিং করে ওরা আমাকে সারা জীবন ধ্বংস করে দিতো টাকার জন্য। আমি জমি কেনার ফাঁদে পা দিয়ে এ ঘটনার শিকার হয়েছি।
(ঢাকাটাইমস/২৭মে/জেবি)