ঢাকা: জামায়াতের জন্য ক্ষতি হচ্ছে বিএনপির, তাই আর দেরি না করে জোট ভেঙে দিতে হবে- এতদিন এই কথাটি বলেছেন বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ। এবার খোদ বিএনপির নেতারাই বলছেন একই ধরনের কথা। তাহলে কি এক যুগেরও বেশিকাল ধরে একসঙ্গে চলা জোটের অবসান হচ্ছে?
জামায়াত অবশ্য নির্ভার। দলটির নেতারা বলছেন, বিএনপির নানা পর্যায় থেকে তাদের সঙ্গে জোট নিয়ে নেতিবাচক বক্তব্য আসলেও জোটনেত্রী খালেদা জিয়া এখন পর্যন্ত কিছুই বলেননি। বরং নানাসূত্র থেকে তারা জেনেছেন, খালেদা জিয়া এখনও জোট চালিয়ে যাওয়ার পক্ষে। তাই বিএনপির অন্য নেতাদের বক্তব্য আমলে আনছে না একাত্তরে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর পক্ষে অস্ত্র ধরা দলটির নেতারা।
জোট ভেঙে যাচ্ছে এমন খবরকে গুঞ্জন বলছে জামায়াত। বিষয়টি নিয়ে দলটির নেতারা অনেকটাই নির্ভার। শীর্ষ নেতাদের দাবি, এখনো এমন কিছু ঘটেনি যে জোট ভেঙে যাবে।
দীর্ঘদিন আত্মগোপনে থাকলেও রমজানে ইফতার মাহফিলকে কেন্দ্র করে প্রকাশ্যে দেখা যাচ্ছে জামায়াতের বিভিন্ন সারির নেতাদের। ২১জুন রাজধানীর বসুন্ধরা ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারে বিএনপির ইফতারে যোগ দেন জামায়াতের আত্মগোপনে থাকা বেশ কয়েকজন নেতা।
ইফতারে আগত জামায়াতের কয়েকজন নেতার সঙ্গে ২০দলীয় জোট ও সার্বিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে ঢাকাটাইমসের কথা হয়। জোট ভেঙে যাচ্ছে- গণমাধ্যমের এমন খবর সম্পর্কে জামায়াতের অবস্থান জানতে চাইলে দলটির নির্বাহী পরিষদের সদস্য আবদুল হালিম বলেন, ‘জোট ভাঙার বিষয়টি একেবারেই গুজব। এখন পর্যন্ত এমন কিছু ঘটেনি যে, জোট ভেঙে দিতে হবে।’
সম্প্রতি বিএনপির কয়েকজন শীর্ষ নেতার ফোনালাপ ফাঁসের ঘটনায় ঘটেছে। এতে বিএনপিকে জামায়াত ছাড়ারও কথা শোনা গেছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে জামায়াতের এই নেতা বলেন, ‘জোট ভাঙার বিষয়ে আমরা বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ছাড়া অন্য কোনো নেতার কথাকে তেমন গুরুত্বের সঙ্গে নেই না। আর আমাদের নেতারা যেমন কর্মীরাও তেমন। তাই এ নিয়ে কারো মধ্যে কোনো হতাশা নেই। চিন্তিতও নই’।
আবদুল হালিম বলেন, ‘যে যাই বলুন না কেন, আমরা খালেদা জিয়ার দিকে তাকিয়ে আছি। তার ওপর আমাদের আস্থা আছে। আমরাও তার নেতৃত্বের ওপর বিশ্বাস রাখি। অন্য নেতারা কে কি বলছেন তা আমাদের দেখার বিষয় নয়’।
জামায়াতের সার্বিক অবস্থা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এখন সারাদেশে একটি প্রতিকূল পরিবেশ বিরাজ করছে, এটি জামায়াতের জন্যও প্রযোজ্য। তবে এজন্য আমাদের কর্মকাণ্ড বন্ধ নাই। সব ধরনের কার্যক্রম চলছে। নেতারা পরিস্থিতি অনুযায়ি কৌশল ঠিক করেছেন এবং সে অনুযায়ী সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে’।
জামায়াতের ঢাকা মহানগরী সহকারী সেক্রেটারি সেলিম উদ্দিন বলেন, ‘জোট কোন অবস্থায় আছে তা তো আজকের ইফতার মাহফিলেই দেখতে পারছেন।জোট যদি ভাঙতো তাহলে ইফতারে আসার কোনো যুক্তি ছিল না। বিএনপির ইফতারে যেমন সবাই যোগ দিয়েছেন আশা করি জামায়াতের ইফতারেও সবাই আসবেন’।
বিএনপি প্রধানের আমন্ত্রণে ওই ইফতারে জামায়াতের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য মোবারক হোসেন, আবদুর রব, আমিনুল ইসলাম, মশিউল আলম, রেদওয়ানুল্লাহ শাহেদী, মানবতাবিরোধী অপরাধে আমৃত্যু কারাদণ্ডপ্রাপ্ত দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর ছেলে শামীম সাঈদী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
আগামী ২৫জুন রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে ইফতারের আয়োজন করেছে জামায়াত। সেখানে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াসহ শীর্ষ নেতাদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন জামায়াতের নেতারা।
(ঢাকাটাইমস/২৪জুন/বিইউ/ডব্লিউবি)