logo ২৫ এপ্রিল ২০২৫
মায়ের প্রভাব, এমপিপুত্রের বিচার নিয়ে শঙ্কা!

হাবিবুল্লাহ ফাহাদ
২৪ জুন, ২০১৫ ১২:৫৯:৪০
image


প্রথমে শোনা গিয়েছিল দুর্ঘটনায় মৃত্যু। কিন্তু ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে দেখা যায় মৃত্যুর কারণ গুলি। আর যে এলাকায় ঘটনাটি ঘটেছে সেখানকার একটি ভবনের সিসি ক্যামেরার ছবি পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, প্রাডো গাড়ি থেকে গুলি ছুড়ছে একজন। সিসি ক্যামেরার ছবি পর্যবেক্ষণ করে পুলিশ দেখতে পায় গুলিটি ছুড়েছেন বখতিয়ার আলম রনি নামের যুবক। আর দুই খুনের মামলায় গ্রেপ্তার করা হয় রনিকে। রিমান্ডে নিয়ে করা হয় জিজ্ঞাসাবাদ। তবে ব্যক্তি রনির পরিচয় ছাপিয়ে যায় তার মায়ের পরিচয়।

সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য ও মহিলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক পিনু খানের ছেলে এই রনি। আর অতীতের নানা তিক্ত অভিজ্ঞতায় এই আসামির রাজনৈতিক পরিচয়ের কারণেই বিচার পাওয়া নিয়ে সন্দিহান ভুক্তভোগী পরিবার। পুলিশ বলছে, রিকশাচালক হাকিম আর অটোরিকশাচালক ইয়াকুব গুলিতে মারা গেছেন ১৩ এপ্রিল গভীর রাতে। হাকিমের মা মনোয়ারা বেগম ১৫ এপ্রিল রমনা থানায় মামলা করেন। আর মামলার আসামি গ্রেপ্তার হয় ৩১ মে।

ক্ষমতাধর পরিবারের আসামিকে নিজ থেকেই গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তবু সমালোচনার ঊর্ধ্বে উঠতে পারছে না বাহিনীটি। কারণ আদালতে পুলিশের পক্ষ থেকে যে প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে তাতে রনির গুলিতেই তারা মারা গেছেন এই কথাটি লেখা হয়নি, যদিও গণমাধ্যমকে তদন্ত কর্মকর্তা এই কথাটি বলেছেন।

রনির দুই বন্ধু এবং গাড়িচালক অবশ্য আদালতে জবানবন্দি দিয়ে জানিয়েছেন, মাতাল রনি যানজট দেখে বিরক্ত হয়ে গাড়ি থেকে বের হয়ে গুলি করেন। নিহত ইয়াকুব ও হাকিমের পরিবারের কেউ-ই এখন ক্ষতিপূরণ চান না। কোনো ধরনের সাহায্য-সহযোগিতার জন্যও মুখিয়ে নেই তারা। তবে তাদের দাবি একটাই বিচার, খুনির শাস্তি। ইয়াকুব দৈনিক জনকণ্ঠের অটোরিকশাচালক ছিলেন। তার পরিবার এখন আছে নন্দীপাড়ায়। ইয়াকুবের স্ত্রী সালমা বেগম সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘আমার স্বামীকে যে হত্যা করেছে তার যেন ফাঁসি হয়। আমরা কারও কাছে কোনো সহায়তা চাই না। খুনির উপযুক্ত শাস্তি হবে এটাই দেখতে চাই।’ সালমা জানান, ‘ইয়াকুব ছিলেন সংসারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। তার মৃত্যুর পর তিনি নন্দীপাড়ায় ভগ্নিপতি জয়নাল আবেদীনের বাড়িতে আছেন।

নিহত আরেকজন রিকশাচালক হাকিম পরিবার নিয়ে থাকতেন মগবাজারের মধুবাগেই। তার মা মনোয়ারা বেগম ও বাবা দুদু মিয়াও ছেলে হত্যার বিচার চাইলেন। দুদু মিয়া চোখের পানি ছেড়ে দিয়ে বলেন, ‘আমাদের চাওয়া বলতে এখন একটাই, খুনির উপযুক্ত শাস্তি চাই। যেভাবে আমার ছেলেকে কষ্ট দিয়ে মেরেছে সেইভাবে খুনিকেও হত্যা করা হোক।’

জোড়া খুনের ঘটনায় করা মামলার তদন্তভার ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের ওপর। পুলিশের এসআই দীপক কুমার দাস তদন্ত কর্মকর্তা। একাধিক মামলার তদন্তের সঙ্গে জড়িত আছেন এমন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, স্বাভাবিকভাবে যেকোনো খুনের ঘটনায় আসামিদের একাধিকবার রিমান্ড নেওয়ার রেওয়াজ পুলিশে আছে। এটা যে লিখিত নিয়ম তা নয়, তবে অলিখিত হলেও এমনটাই সচরাচর দেখা যায়। কিন্তু রনির ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম। তাকে রিমান্ডে নেওয়া হলেও আদালতে তুলে জবাববন্দি নেওয়া হয়নি। বরং রনির দেখানো অসুস্থতার ভানকেই সত্য বলে মেনে নিয়েছে পুলিশ। আদালতে নিলেও তাই তোলা হয়নি কাঠগড়ায়। পুলিশের এমন কাজে রনিকে ‘বাড়তি যতœ নেওয়ার’ অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে।

তবে কি সংসদ সদস্যের ছেলে বলেই বাড়তি সুবিধা পাচ্ছেন রনি? জবাবে পুলিশ কর্মকর্তা দীপক কুমার দাস বললেন, ‘প্রশ্নই আসে না। রনিকে কোনো ধরনের ছাড় দেওয়া হয়নি। মামলা প্রমাণের জন্য যথেষ্ট তথ্যপ্রমাণ পুলিশের হাতে আছে। আদালতে তিনি জবানবন্দি না দিলেও তাতে মামলার ক্ষতি হবে না।’

আইনজীবীরা বলছেন, আইন সবার জন্যই সমান। তাই এমপিপুত্র বলে রনিকে ছাড় দেওয়া মোটেও ঠিক হবে না। বরং তার বিচার দ্রুত করে আইন নিরপেক্ষ ও তার গতিতে চলে তার প্রমাণ দেওয়ার সুযোগ এসেছে। সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী দিলরুবা সরমিন বলেন, ‘আইনের চোখে সবাই সমান। আসামির অপরাধ প্রমাণের পর তাকে রেহাই দেওয়ার সুযোগ নেই। তবে আসামির অপরাধ প্রমাণে কোনো ধরনের হেরফের হলে ন্যায়বিচার পাওয়া কঠিন হবে।’

মায়ের পরিচয়ে দম্ভোক্তি রনির

দুজন মানুষ খুনের পরও তার কিছু হবে না বলে পরিচিতজনদের বলেছেন রনি। আইনের ফাঁক গলিয়ে কীভাবে বেরিয়ে আসা যায়Ñ সেই কৌশলও যে তার জানা আছে তারও ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি।

এক তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, গত ৯ জুন পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে রনি তাদেরকে বলেন, ‘আমার মায়ের হাত অনেক লম্বা। এখানে যাই বলি না কেন, আদালতে গিয়ে কী বলব সেটা আমার জানা আছে।’ জবাবে ওই কর্মকর্তারা তাকে বলেন, ‘এখানে সবাই সমান। কে এমপি বা কে মন্ত্রীর ছেলে সেটা বড় কথা নয়। আপনি গুলি করেছেন তা স্বীকার করেন।’

জবাবে রনি গোয়েন্দাদের বলেন, ‘আমি আপনাদের কাছে স্বীকার করলাম। আদালতে গিয়ে স্বীকার নাও করতে পারি।’ তখন এক গোয়েন্দা তাকে বলেন, ‘আপনার গাড়িচালক ইমরান আমাদের সব তথ্যই দিয়েছেন। আপনার গুলিতে দুজন অসহায় মানুষ মারা গেছেন। আমরা তাদের হত্যার বিচার নিশ্চিত করব।’

গোয়েন্দা পুলিশের ওই কর্মকর্তা বলেন, জিজ্ঞাসাবাদের এই পর্যায়ে রনি তাদেরকে বলেন, তার গাড়িচালক কী বলেছে তা তিনি জানেন না। এরপর গোয়েন্দা কর্মকর্তারা তাকে আদালতে ইমরানের দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক বক্তব্যের রেকর্ড শোনান। এ সময় রনি বলেন, তিনি গুলি করেছেন, তবে কাউকে খুনের উদ্দেশে নয়।

গোয়েন্দা পুলিশ সূত্র জানায়, ১৩ এপ্রিল রাতে রাজধানীর নিউ ইস্কাটন রোডে রাতে নিজের প্রাডো গাড়ি থেকে নেশাগ্রস্ত অবস্থায় গুলি ছুড়তে শুরু করেন রনি। প্রথমে গুলি রিকশাচালক হাকিমের গায়ে লাগে। তার চিৎকারে এগিয়ে আসেন অটোরিকশাচালক ইয়াকুব। মাতাল অবস্থায় তাকেও গুলি করেন রনি। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৫ এপ্রিল হাকিম এবং ২৩ এপ্রিল ইয়াকুব ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান।

জোড়া খুনে জড়িত হিসেবে শনাক্ত করে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ ৩১ মে বখতিয়ার আলম রনি ও তার গাড়িচালক ইমরান ফকিরকে গ্রেপ্তার করে।

চলছে ওপর মহলে দৌড়ঝাঁপ

গত ১৫ জানুয়ারি ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে দেখা করতে যান রনির মা পিনু খান। ছেলের সঙ্গে দেখা করে বেশ সময় নিয়ে কথাও বলেন তিনি। এ সময় ছেলে রনি মাকে বলেন, ‘সেদিনের ঘটনা তার কিছুই মনে নেই।’ ছেলের এমন জবাব শুনে পিনু খান ক্ষুব্ধ হয়ে ছেলেকে ধমকও দেন। এক পর্যায়ে তিনি ছেলেকে বলেন, ‘আমি ভাবতেই পারিনি তুমি এতটা খারাপ হয়ে গেছ। অনেকবার তোমাকে বলেছি, ভালোভাবে চলাফেরা কর। কিন্তু তুমি শোননি। আজ তোমার জন্য আমার ভবিষ্যৎও শেষ হতে চলেছে। মানসম্মান, রাজনৈতিক ক্যারিয়ার সবকিছুই ধুলায় মিশে গেছে।’ মায়ের এমন ক্ষোভের কথা শোনার পর ছেলে রনি তাকে বাঁচানোর জন্য বারবার মাকে অনুরোধ করেন। একবার বলে ওঠেন, মা যেভাবে হোক আমাকে বাঁচাও।

সূত্র জানায়, ছেলের সঙ্গে দেখা করে আসার পর থেকে বিরাম নেই মা পিনু খানের। এধার-ওধার এক করে ফেলছেন দৌড়ঝাঁপ করে। সরকারি দলের এমপি ও দলের নেত্রী হওয়ায় বারবারই ধরনা দিচ্ছিলেন আওয়ামী লীগের উচ্চ মহলে। ছেলেকে বাঁচাতে এমন কোনো উপায় নেই তিনি অবলম্বন করছেন না। তবে এর সবই চলছে সন্তর্পণে। মুখে বলছেন আইনজীবীর বাইরে তার কোনো দৌড়ঝাঁপ নেই।

আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর একজন সদস্য জানান, দলের উচ্চ পর্যায়ের নির্দেশ আছে অন্যায়কে কোনোভাবেই প্রশ্রয় দেওয়া যাবে না এটা যেই হোক না কেন। আওয়ামী লীগ করে বলেই সব অপরাধ মাফ হয়ে যাবে এটার কোনো ভিত্তি নেই। পিনু খান যতই দৌড়ঝাঁপ করুন না কেন এতে কোনো কাজেই আসবে না। দল এ ব্যাপারে বেআইনিভাবে তার পক্ষ নেবে না। বরং আইনকে তার গতিতে চলার ব্যাপারে বাধা সৃষ্টি করা সরকারি দলীয় সংসদ সদস্য হিসেবে পিনু খানেরও উচিত হবে না।

কৌশলে চলছে জামিন পাওয়ার তোড়জোড়

শুরু থেকেই মিথ্যা তথ্য দিয়ে বখতিয়ার আলম রনিকে হাজত থেকে মুক্ত করতে চেষ্টা চলছে। রনিকে অসুস্থ সাজিয়ে চেষ্টা চলছে জামিন পাওয়ার। তবে গত ১৬ জুন ঢাকা মহানগর হাকিম আমিনুল হক শুনানি শেষে বখতিয়ারের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন।

বখতিয়ার আলমের আইনজীবী শওকত ওসমান আদালতকে বলেন, এজাহারে আসামির নাম নেই। তাকে অহেতুক হয়রানির জন্য গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ঘটনার দিন বখতিয়ার আলম তার সন্তান ও মাকে নিয়ে হাসপাতালে ছিলেন। ওই দিন তিনি রাস্তায় বের হননি। এ ছাড়া যে হত্যার ঘটনা ঘটেছে, তা পরিকল্পিত ছিল না। আসামি গুরুতর অসুস্থ, তার মা একজন সাংসদ; তাই জামিন দিলে তার পালিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা নেই। উন্নত চিকিৎসার স্বার্থে বখতিয়ার আলমের পক্ষে তিনি অন্তর্বর্তীকালীন জামিন চান।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী এর বিরোধিতা করে আদালতকে বলেন, এই মামলার আসামি ইমরান ফকির স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়ে বখতিয়ারের নাম বলেছেন। জব্দ হওয়া প্রাডো গাড়ি থেকে বখতিয়ার গুলি ছোঁড়েন। সেই গুলিতে রিকশাচালক আবদুল হাকিম ও জনকণ্ঠের অটোরিকশাচালক ইয়াকুব আলী মারা যান। এ ঘটনায় তার ব্যবহৃত পিস্তল ও গুলি জব্দ করা হয়েছে। তাই জামিন দিলে তদন্তে বিঘœ সৃষ্টি হবে। এরপর শুনানি শেষে আদালত বখতিয়ার আলমের জামিন আবেদন নাকচ করে দেন।

বাতিল হচ্ছে অস্ত্রের লাইসেন্স

সাংসদপুত্র বখতিয়ার আলম রনির পিস্তলের লাইসেন্স বাতিল করার আবেদন করবে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। এই পিস্তলের গুলিতে অটোরিকশাচালক ও রিকশাচালক নিহত হওয়ার পর ৪ জুন পুলিশ পিস্তলটি জব্দ করে। পরীক্ষার জন্য এটি সিআইডিতে পাঠানো হয়েছে। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবির উপপরিদর্শক (এসআই) দীপক কুমার দাস গত ১৬ জুন বলেন, পিস্তলের ব্যালিস্টিক প্রতিবেদন ও জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে ঠিকানা যাচাই প্রতিবেদন পাওয়ার পর লাইসেন্স বাতিলের আবেদন করা হবে।

তদন্তসংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বখতিয়ারের লাইসেন্স করা কালো-সিলভার রঙের বিদেশি পিস্তলের গুলিতে জোড়া খুন হয়েছে কি না তা নিশ্চিত হতে পিস্তলটি পরীক্ষার জন্য সিআইডিতে পাঠানো হয়। এ ছাড়া অস্ত্রের লাইসেন্সের ঠিকানা জানতে ঢাকা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে।

গণমাধ্যমে নাম আসায় অসন্তুষ্ট পিনু খান!

ছেলের বিরুদ্ধে জোড়া খুনের অভিযোগ, মুখে বলছেন অপরাধ করলে বিচার হবে ছেলের। কিন্তু ক্ষোভ ঝেড়েছেন সাংবাদিকদের ওপর। গত ১৪ জুন সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েছিলেন মহিলা আওয়ামী লীগের এই নেত্রী । বললেন, ‘আমাকে নিয়ে কেন সংবাদ হচ্ছে? আমি তো সবাইকে বলেছি, আমি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল এবং আমি ন্যায়বিচার চাইছি।’

পিনু খান বলেন, ‘আমার ৪০ দিন বয়সী নাতনি ৩ এপ্রিল থেকে অ্যাপোলো হাসপাতালে প্রথমে আইসিইউ ও পরবর্তীতে লাইভ সাপোর্টে ছিল। ১৫ এপ্রিল যেদিন মেয়েটি অ্যাপোলো হাসপাতালে মারা গেল, সেদিনই রনির বিরুদ্ধে মামলা হলো। রনির নিজস্ব অস্ত্রের লাইসেন্স ছিল। ঘটনার দিন সে মাতাল ছিল বলে গণমাধ্যমে সংবাদ এসেছে।’ অস্ত্রের লাইসেন্স থাকার কথা স্বীকার করলেও ছেলে সেদিন মাতাল ছিলেন কি না সে প্রশ্নের উত্তর দিতে রাজি হননি এই নারী সংসদ সদস্য। তিনি বলেন, ‘মামলার বাদী এজাহারে লিখল, সাদা মাইক্রোবাস থেকে এলোপাতাড়ি গুলি ছোড়া হয়েছে। তাহলে পুলিশ কিসের ভিত্তিতে কালো প্রাডো গাড়ি থেকে গুলি ছোড়ার কথা বলছে? এই প্রশ্ন তো কেউ করছে না।’

নিহত রিকশাচালক আবদুল হাকিমের মা মনোয়ারা বেগম ঘটনার দুদিন পর থানায় যে মামলা করেন তাতে বলা হয়, একটি সাদা মাইক্রোবাস থেকে এলোপাতাড়ি গুলি ছোড়া হলে তার ছেলে ও অটোরিকশাচালক ইয়াকুব আলী মারা যান। পরে তদন্তে পুলিশ জানতে পারে, সাদা মাইক্রোবাস নয়, সেটি ছিল কালো রঙের একটি প্রাডো গাড়ি এবং ওই গাড়িতে পিনু খানের ছেলে রনিসহ কয়েকজন ছিলেন।

গোয়েন্দা কর্মকর্তা মনিরুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, ‘যারা প্রথমে এই হত্যার ঘটনায় মামলা করেছিল, তারা ঘটনাস্থলের পাশের লোকজনের মুখে শুনে সাদা মাইক্রোবাসের কথা লিখেছিলেন। পরে পুলিশ বিভিন্ন কৌশল প্রয়োগ করে কালো প্রাডো গাড়িটির বিষয়ে জানতে পারে।’ পিনু খান বলেন, ‘বিভিন্ন গণমাধ্যমে লেখা হয়েছে, আমি মামলাটিকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করছি। এই জাতীয় অভিযোগ একেবারেই সত্য নয়।’

ছাত্রলীগ থেকে ১৯৮৬ সালে মহিলা আওয়ামী লীগে যুক্ত হন পিনু খান। ২০০৩ সালে কেন্দ্রীয় মহিলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক এবং ২০০৯ সালে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হন। নবম সংসদের পর দশম সংসদেও সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য তিনি।-সাপ্তাহিক এই সময়-এর সৌজন্যে।