logo ২৫ এপ্রিল ২০২৫
বেফাঁস মন্তব্যকারীদের ওপর ক্ষোভ ঝাড়লেন খালেদা
নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
০৯ জুলাই, ২০১৫ ০০:০৬:৩৩
image

ঢাকা: দলীয় ফোরামের বাইরে দলের সমালোচনায় মুখর থাকা বিএনপি নেতাদের ওপর চটেছেন দলটির প্রধান বেগম খালেদা জিয়া। একইসঙ্গে দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে বিভ্রান্তি ও বিভেদসৃষ্টি করে এমন বক্তব্য যারা দিয়েছেন তাদের বিরুদ্ধেও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।


প্রকাশ্যে দলের সমালোচনাকারীদের উদ্দেশে তিনি বলেছেন, বিএনপিতে জিয়ার আদর্শ না থাকলে কি হাসিনার আদর্শে চলে? যাদের দলে থাকতে ইচ্ছা না হলে চলে যান। আপনাদের চেয়ে তৃণমূলের প্রতি আমার আস্থা বেশি আছে।”


টানা কর্মসূচি, নিজ কার্যালয়ে অবরুদ্ধ থাকার পর গত সোমবার দলের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে প্রথম আনুষ্ঠানিক বৈঠকে এমন করেই কথা বলেন খালেদা জিয়া। রাত নয়টায় শুরু দুই ঘণ্টা ধরে চলা এই বৈঠকের মধ্যে বেশির ভাগ সময়জুড়ে কথা বলেন বিএনপি প্রধান। নেতাদেরও অনেকে কথা বলেন। জানা যায়, খালেদা জিয়ার বক্তব্যের মধ্যে আইনজীবীদের দুই একজন কথা বলতে চাইলে তিনি তাদের থামিয়ে দেন।


বৈঠক সূত্রে আরো জানা যায়, বেশিরভাগ শীর্ষ নেতা আন্দোলনের মাঠে না থাকায় খালেদা জিয়া ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তবে সম্প্রতি বিএনপির কয়েকজন শীর্ষ নেতার ফোনালাপে দলের ভেতরের বিষয় নিয়ে খোলামেলা কথা বলায় সবচেয়ে বেশি ক্ষুব্ধ হন তিনি। 


তবে ক্ষোভ প্রকাশ করে বক্তব্য দিলেও বৈঠকের শেষের দিকে খালেদা জিয়া হাসিমুখে সবার সঙ্গে কথা বলেন। সুষ্ঠুভাবে ওমরা পালন করতে পারেন এজন্য সবার কাছে দোয়া চান।


সোমবারের ওই বৈঠক সূত্রে জানা যায়, খালেদা জিয়া কারো নাম না উচ্চারণ না করে বলেন, বিএনপি শহীদ জিয়ার আদর্শে নেই, তাহলে কার আদর্শে চলে? তাহলে কি হাসিনার আদর্শে চলে?  বিএনপি জিয়ার আদর্শেই চলছে। এটা নিয়ে ভুল বোঝাবুঝির কোনো সুযোগ নেই। দলে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করবেন না।


ছাত্রদল নেতার সঙ্গে ফোনালাপে ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের দল সম্পর্কে যে বক্তব্য ছিল সেই দিকে ইঙ্গিত করে কথা বলেন খালেদা জিয়া।


তিনি বলেন, জিয়ার আদর্শ নিয়ে আজ বড় বড় কথা বলছেন, তারা কোন আদর্শে আছেন? দলে থেকে বিএনপির বিরুদ্ধে কথা বলছেন, তাদের দলে থাকতে বলেছে কে? ভালো না লাগলে আপনারা চলে যান? বিএনপি ছেড়ে হাসিনার (প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা) মন্ত্রী-এমপি হয়ে যান। তাদের তো কোনো বাধা দেওয়া হচ্ছে না।


বিএনপিতে থেকে দলের বিরুদ্ধে কথা বলবেন, তা সহ্য করা হবে না। আমি নেতা-কর্মীদের নির্দেশ দিয়েছি, যারা এমন করবে-তাদের যেখানে পাবে, সেখানেই প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।”


সাবেক প্রধানমন্ত্রী বলেন, আপনারা যারা বলেছেন, এই বিএনপিকে দিয়ে কিছু হবে না। তাহলে বলেন, কোন বিএনপিকে দিয়ে হবে? কেন আন্দোলন সফল হয়নি? তখন আপনারা কোথায় ছিলেন? কে কোথায় ছিলেন, আমি সব জানি। আন্দোলন জোরদারে আপনাদের ভূমিকা কী ছিল এবং দলের প্রতি আপনাদের অবদানই বা কী? সব জানা আছে আমার।


ক্ষুব্ধ খালেদা জিয়ার একের পর এক প্রশ্নের মুখে বৈঠকে উপস্থিত সব নেতাই নিশ্চুপ ছিলেন বলে জানা যায়।


পরে অবশ্য সবাইকে নিজ নিজ ভুমিকা মূল্যায়ন করে ঈদের পরে দল গোছানো হবে বলে জানান।


সোমবারের বৈঠকে উপস্থিত বেশ কয়েকজন নেতার সঙ্গে এ নিয়ে কথা বলতে চাইলে তারা সবাই বিষয়টি এড়িয়ে যান।


তবে বিএনপি চেয়ারপারসনের একজন উপদেষ্টা নাম প্রকাশ না করার শর্তে ঢাকাটাইমসকে বলেন, “অনেক দিন পরে বৈঠক হওয়ায় অনেক বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। চেয়ারপারসন অনেকের প্রতি ক্ষোভও প্রকাশ করেছেন। পরে আবার তিনিই (খালেদা জিয়া) পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে আনেন।


(ঢাকাটাইমস/৯জুলাই/বিইউ/জেবি/এআর)