logo ২৫ এপ্রিল ২০২৫
খালেদাকে নিয়ে ইনুর বক্তব্যে মিল খুঁজে পাচ্ছে বিএনপি!
নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
৩০ জুন, ২০১৫ ০০:১০:৫০
image

ঢাকা: দুর্নীতির মামলায় খালেদা জিয়াকে সাজা দিয়ে নির্বাচন থেকে দূরে রাখার আশঙ্কা বিএনপির দীর্ঘদিনের। দলের শীর্ষ নেতারা এমন আশঙ্কা প্রকাশ করে অনেক বক্তব্য দিয়েছেন। শুধু খালেদা নয়, এমন পরিস্থিতির মুখে তাদের অনেক শীর্ষ নেতা পড়তে পারেন এমন আতঙ্কও আছে দলটিতে।


তবে সম্প্রতি তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনুর সংসদে দেয়া এমনই এক বক্তব্য নিয়ে দলের মধ্যে নানা আলোচনা শুরু হয়েছে। মুখে বিএনপি নেতারা বিষয়টিকে খুব বেশি ‘পাত্তা’ দিচ্ছেন না বললেও ভেতরে ভেতরে তারা  তাদের আশঙ্কার সঙ্গে মন্ত্রীর সর্বশেষ বক্তব্যের মিল খুঁজে পাচ্ছেন বলে জানা গেছে।


গত শনিবার সংসদে বাজেট বক্তৃতায় তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেন, “২০১৯ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে গণতান্ত্রিক শক্তির সঙ্গে গণতান্ত্রিক শক্তির নির্বাচন। সেই নির্বাচনে গণতন্ত্রের অচল মাল সচল করার সুযোগ নেই। খালেদা জিয়ারও অংশগ্রহণের সুযোগ নেই।”


তার এই বক্তব্যের পর রবিবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করে বিএনপি। বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বললেও তথ্যমন্ত্রী বক্তব্যের বিষয়টি জোর দিয়ে বলেন দলটির মুখপাত্র ড. আসাদুজ্জামান রিপন।


তিনি অভিযোগ করেন, “বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াসহ দলের শীর্ষ নেতাদের নির্বাচনে অযোগ্য করতে সরকার নীলনকশা করছে। এসময় তিনি এমনটা করলে সরকারের জন্য তা শুভ হবে না বলেও হুঁশিয়ারি দেন।


হুঁশিয়ারিতেই শেষ নয়, সংবাদ সম্মেলনে হাসানুল হক ইনুর কড়া সমালোচনাও করেন রিপন। তিনি বলেন, “হাসানুল হক ইনু প্রকৌশলী ছিলেন জানতাম, তবে তিনি যে জ্যোতিষী তা জানা ছিল না। এই ধরনের মাতলামি কথার নিন্দা জানাই। এগুলো অসুস্থ লোকের প্রলাপ।”


এসময় তিনি দুর্নীতির বিচার চলছে ওই আদালতের প্রতিও ইঙ্গিত করেন। দাবি করা হয়, “খালেদা জিয়াসহ দলের নেতাদের বিরুদ্ধে কাল্পনিক মামলা দিয়ে নির্বাচনের অযোগ্য করার নীলনকশা চলছে। আদালতে প্রতি আমাদের আস্থা নেই। এটা ক্যাঙ্গারু কোর্ট। এই কোর্ট এমন কোনো রায় দিলে তা বিচার হবে না। এটা হবে অবিচার। জনগণ এটা মেনে নেবে না।”


যদিও পরে বিষয়টি নিয়ে সোমবার রিপনের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে তিনি কোনো কথা বলবেন না বলে জানান।


তথ্যমন্ত্রীর এমন বক্তব্যকে বিএনপি কিভাবে দেখছে এমনটা জানতে চাইলে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য লে. জেনারেল (অব.) মাহবুবুর রহমান ঢাকাটাইমসকে বলেন, “আমরা জানি সরকার এমন ষড়যন্ত্র করছে দীর্ঘদিন ধরে। নতুন করে এমন কথা বলার অর্থ হলো বিএনপি তথা বেগম খালেদা জিয়াকে মানসিক চাপে রাখা।”


মধ্যবর্তী নির্বাচনের ব্যাপারে বিএনপির ভাবনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, “তথ্যমন্ত্রী ২০১৯ সালের নির্বাচনের কথা বললেও মানুষ তো মনে করে সংলাপের মাধ্যমে একটি মধ্যবর্তী নির্বাচন প্রয়োজন। আমাদের প্রত্যাশা থাকবে সরকার বিষয়টিকে আমলে নেবে।”


আর দলটির ভাইস চেয়ারম্যান সেলিমা রহমান ঢাকাটাইমসকে বলেন, “সরকার অনেক দিন ধরে বেগম খালেদা জিয়াকে রাজনীতি থেকে দূরে সরিয়ে রাখার ষড়যন্ত্র করছে। এজন্য তারা আদালতকে ব্যবহার করছে। তথ্যমন্ত্রী হয়তো এই দিকে ইঙ্গিত করে এসব কথা বলছেন। কিন্তু ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে জিয়া পরিবারকে ধ্বংস করা যাবে না। উল্টো যারা চেষ্টা করছেন তারা ধ্বংস হবে।”


প্রসঙ্গত, খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে করা জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল দুর্নীতির অভিযোগের মামলা বিচারাধীন আছে।


দলের যুগ্ম মহাসচিব মোহম্মদ শাহজাহান ঢাকাটাইমসকে বলেন, "আমরা তো আশা করি আইন তার নিজস্ব গতিতে চললে 'ম্যাডামের' সাজা হবে না। আর সাজা হলে কী হবে সে বিষয়ে এই মুহূর্তে ধারণাভিত্তিক কিছু বলা ঠিক হবে না।”


(ঢাকাটাইমস/২৯জুন/বিইউ/জেবি/ এআর/ ঘ.)