logo ২৫ এপ্রিল ২০২৫
পিএসসির সদস্য হতে পারেন শফিক আলম মেহেদী
নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
২৬ নভেম্বর, ২০১৫ ২০:৩৪:৪০
image


ঢাকা: নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব শফিক আলম মেহেদীকে বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) সদস্য করা হতে পারে। আগামী ৩০ নভেম্বর তার অবসরোত্তর ছুটিতে যাওয়ার কথা। সরকারের নীতি নির্ধারণী একটি সূত্র ঢাকাটাইমসকে জানায়, তার ছুটি বাতিল করে পিএসসির সদস্য হিসেবে নিয়োগ দেয়ার চিন্তা চলছে।

পিএসসির সাবেক সচিব মো. শাহজাহান আলী মোল্লাসহ কয়েকজন সদস্য অবসরে যাওয়ায় কিছু পদ শূন্য রয়েছে। শূন্য পদ যতদ্রুত সম্ভব পূরণের চেষ্টা চলছে বলে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে। 

ব্যক্তিগত প্রোফাইলে দেয়া তথ্যমতে, বর্তমান সরকারের সময়ে শফিক আলম মেহেদী গত বছরের ১০ নভেম্বর নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব হিসেবে যোগ দেন। মাঝে অবশ্য তার বেশ খারাপ সময়ও কেটেছে। এর আগে তিনি সচিব পদ মর্যাদায় বিসিএস (প্রশাসন) একাডেমির রেক্টর ছিলেন। এছাড়া বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়েরও সচিব ছিলেন। প্রশাসনের ৮২ ব্যাচের এই কর্মকর্তা কবি হিসেবেও বেশ পরিচিত। সত্তরের দশকের নামকরা কবিদের মধ্যে তিনি অন্যতম।   

১৯৭৩ সালে ইস্টার্ন  নিউজ এজেন্সির (এনা) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধি হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেছিলেন শফিক আলম মেহেদী। পরে তিনি এনার নিজস্ব প্রতিবেদকও হয়েছিলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে লোক প্রশাসনে এমএ এবং আইন বিষয়ে এলএলবি করেন।

শফিক আলম ছাত্র জীবন থেকে সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সাথে যুক্ত আছেন।  তিনি ১৯৭৬ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘লিও ক্লাবে’র প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিলেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির প্রতিষ্ঠাতা সদস্য। ২০০৭ থেকে ২০০৯ পর্যন্ত অফিসার্স ক্লাবের নির্বাচিত সাধারণ স¤পাদক ছিলেন। ঢাকা সোনারগাঁও রোটারি ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক, ২০১০ সালে ‘তারা ক্লাব বাংলাদেশে’র প্রতিষ্ঠাতা আহ্বায়কও ছিলেন।

শফিক আলম মেহেদী বর্তমানে বাংলাদেশ খো খো ফেডারেশনের প্রেসিডেন্ট এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন ফোরাম-৭৩ এর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি। তিনি বাংলা একাডেমির আজীবন সদস্য এবং বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের সঙ্গেও সক্রিয়ভাবে যুক্ত।

স্কাউট আন্দোলনের সঙ্গেও দীর্ঘ দিন ধরে যুক্ত আছেন সচিব শফিক আলম। বর্তমানে তিনি বাংলাদেশ স্কাউটের আন্তর্জাতিক কমিশনার। স্কাউটিংয়ের ক্ষেত্রে  অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে তাকে বাংলাদেশ স্কাউটসের সর্বোচ্চ পুরস্কার ‘সিলভার টাইগার’ প্রদান করা হয়। তিনি বিশ্বের ৩০টির বেশি দেশে ভ্রমণ করেছেন। তার প্রকাশিত কবিতার বই আটটি। ‘একজন কৃতদাস ও একটি গাধার কাহিনী’ শীর্ষক আমলাতন্ত্র সম্পর্কে তার একটি বিখ্যাত কবিতা ড. সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী সম্পাদিত সাহিত্যপত্রের জুলাই-সেপ্টেম্বর ১৯৮৯ সংখ্যায় প্রকাশিত হয়। তিনি কবিতার জন্য কবি জসিমউদ্দীন পুরস্কার, শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন পুরস্কার ও কবি আবু জাফর ওবায়দুল্লাহ পুরস্কার পেয়েছেন। তাঁর কবিতার বই ‘মাধবী হৃদয় মেহেদীর রং’  (১৯৮৪), ‘বিরল নারী’ (১৯৯২),  ‘কদমের গন্ধ নেই’ (১৯৯৪), ‘ছিন্ন মেঘ’ (১৯৯৮), ‘মৃত্তিকা’ (২০০২) ‘নির্বাচিত কবিতা’ (২০০৪), ‘নির্বাচিত শত কবিতা’ (২০১২) এবং ‘নির্বাচিত পঙতিমালা’ (২০১৪)।

শফিক আলম কিশোরগঞ্জ জেলার কটিয়াদী উপজেলার একটি সম্ভ্রান্ত পরিবারে ১৯৫৫ সালে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা মো. সুলতান উদ্দিন ভূঁইয়া ও মা বেগম হাজেরা বেগম। বাবা ১৯৩৯ সালে আনন্দমোহন কলেজ থেকে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন। তিনি তাঁর এলাকার প্রথম স্নাতক ডিগ্রিধারী ছিলেন। মেহেদী তার বাবা-মায়ের স্মরণে কিশোরগঞ্জ জেলার কটিয়াদী উপজেলায় ‘হাজেরা সুলতান উচ্চ বিদ্যালয়’ এবং ‘সুলতান ভূঁইয়া মেমোরিয়াল প্রাথমিক বিদ্যালয়’ নামে দুটি স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন। তার স্ত্রী স্বপ্না মেহেদী এবং তাদের দুই মেয়ে উপমা ও উপলা।

(ঢাকাটাইমস/ ২৬ নভেম্বর/ এইচআর/ এইচএফ)