logo ২২ এপ্রিল ২০২৫
ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে লাল দাগের সিদ্ধান্ত ভুলে গেছে সরকার!
হাবিবুর রহমান, ঢাকাটাইমস
০৬ জানুয়ারি, ২০১৬ ০০:১৩:৫৪
image

ঢাকা: ঢাকায় ভূমিকম্পে ঝুঁকিপূর্ণ ভবন লাল দাগ দিয়ে চিহ্নিত করে দেয়ার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হয়নি নয় মাসেও। এখন সেই সিদ্ধান্ত মনেই করতে পারছে না গণপূর্ত মন্ত্রণালয়। আবার এই কাজ কে করবে, তা নিয়ে এই মন্ত্রণালয় ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের মধ্যে টানাটানি শুরু হয়েছে।


সরকারি কর্মকর্তাদের দায়িত্ব পালনে এই অবহেলায় জীবনের ঝুঁকিতে লাখো মানুষ।


সোমবার ভোরে ভূমিকম্পের পর ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ে এক বৈঠক শেষে দুর্যোগ সচিব জানান, ঢাকায় ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের সংখ্যা ৭২ হাজার। এই ভবনগুলোতে মোট কত মানুষ না থাকে সে বিষয়ে স্পষ্ট ধারণা না থাকলেও সেটা নিশ্চিতভাবেই ১০ লাখেরও বেশি-বলছেন সরকারি কর্মকর্তারা।


মাঝারি বা বড় মাত্রার একটি ভূমিকম্প এই ভবনগুলোকে মাটিতে মিশিয়ে দিতে পারে- বারবার সতর্ক করছেন বিশেষজ্ঞরা। ২৫ এপ্রিল নেপালে প্রলয়ঙ্করী ভূমিকম্পে জীবন ও সম্পদের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির পর সরকার রাজধানীতে ঝুঁকিপূর্ণ ভবন চিহ্নিত করতে বিশেষ উদ্যোগ নেয়।


সে সময় ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে সাইবোর্ডে এবং ভবনের দৃশ্যমান স্থানে রঙ করে ভবনটি বসবাসের জন্য অনুপযোগী হিসেবে লিখে দেয়ার কথা জানায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়। গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারাও ওই বৈঠকে ছিলেন। 


কিন্তু নেপাল দুর্যোগের পর নানা ঘটনাপ্রবাহে ওই সিদ্ধান্ত ভুলে গেছেন মন্ত্রণালয় দুটির শীর্ষ কর্মকর্তারা। ওই সিদ্ধান্ত কেন বাস্তবায়ন হয়নি-জানতে চাইলে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত সচিব মোহাম্মদ মঈন উদ্দিন আব্দুল্লাহ ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘এ বিষয় নিয়ে আমি কিছু জানি না। সভার অনেক পরে এই মন্ত্রণালয়ে যোগ দিয়েছি। ভূমিকম্প প্রস্তুতি ও সচেতনতামূলক কাজ করবে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়। এটা আমাদের কাজ নয়’।


গত বছর ৫ মে জাতীয় ভূমিকম্প প্রস্তুতি ও সচেতনতা কমিটির সভায়  ভূমিকম্পে ঢাকা শহরে হেলে পড়া ৮টি ভবনের হেলে পড়ার কারণ, ক্ষয়ক্ষতি ও দায়দায়িত্ব নিরূপণ করে ২০ মের মধ্যে একটি পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন উপস্থাপন করতে গণপূর্ত মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ করা হয়। বিল্ডিং কোড বাস্তবায়নের জন্য একটি বিল্ডিং রেগুলেটরি কমিশন/অথরিটি গঠন করার জন্য গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের অনুরোধ করা হয়।


সভায় বিল্ডিং কোড আপডেটসহ বাস্তবায়নে কঠোর অবস্থান নেয়ার জন্য রাজউক ও সিটি করপোরেশনকে অনুরোধ করা হয়। বিশেষত ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে বিশেষ রঙ দিয়ে চিহ্নিত করে ও তাতে ‘ঝুঁকিপূর্ণ ভবন’ সম্বলিত সাইনবোর্ড টানিয়ে দিতে এ দুটি সংস্থাকে নির্দেশ দেয়া হয়। তা গত বছল সেপ্টেম্বরের মধ্যে বিল্ডিং কোড আইন চূড়ান্ত করার কথা গণপূর্ত মন্ত্রণালয়।  সরকারি পুরনো মেডিকেল কলেজগুলো জরুরি ভিত্তিতে রিট্রোফিটিং করার ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য গণপূর্ত মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ করা হয়।


এছাড়া দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভবন, মসজিদ, মার্কেট ইত্যাদি স্থাপনার একটি নিরীক্ষা স্ব স্ব মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে করার জন্যও সংশ্লিষ্টদের অনুরোধ করা হয়।


জানতে চাইলে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ সচিব শাহ্ কামাল বলেন, ‘জাতীয় ভূমিকম্প প্রস্তুতি ও সচেতনতা কমিটির সভায় সিদ্ধান্ত এখনো বাস্তবায় করতে পারেনি গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়’।


(ঢাকাটাইমস/৬জানুয়ারি/এইচআর/ডব্লিউবি)