ঢাকা: জেলা প্রশাসক (ডিসি) পদে নিয়োগ পাচ্ছেন প্রশাসনের ৩৫ কর্মকর্তা। ২০ থেকে ২৫ জানুয়ারির মধ্যে দেশের বিভিন্ন জেলায় তাদের নিয়োগ দিতে যাচ্ছে সরকার।
রবিবার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের উচ্চপদস্থ এক কর্মকর্তা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ইব্রাহীম হোসেন খান এ বিষয়ে ঢাকাটাইমস টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, নতুন জেলা প্রশাসক নিয়োগের আনুষঙ্গিক প্রাক-প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। এ মাসের যেকোনো সময় তাদের নিয়োগ দেয়া হবে। আরো আগেই নিয়োগ দেয়ার কথা থাকলেও পৌরসভা নির্বাচনের কারণে তাতে দেরি হয়েছে।
মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, গত ডিসেম্বর মাসে ৩৫ জন নতুন জেলা প্রশাসকের নামের তালিকা (ডিসি তালিকা) প্রকাশ করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। একই সঙ্গে তাদের বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষণ শেষ করে প্রস্তুত রেখেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একজন অতিরিক্ত সচিব বলেন, পৌরসভা নির্বাচনের পর ৩৫ জেলায় নতুন জেলা প্রশাসক নিয়োগ দেয়ার কথা ছিল। আগামী ১২ জানুয়ারি স্থগিত পৌরসভার নিবার্চন শেষ হচ্ছে। এ কারণে কিছুদিন দেরিতে এসব কর্মকর্তাকে নিয়োগ দেয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তা ছাড়া জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (এপিডি) মহিবুল হক বিদেশে রয়েছেন। তিনি দেশে এলে নিয়োগের কাজটি শেষ করা হবে।
গত ডিসেম্বরে প্রকাশিত নতুন জেলা প্রশাসকের তালিকা থেকে যারা প্রশিক্ষণ নিয়েছেন তারা হলেন, হায়ার এডুকেশন কোয়ালিটি এনহেন্সমেন্ট প্রজেক্টের প্রকিউরমেন্ট অফিসার মো. মাহমুদুল হোসাইন খান, পাবলিক প্রাইভেট পাটনারশিপ অফিসের ডেপুটি ম্যানেজার ড. বশিরুল আলম, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব ড. আমিন উল আহসান, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের প্রথম সচিব আবুল কাশেম মো. মহিউদ্দিন, ভূমি মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মো. জাহিদুল ইসলাম ও মো. রাশেদুল ইসলাম, সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপসচিব ড. মো মুশফিকুর রহমান, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মো. খায়রুল আলম শেখ ও উম্মে সালমা তানজিয়া, ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদফতরের উপপরিচালক অমল কৃষ্ণ মন্ডল, স্থানীয় সরকার বিভাগের উপসচিব মো. খলিলুর রহমান, বিদ্যুৎ বিভাগের উপসচিব মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন, হবিগঞ্জ জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা দিলীপ কুমার বনিক, অর্থ বিভাগের উপসচিব মো. জহির রায়হান ও বেগম জিনাত আরা, পরিবেশ অধিদফতরের পরিচালক ড. মল্লিক আনোয়ার হোসেন, কৃষি মন্ত্রণালয়ের উপসচিব আমেনা বেগম, লিয়েনে কর্মরত মো. মাহমুদুল হাসান, অর্থ বিভাগে সংযুক্ত উপসচিব মোহাম্মদ মনজুরুল মান্নান, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের উপসচিব রেখা রাণী বালো, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের উপসচিব রাব্বী মিয়া ও মো. তোফায়েল ইসলাম, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পরিচালক মো. আজিমুদ্দিন বিশ্বাস ও মো. মোখলেসুর রহমান সরকার, খাদ্য মন্ত্রণালয়ের উপসচিব আহম্মেদ ফয়সাল ইমাম, ঢাকার গভর্নেন্স ইনোভেশন ইউনিটের পরিচালক কামরুন্নাহার সিদ্দিকা, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের উপসচিব সায়লা ফারজানা, কক্সবাজার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের স্থানীয় সরকারের উপ-পরিচালক আবুল ফয়েজ মো. আলাউদ্দিন খান, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে সংযুক্ত উপসচিব রেজওয়ানুর রহমান, রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের উপসচিব তপন কুমার বিশ্বাস, যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রীর একান্ত সচিব ড. সুভাষ চন্দ্র বিশ্বাস, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা বেগম শাহিনা খাতুন, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টার একান্ত সচিব মো. আবদুল আওয়াল, মহিলাবিষয়ক অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক শাহনেওয়াজ দিলরুবা খান এবং স্থানীয় সরকার বিভাগের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা পরিমল সিংহ।
জানা যায়, নতুন ডিসি তালিকা করার জন্য গত বছরের ১৮ ও ১৯ সেপ্টেম্বর বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারের ১৩, ১৫ ও ১৭তম ব্যাচের ১২৭ জন উপসচিব পদমর্যাদার কর্মকর্তাকে পরীক্ষায় অংশ নিতে ডাকা হয়। এর মধ্যে ১৩তম ব্যাচের ৫৪ জন, ১৫তম ব্যাচের ৩৬ জন এবং ১৭তম ব্যাচের ৩৭ জন পরীক্ষায় অংশ নেন। প্রাথমিক পর্যায়ে ৪৪ জন কর্মকর্তাকে নির্বাচিত করা হয়। পরে চূড়ান্তভাবে ৩৫ জনের তালিকা প্রকাশ করা হয়।
যেসব জেলার বর্তমান জেলা প্রশাসকদের প্রত্যাহার করা হচ্ছে তাদের মধ্যে রয়েছেন ঢাকা জেলার তোফাজ্জল হোসেন, পটুয়াখালীর অমিতাভ সরকার, ঝালকাঠির রবীন্দ্রশ্রী বড়ুয়া. পিরোজপুরের এ কে এম শামিমুল সিদ্দিকী, ভোলার সেলিম রেজা, কুমিল্লার হাসানুজ্জামান কল্লোল, ফেনীর হুমায়ুন কবির খোন্দকার, রাঙ্গামাটির মো. সামসুল আরেফিন, মুন্সীগঞ্জের ডিসিসহ বেশ কয়েকজন।
(ঢাকাটাটাইমস/১১জানুয়ারি/মোআ)