ঈসালে সওয়াবের সঠিক পদ্ধতি
ইসলাম ডেস্ক
১৫ এপ্রিল, ২০১৬ ১৯:৫৮:৪৬

ঢাকা: ‘ঈসালে সওয়াব’ কথাটি আমাদের সমাজে বেশ পরিচিত। ‘ঈসাল’ শব্দের অর্থ পৌঁছানো। ঈসালে সওয়াব বলতে আমরা মৃত ব্যক্তির ওপর বিভিন্ন আমলের সওয়াব পৌঁছানোকে বুঝি। তবে শুধু মৃত নয় জীবিত ব্যক্তির ওপরও সওয়াব পৌঁছানো যায়। সুতরাং ঈসালে সওয়াব মৃত বা জীবিত উভয়ের ওপরই প্রযোজ্য। বিভিন্ন নফল ইবাদত যেমন নফল নামাজ, রোজা, হজ এবং কোরআন তেলাওয়াত, জিকির-আজকার ও দান-খয়রাত করে এর সওয়াব মৃত বা জীবিত ব্যক্তির ওপর পৌঁছে দেয়া এবং তাদের জন্য দোয়া করাই ঈসালে সওয়াব।
হাদিসে আছে, রাসুল (সা.) বলেন, সদকায় মৃতের কবর আজাব নিবারণ হয় এবং শান্তি লাভ হয়। গোশতের একটি টুকরো দ্বারাও হলেও সদকা করার কথা বলেছেন রাসুল (সা.)। আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেন: কবরে সমাহিত মৃত ব্যক্তি সে ব্যক্তির মতো, যে সমুদ্রে ডুবন্ত অবস্থায় সাহায্যের জন্য আকুল প্রার্থনা জানায়। বেচারা তখন অপেক্ষায় থাকে, তার পিতা-মাতা, ভাই-বোন, স্ত্রী-সন্তান অথবা বন্ধু-বান্ধব থেকে রহমত ও মাগফেরাতের দোয়া লাভ করবে। অন্য হাদিসে আছে, আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে জান্নাতে কোনো ব্যক্তির মর্যাদা হঠাৎ বাড়িয়ে দেয়া হয়। তাতে সে ব্যক্তি জিজ্ঞেস করে, হে আল্লাহ! কী কারণে এবং কোথা থেকে আমার মর্যাদা উন্নীত হলো? এর উত্তরে বলা হয়, তোমার এ মর্যাদা তোমার অমুক সন্তানের মাগফেরাতের দোয়ার কারণে।
আমাদের সমাজে বিভিন্নভাবে ঈসালে সওয়াব পালন করা হয়। কারও মৃত্যুর পর চার দিনের মাথায় মহা ধুমধামে খাওয়া-দাওয়া এবং দোয়ার আয়োজন করা হয়; চল্লিশ দিনেও থাকে বিশেষ আয়োজন। ইসলামে ঈসালে সওয়াবকে সমর্থন করে, তবে এভাবে তারিখ নির্দিষ্ট করে বাধ্যতামূলকভাবে উপলক্ষ্য নির্ধারণ এটা সমর্থন করে না। বরং এটা বিদাত হিসেবে গণ্য হবে। ঈসালে সওয়াবের ক্ষেত্রে কোনো লৌকিকতা ও বাধ্যবাধকতার আরোপ করা যাবে না। নিজের সামর্থ্য অনুযায়ী হালাল সম্পদ থেকে গরিব-মিসকিনদের গোপনে সাহায্য-সহযোগিতা করা যেতে পারে। যতটুকু সম্ভব নিজে কোরআন শরিফ তেলাওয়াত করে এর সওয়াব মৃতের রূহের ওপর পৌঁছানো উত্তম। মনে রাখবেন, আপনি আপনার প্রিয়জনের জন্য হৃদয়ের যে আকুতি নিয়ে দোয়া করবেন কাউকে টাকার বিনিময়ে এনে দোয়া করালে সেটা হবে না। এজন্য নিজের মৃত আত্মীয়-স্বজনের জন্য নিজেকেই ঈসালে সওয়াব করতে হবে।
(ঢাকাটাইমস/১৫এপ্রিল/জেবি)