শাহে আলম মুরাদ। এরশাদবিরোধী আন্দোলনে হাতেখড়ি রাজনীতিতে। তখন ছিলেন ছাত্র। ১৯৮৩ থেকে ৮৭ পর্যন্ত ঢাকা মহানগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তিন দশক পর পরিচয় এখন আওয়ামী লীগ নেতা। মাঝে যুবলীগ হয়ে এসেছেন মূল দলে। তিন দশকের রাজনৈতিক অভিজ্ঞতার পর এবার ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পেয়েছেন। নতুন দায়িত্বকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন। প্রথম চ্যালেঞ্জ পূর্ণাঙ্গ কমিটি। এ ছাড়া দলের কোন্দল সামাল দেয়া, নানা মত-পথের মানুষকে এক সূত্রে গাঁথা, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের সামাল দেয়ার মতো কাজও করতে হবে। কীভাবে এত সব সামলাবেন, তা নিয়ে ঢাকাটাইমসকে জানিয়েছেন শাহে আলম মুরাদ। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন তানিম আহমেদ।
ঢাকাটাইমস: আপনার বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার করে অন্যের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান দখলের অভিযোগ আছে। দুর্নীতি দমন কমিশন অনুসন্ধানও চালাচ্ছে।
শাহে আলম মুরাদ: আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা তথ্য উপস্থাপন করে ষড়যন্ত্র কারা করেছিল সেটা সবাই জানে। তারা আমার সঙ্গে দলের ভাবমূর্তি নষ্ট করেছে। তাদের বিচার আল্লাহ করবেন। দুর্নীতির যে অভিযোগ প্রতিপক্ষ এনেছে, তা কেউ প্রমাণ করতে পারেনি, পারবেও না। যাদের অপকর্ম রয়েছে, তারাই আমার বিরুদ্ধে এমন অপপ্রচার চালিয়ে ভাবমূর্তি নষ্ট করতে চেয়েছে। কিন্তু তাদের কোনো লাভ হয়নি।
ঢাকাটাইমস: এই ষড়যন্ত্রকারী কারা?
শাহে আলম মুরাদ: দলের ভেতরেই একটি গোষ্ঠী তাদের স্বার্থসিদ্ধির জন্য এই অভিযোগ তুলেছে। তাদের নাম আমি বলতে চাই না। তবে নেত্রী এসব কিছু বিশ্বাস করেননি। তাই নতুন পদ দিয়েছেন আমাকে।
ঢাকাটাইমস: নেতৃত্ব নিয়ে কোন্দলের কথা প্রায়ই শোনা যায়। এটা দূর করবেন কীভাবে?
শাহে আলম মুরাদ: শেখ হাসিনার নির্দেশের বাইরে থেকে কারও রাজনীতি করার সুযোগ নেই। আমরা শেখ হাসিনার কর্মী, এখানে অন্য কারও পরিচয় বা স্বার্থ পাত্তা পাবে না। নেত্রী যে নির্দেশনা দেবেন, আগামী নির্বাচনে যাদের মনোনয়ন দেবেন, তাদের জেতাতে আমরা কাজ করব।
ঢাকাটাইমস: মহানগর দক্ষিণের কমিটি নতুন করে সাজাতে আপনার পরিকল্পনা কী?
শাহে আলম মুরাদ: প্রধানমন্ত্রী আমাদের বলেছেন ত্যাগীদের মূল্যায়ন করার। তার নির্দেশেই আমাদের আগামী দিনের কর্মপরিকল্পনা। পরীক্ষিত, ত্যাগী, পরিচ্ছন্ন, কর্মীবান্ধব, সাহসী ও জনগণের পক্ষের নেতারা থাকবেন পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে।
ঢাকাটাইমস: নতুন কমিটিতে তরুণদের কীভাবে মূল্যায়ন করবেন?
শাহে আলম মুরাদ: তরুণদের নতুন কমিটিতে স্থান দিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদের নির্দেশ দিয়েছেন। আমরা সেই অনুযায়ী কাজ করছি। বিভিন্ন থানা ও ওয়ার্ড কমিটিতেও সাবেক ছাত্রলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতাদের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। পূর্ণাঙ্গ কমিটিতেও সহযোগী সংগঠনের সাবেক নেতারা স্থান পাবেন।
ঢাকাটাইমস: পূর্ণাঙ্গ কমিটি কখন হবে?
শাহে আলম মুরাদ: আমরা দ্রুতই এই প্রক্রিয়া শুরু করব। নেত্রী যেভাবে নির্দেশনা দিয়েছেন, সেভাবেই আলাপ-আলোচনা করে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের কাজ শুরু করব।
ঢাকাটাইমস: আন্দোলনের মধ্য দিয়ে আপনার রাজনীতিতে উঠে আসা। কিন্তু এখন আপনার দল ক্ষমতায়। নিশ্চয় ভিন্ন প্রক্রিয়ায় কাজ করতে হবে...
শাহে আলম মুরাদ: অতীতের যেকোনো আন্দোলন-সংগ্রামে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা রেখেছিল। কেবল সরকারবিরোধী আন্দোলন নয়, বিরোধী দলের ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে দেশকে এগিয়ে নেয়াও এখন আওয়ামী লীগের বড় দায়িত্ব। অতীতেও এই কাজ করতে হয়েছে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের। ভবিষ্যতেও এই কাজ করে যাব আমরা। আমাদের নবনির্বাচিত কমিটির ওপর সেই বিশ্বাস-আস্থা রয়েছে। তারা অতীতের চেয়ে আরও বেশি সাহসী ভূমিকা রাখবে।
(ঢাকাটাইমস/২মে/টিএ/ডব্লিউবি/মোআ)