মনে হতে পারে বদহজমের সমস্যা। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে ওষুধ খেয়েও রোগ সারছে না। ডাক্তারের শরণাপন্ন হওয়ার পর জানা গেল আসল সত্যিটা। ডিম্বাশয়ের ক্যানসার! অনেকটা নিঃশব্দে ছড়িয়ে পড়ে এই অসুখ। তবে চিকিৎসায় দেরি না হলে অনেকদিন পর্যন্ত ভালো থাকা সম্ভব।
সমস্যা ও সমাধান
ডিম্বাশয়ের ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার নির্দিষ্ট কোনো বয়স না থাকলেও পরিসংখ্যানে দেখা যায়, সাধারণত পঞ্চাশোর্ধ মহিলারাই এই অসুখে বেশি আক্রান্ত হতে পারেন। প্রতি ৭৫ জনে অন্তত একজন এই সমস্যায় আক্রান্ত হন। যাদের পরিবারে এই অসুখের ইতিহাস আছে, সেখান থেকে বলে দেওয়া যায়, ভবিষ্যতে তাদের আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা কতখানি। এ ধরনের ক্যানসারের ক্ষেত্রে জেনেটিক মডেল খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
এই অসুখের একটি অন্যতম ঝুঁকিপূর্ণ বিষয় হচ্ছে স্থূলতা। স্থূলকায় মহিলাদের সতর্ক হওয়া প্রয়োজন। ইসট্রোজেনযুক্ত হরমোন রিপ্লেসমেন্ট থেরাপি ডিম্বাশয়ের ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ায়। যদি পরিবারের কারো এ রোগ হয়ে থাকে তবে কমবয়সীদের মধ্যেও একটি বিশেষ ধরনের ডিম্বাশয়ের ক্যানসার দেখা যায়। একে বলা হয় জার্ম সেল টিউমার। তবে পঞ্চাশের ওপর বয়স যাদের তাদের যে ক্যানসার হতে দেখা যায় সেটি ডিম্বাণুুর বাইরের ত্বকের কোষ থেকে জন্মায়। একে বলে এপিথেলিয়াল ওভারিয়ান ক্যানসার।
অনেকেই ভাবেন এই ক্যানসারের লক্ষণগুলো অন্য স্ত্রীরোগের মতো হবে। এটি স¤পূর্ণ ভুল। হজমের গ-গোল, খাওয়ার পর পেট ফুলে থাকা, হঠাৎ করে কোষ্ঠকাঠিন্য বা ডায়রিয়া শুরু হয়ে যাওয়া ইত্যাদি এর লক্ষণ। এ রকম লক্ষণ যদি ওষুধ খেয়েও না সারে তবে ডাক্তারের শরণাপন্ন হওয়া উচিত। চারটি লক্ষণের দিকে বিশেষভাবে নজর দিতে হবে : পেটে বা তলপেটে স্থায়ী ব্যথা, পেট ফুলে থাকা আর হঠাৎ করে মূত্রত্যাগ বা অন্ত্রের নিয়মের পরিবর্তন হওয়া। এই লক্ষণগুলো অনেকদিন থাকলে ডাক্তারের পরামর্শমতো আলট্রাসোনোগ্রাম ও রক্ত পরীক্ষা করাতে হবে। এ থেকে বোঝা যাবে ডিম্বাশয়ের ক্যানসার আছে কি না।
ডিম্বাশয়ের ক্যানসারের মূল সমস্যা হলো বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই রোগ নির্ণয় তৃতীয় বা চতুর্থ ধাপে গিয়ে হয়। এর আগে রোগীকে শুধু হজমের গোলমালের চিকিৎসা দেওয়া হয়। সবার আগে এই অসুখ নিয়ে সচেতনতা বাড়ানো জরুরি।
তথ্যসূত্র : ইন্টারনেট