হোটেল ভাড়া ৩০ টাকা!
নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
২৭ মে, ২০১৬ ১৩:০০:৩৬

ঢাকা: রাজধানী ঢাকায় যেখানে রিকশায় উঠলেই দিতে হয় ২০ টাকা। সেই ঢাকাতেই মাত্র ৩০ টাকায় হোটেলে থাকা! পাঠক আপনাদের কাছে বিষয়টি অসম্ভব মনে হলেও রাজধানীর বুড়িগঙ্গার তীরে দীর্ঘ দিন ধরেই চলছে এই ব্যবসা। নদী তীরে ওয়াইজঘাটে অন্তত এমন চারটি হোটেল পাবেন যেখানে এই অল্প টাকায় রাত কাটানোর সুযোগ রয়েছে। আর এই হোটেলগুলো সবই ভাসমান। বুড়িগঙ্গার তীরে গেলেই দেখা মিলবে এই হোটেলগুলোর। পুরনো বা অকেজো লঞ্চগুলোকেই ভাসমান হোটেল হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে হোটেল হিসাবে।
প্রায় ৬০ বছর ধরে কম দামি এই হোটেলগুলো সেবা দিয়ে যাচ্ছে নগরবাসীকে। তবে হোটেলগুলো তেমন পরিষ্কার-পরিছন্ন নয়। এখানে সাধারণ কক্ষের থাকার খরচ ৩০ টাকা। আর কেবিনে খরচ পড়ে ৮০ থেকে ৮৫ টাকা।
এই হোটেলগুলোর মধ্যে একটি হচ্ছে ফরিদপুর মুসলিম হোটেল। হোটেল মালিক মোস্তফা মিয়া বলেন, এখানে অনেক কম টাকায় থাকা যায়। আমরা গ্রাহকদের লকার সুবিধাও দিয়ে থাকি। যাতে করে তারা তাদের মূল্যবান জিনিসপত্র রাখতে পারেন।
দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে যারা ঢাকায় ব্যবসায়িক কাজে আসেন এবং সদরঘাট এলাকায় ব্যবসা করেন তারাই মূলত এসব হোটেলে থাকেন। এখানে এমন ব্যবসায়ীও আছেন যারা অনেক বৎসর ধরে এসব হোটেলে আছেন।
সিরাজ মাতব্বর নামে শরীয়তপুরের এক ফল ব্যবসায়ী সুদীর্ঘ ৪০ বছর ধরে ভাসমান হোটেলে থাকছেন। সিরাজের মত কমপক্ষে আরও ১৫ জন ব্যবসায়ী এসব হোটেলে পাঁচ থেকে ২০ বছর ধরে আছেন।
সিরাজ মাতব্বর বলেন, দেশ স্বাধীন হওয়ার আগেই ঢাকায় এসেছিলাম। ওই সময় বুড়িগঙ্গায় কমপক্ষে ৫০টি ভাসমান হোটেল ছিল।এগুলো ছিল সুবিধাজনক এবং স্বস্তা। আমার মত লোকদের জন্য ঢাকায় থাকার সেরা জায়গা। তাই আমি এখানে আবার ফিরে এসেছি।
পঞ্চাশের দশকের দিকে বুড়িগঙ্গায় প্রথম ভাসমান হোটেল চালু হয়। তখন মূলত হিন্দু ব্যবসায়ীরা নদীপথে ঢাকায় আসলে এখানে থাকতেন। ধীরে ধীরে এখানে হোটেলের সংখ্যা বাড়তে থাকে। কিন্তু ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধের পর ভাসমান হোটেলের সংখ্যা কমে পাঁচে চলে আসে।
(ঢাকাটাইমস/২৭মে/এসআই/এআর/ঘ.)