logo ২১ এপ্রিল ২০২৫
ঢাকা মহানগর বিএনপি দুই ভাগ
নেতৃত্বে সালাম-নবী, কাইয়ুম-তাবিথ?
বোরহান উদ্দিন, ঢাকাটাইমস
২৫ মে, ২০১৬ ১০:৩৩:২০
image



ঢাকা: নেতৃত্বের বিকাশ ও সংগঠনকে শক্তিশালী করতে আওয়ামী লীগের আদলে ঢাকা মহানগর বিএনপিকে দুই ভাগ (উত্তর-দক্ষিণ)  করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। নতুন কমিটিতে নবীন-প্রবীণের সমন্বয় থাকবে বলে জানিয়েছেন দলের শীর্ষস্থানীয় নেতারা। রমজানের আগে সম্ভব না হলে ঈদের পর এই কমিটি ঘোষণা করা হতে পারে বলে গুঞ্জন রয়েছে।






নতুন কমিটিতে স্থান পেতে পদপ্রত্যাশী নেতারা এরই মধ্যে লবিং-তদবিরে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। তবে এই যোগাযোগে কতটা লাভ হবে, সেটা বলা মুশকিল। কারণ সব সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করবেন চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। কমিটি গঠনের নির্দেশনা দিয়ে তিনি সব বিষয়ে খোঁজ-খবর রাখছেন বলে জানিয়েছেন নেতারা।






দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে সরকারবিরোধী আন্দোলনে ব্যর্থতার পর সাদেক হোসেন খোকা ও আব্দুস সালামের নেতৃত্বাধীন ঢাকা মহানগর কমিটি ভেঙে দেন খালেদা জিয়া। মির্জা আব্বাস ও হাবিব উন নবী খান সোহেলের নেতৃত্বে ঘোষণা করা হয় নতুন আহ্বায়ক কমিটি। এই কমিটি মহানগর বিএনপিকে পুনর্গঠন করে শক্তিশালী করবে এবং তারা সরকারবিরোধী আন্দোলন এগিয়ে নেবে এমন চিন্তা ছিল খালেদা জিয়ার।






কিন্তু ২০১৪ সালের ১৮ জুলাই ৫২ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হলেও খোকা-সালামের পথেই পা বাড়ায় তারা। সরকারের এক বছর পূর্তির দিন থেকে সরকার পতনের ডাকে বিএনপির ‘চূড়ান্ত’ আন্দোলন শুরু হলেও রাজপথ ছেড়ে আত্মগোপনে ছিলেন আহ্বায়ক কমিটির শীর্ষ নেতারা।






পরে দলের শীর্ষ নেতাদের পাশাপাশি বিএনপিপন্থী বুদ্ধিজীবীরা সংগঠনকে গতিশীল করতে ঢাকা মহানগরকে দুই ভাগ করার পরামর্শ দেন। বিএনপির চেয়ারপারসনও একে ইতিবাচক হিসেবে নেন। আর দলের নীতিনির্ধারণী ফোরামের বৈঠকে মহানগর কমিটিকে বিভক্ত করার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হয়।






দলীয় সূত্রে জানা গেছে, দুই ভাগের কমিটিতে সাবেক আহ্বায়ক সাদেক হোসেন খোকা, বর্তমান আহ্বায়ক মির্জা আব্বাস থাকছেন না, এটা অনেকটা নিশ্চিত। তবে এই দুই নেতার বলয়ের বাইরে নেতৃত্ব যাওয়ার সম্ভাবনাও কম। এর পক্ষে-বিপক্ষে মতামত থাকলেও পক্ষে জোরালো বক্তব্য রয়েছে।






নেতাকর্মীরা বলছেন, মির্জা আব্বাস-সাদেক হোসেন খোকা দীর্ঘদিন ধরে মহানগরের নেতৃত্ব দিয়েছেন। গোটা মহানগরে তাদের সমর্থক রয়েছে। সে কারণে নতুন নেতৃত্বকে তাদের বলয়মুক্ত করা ঠিক হবে না। এই দুই শীর্ষ নেতার অভিজ্ঞতা ও পরামর্শ কাজে লাগাতে পারলে দল উপকৃত হবে বলে নেতাকর্মীদের মত।






দলীয় সূত্রের খবর এবং নেতাকর্মীদের আলাপে ঢাকা উত্তরে সভাপতি হিসেবে সাবেক কমিশনার এম এ কাইয়ুমের নাম বেশ আসছে। আব্বাস ও খোকা দুজনের সঙ্গেই কাইয়ুমের ভালো সম্পর্ক রয়েছে। উত্তরে সাধারণ সম্পাদক পদে সাবেক কমিশনার আহসান উল্লাহ হাসানের নাম শোনা যাচ্ছে। তবে বিএনপির নেতা আব্দুল আউয়াল মিন্টুর ছেলে সাবেক মেয়রপ্রার্থী তাবিথ আউয়ালের কথাও আলোচনায় আছে।






অন্যদিকে দক্ষিণের সভাপতি হতে আগ্রহী অবিভক্ত ঢাকা মহনগর কমিটির সাবেক সদস্যসচিব আবদুস সালাম। দীর্ঘদিন ধরে মহানগরে রাজনীতি করায় সব থানা ও ওয়ার্ড পর্যায়ে সমর্থক আছে তার। আর এক নেতার এক পদের নীতির কারণে হাবিব উন নবী খান সোহেল ঢাকা মহানগরের নেতৃত্বে থাকছেন না। কারণ ইতিমধ্যে তাকে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব করা হয়েছে।






আর দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক পদে নবীউল্লাহ নবী ও সালাহউদ্দিন আহমেদের নাম শোনা যাচ্ছে। প্রথমে শীর্ষ ৫ নেতার নাম ঘোষণা করা হতে পারে বলে শোনা গেছে।






আব্দুস সালামের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি ঢাকাটাইমসকে বলেন, “ম্যাডাম যেখানে সুযোগ দিবেন সেখানেই কাজ করব। আর আমার রাজনীতি যেহেতু মহানগর দিয়ে তাই এখানে কাজ করা সহজ হবে বলে আমার বিশ্বাস।”






কবে কমিটি ঘোষণা হতে পারে জানতে চাইলে আব্দুস সালাম বলেন, “শুনছি শিগগির কমিটি হতে পারে। তবে সব কিছু নির্ভর করছে চেয়ারপারসনের ওপর। তিনি যখন চাইবেন তখন নতুন কমিটি দেবেন।”






ঢাকা মহানগর বিএনপিকে দুই ভাগ করার বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মাহবুবুর রহমান ঢাকাটাইমসকে বলেন, “ঢাকায় এখন দুজন মেয়র, আওয়ামী লীগও দুই ভাগ করেছে। সঙ্গত কারণে বিএনপিও সেই সিদ্ধান্ত নিবে। দল সিদ্ধান্তও নিয়েছে। তবে কবে নাগাদ কমিটি ঘোষণা করা হবে তা আমার জানা নেই “






তবে স্থায়ী কমিটির অন্য একজন সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে ঢাকাটাইমসকে জানান, জুনের মধ্যে কমিটি ঘোষণা হওয়ার সম্ভাবনা আছে।






(ঢাকাটাইমস/২৪/বিইউ/ডব্লিউবি)