জনশক্তি আমদানিতে চীনের প্রতি শিল্পমন্ত্রীর আহ্বান
নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
১৪ জুন, ২০১৬ ১৬:৪৩:৩২

ঢাকা: বাংলাদেশ থেকে দক্ষ ও আধা দক্ষ জনশক্তি আমদানির জন্য চীনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু। তিনি বলেছেন, চীনে শ্রমিকের মজুরি ব্যাপকহারে বৃদ্ধির কারণে বাংলাদেশ থেকে শ্রমশক্তি আমদানির সুযোগ রয়েছে। মঙ্গলবার শিল্পমন্ত্রণালয় থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
বাংলাদেশে উন্নতমানের শিল্পপণ্য উৎপাদনের লক্ষ্যে চীনের উন্নত প্রযুক্তি স্থানান্তর এবং মানবসম্পদ প্রশিক্ষণের জন্য যৌথ বিনিয়োগের প্রস্তাব করেন শিল্পমন্ত্রী। চীনের ইউনান প্রদেশের গভর্নর চেং হাউ এর সঙ্গে বৈঠককালে শিল্পমন্ত্রী এ আহ্বান জানান। কুনমিং ইন্টারন্যাশনাল হোটেলে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় দুই দেশের ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকে শিল্পমন্ত্রী বলেন, ২০২১ সাল নাগাদ শিল্পসমৃদ্ধ মধ্যম আয়ের বাংলাদেশ গড়ে তোলার লক্ষ্য নিয়ে বর্তমান সরকার কাজ করে যাচ্ছে। এ লক্ষ্য অর্জনে ম্যানুফ্যাকচারিং শিল্পখাতের অবদান শতকরা ৩৫ ভাগ এবং শিল্প শ্রমশক্তির পরিমাণ শতকরা ২৫ ভাগে উন্নীত করা হবে। ইতোমধ্যে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য বিশেষ সুবিধা দিয়ে জাতীয় শিল্পনীতি-২০১৬ প্রণয়ন করা হয়েছে। তিনি বাংলাদেশে চিনি, কাগজ ও সার কারখানার আধুনিকায়নে সরাসরি কিংবা যৌথ বিনিয়োগে চীনা উদ্যোক্তাদের উৎসাহিত করতে গভর্নরের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
আমির হোসেন আমু বলেন, শিল্পায়নের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ পরিবেশ সুরক্ষার প্রতি সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিচ্ছে। চীন বাংলাদেশের শিল্প কারখানায় ইটিপি স্থাপনে কারিগরি সহায়তা দিতে পারে। এর পাশাপাশি তিনি জ্বালানি সাশ্রয়ী বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম উৎপাদন, বিএসটিআইর আধুনিকায়ন, রাষ্ট্রায়ত্ত চিনিকলগুলোর উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি, আধুনিক পদ্ধতিতে মৌ-চাষ এবং পরিবেশবান্ধব শিপ-রিসাইক্লিং শিল্পখাতে চীনের প্রযুক্তিগত সহায়তা কামনা করেন। তিনি গভর্নরকে সুবিধামত সময়ে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান।
বৈঠকে গভর্নর চেং হাউ বলেন, কুনমিংয়ের সঙ্গে বাংলাদেশের ঐতিহাসিক বাণিজ্যিক সম্পর্ক রয়েছে। দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য জোরদারের লক্ষ্যে দুই দেশের মধ্যে সড়ক ও রেল যোগাযোগ নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা সময়ের দাবি। বাংলাদেশের সমুদ্র সৈকত কুনমিংয়ের জনগণকে আকর্ষণ করে জানিয়ে তিনি বলেন, কুনমিং প্রদেশের শিল্প উদ্যোক্তারা বাংলাদেশের পর্যটন শিল্পসহ উদীয়মান শিল্পখাতে বিনিয়োগে আগ্রহী। দ্বিপাক্ষিক বিনিয়োগ ও বাণিজ্য প্রসারের মাধ্যমে বাংলাদেশের উদীয়মান অর্থনীতির অংশীদার হতে চীন সব ধরনের সহায়তা দেবে বলে তিনি জানান।
শিল্পমন্ত্রী ১৩ জুন আন্তর্জাতিক উৎপাদন দক্ষতা বিষয়ক সহায়তা জোরদার সম্পর্কিত দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় অংশ নেন। এ সময় তিনি বাংলাদেশে কৃষি পণ্য প্রক্রিয়াকরণ ও কৃষি যন্ত্রপাতি উৎপাদন, সফটওয়্যার, ওষুধ, পাটজাত পণ্য, সিমেন্ট ও সার এবং শিল্পখাতে বিশ্বমানের কারখানা স্থাপনে সরাসরি কিংবা যৌথ বিনিয়োগে এগিয়ে আসতে চীনা উদ্যোক্তাদের পরামর্শ দেন্।
কুনমিং ইন্টারন্যাশনাল হোটেলে আয়োজিত এ সভায় চীন সরকারের জাতীয় উন্নয়ন ও সংস্কার কমিশন সম্পর্কিত আন্তর্জাতিক বিভাগের ভাইস চেয়ারম্যান নিং জি, ইউনান প্রদেশের গভর্নর চেং হাউসহ আফগানিস্তান, ভুটান, ভারত, মালদ্বীপ, পাকিস্তান, শ্রীলংকা ও নেপালসহ দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মন্ত্রী ও শিল্প উদ্যোক্তারা অংশ নেন।
(ঢাকাটাইমস/১৪জুন/এইচআর/জেবি)