চট্টগ্রাম: পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু হত্যাকাণ্ডের রহস্য খুব শিগগির উন্মোচন হবে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম নগর পুলিশের কমিশনার ইকবাল বাহার। মিতু হত্যা মামলার অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে চাইলে আজ শনিবার সকালে ঢাকাটাইমসকে তিনি বলেন, আরেকটু ধৈর্য্য ধরুন। শিগগিরই রহস্য উন্মোচন হচ্ছে।
বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, পুলিশ এই হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী ও হত্যায় সরাসরি অংশ নেয়া খুনিদের ব্যাপারে নিশ্চিত হয়েছে।
৫ জুন সকালে ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে যাওয়ার সময় নগরীর জিইসি এলাকায় মিতুকে প্রথমে ছুরিকাঘাত ও পরে গুলি করে খুন করে দুর্বৃত্তরা। এরপর সন্দেহভাজন হিসেবে বেশ কয়েকজনকে আটক করে পুলিশ।
পুলিশের কমিশনার ইকবাল বলেন, হত্যাকা- সম্পর্কে পুলিশ পুরোপুরি অবগত। ৯ ভাড়াটে খুনি দিয়ে এ হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে। তাদের মধ্যে ৫ খুনি পুলিশের কব্জায় রয়েছে। আর এ হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনায় রয়েছে একজন।
পুলিশের কব্জায় থাকা খুনিরা কারা এ ব্যাপারে তিনি বিশদ কিছু বলতে রাজি হননি। তবে হত্যাকাণ্ডের পর সিসিটিভি ফুটেজে দেখা মোটরসাইকেল মালিক আবদুর রহিম, মাইক্রোবাস চালক জানে আলম, মনির, আবু নসর গুন্নু, শাহজামাল রবিন পুলিশের কব্জায় রয়েছে। কিন্তু পুলিশ বিভিন্ন সময়ে এদের কাছ থেকে মিতু হত্যাকাণ্ডের কোনো তথ্য বা সংশ্লিষ্টতা না পাওয়ার কথা বলেছিল। আর যদি ওই পাচঁজন না হয় তাহলে পুলিশের কব্জায় নতুন করে কারা আছে, তা নিয়ে ধূম্রজাল সৃষ্টি হয়েছে।
এ ব্যাপারে নগর পুলিশের একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলেও নতুন কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। কোনো কোনো কর্মকর্তা এ ব্যাপারে কোনো কথাই বলতে নারাজ। এমনকি মিতু হত্যাকাণ্ডে জঙ্গি সম্পৃক্ততার বিষয়টিও এখন বলছেন না কোনো পুলিশ কর্মকর্তা। গত দুই-এক দিন ধরে চট্টগ্রামে গুঞ্জন চলছে, ক্ষমতাসীন দলের প্রভাবশালী এক নেতা এ হত্যাকাণ্ডে মূল পরিকল্পনায় রয়েছেন। যিনি বর্তমানে লন্ডনে অবস্থান করছেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা নগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মো. কামরুজ্জামান এ প্রসঙ্গে বলেন, মিতু হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচনের দ্বারপ্রান্তে পুলিশ। হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনাকারী, হত্যাকারী এবং তাদের সহযোগীদের ব্যাপারে পুরোপুরি নিশ্চিত হওয়া গেছে। এদের মধ্যে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সরাসরি স¤পৃক্ত পাঁচজন এখন পুলিশ হেফাজতে রয়েছে।
অতিরিক্ত কমিশনার জানান, মিতু হত্যাকাণ্ডের পুরো পরিকল্পনা একজন মাত্র ব্যক্তি করেছেন। আর পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করেছে ভাড়াটে খুনিরা। হত্যাকাণ্ডে সরাসরি অংশ নিয়েছে চারজন এবং পাঁচজন আশপাশে অবস্থান নিয়ে সহায়তা করেছে। এ ছাড়া মিতুকে হত্যা করতে কমপক্ষে পাঁচ দফা চেষ্টা চালিয়ে সাত দফায় হত্যাকারীরা সফল হয়েছে বলে পুলিশ তদন্তে নিশ্চিত হয়েছে।
হত্যাকাণ্ডে ক্ষমতাসীন দলের প্রভাবশালী নেতার মূল পরিকল্পনা সম্পর্কে জানতে চাইলে নগর পুলিশ কমিশনার ইকবাল বাহার সরাসরি কোনো মন্তব্য না করে বলেন, ‘আমরা শিগগিরই এ ব্যাপারে আপনাদের ভালো খবর দিতে সক্ষম হব। এ জন্য আরেকটু ধৈর্য্য ধরতে হবে।’
ইকবাল বাহার বলেন, হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনা থেকে বাস্তবায়ন ও এর পরবর্তী অবস্থার পুরো চিত্র এখন পুলিশের হাতে এসে গেছে। শিগগিরই এই হত্যারহস্য উন্মোচিত হবে জানিয়ে এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন ‘জাস্ট ওয়েট অ্যান্ড সি।’
(ঢাকাটাইমস/২৫জুন/আইকে/মোআ)