logo ২৩ এপ্রিল ২০২৫
হাঁকডাকে সরগরম ফুটপাতের ঈদবাজার
এম গোলাম মোস্তফা, ঢাকাটাইমস
২৫ জুন, ২০১৬ ২২:৩১:০৬
image



ঢাকা: পবিত্র ঈদুল ফিতরের কেনাকাটা জমে উঠেছে রাজধানীর ফুটপাতের বাজার। সকাল থেকে গভীর রাত অবধি ক্রেতাদের জমজমাট ভিড়। হকারদের হাঁকডাকে সরগরম প্রতিটি ফুটপাত। বেচাবিক্রির ব্যস্ততায় দম ফেলার ফুরসত নেই ফুটপাত ব্যবসায়ীদের।






রাজধানীতে ফুটপাতে ঈদের কেনাবেচা হয় প্রায় ৫০টি স্পটে। এর মধ্যে বঙ্গবন্ধু এভিনিউ হকার্স সমিতি মার্কেট, গুলিস্তান মোড়ের চারপাশের ফুটপাত, গোলাপ শাহ মাজার সংলগ্ন ফুটপাত, বঙ্গবাজার ফুটপাত, নিউমার্কেট এলাকার ফুটপাত, গাউছিয়া এলাকার ফুটপাত, মতিঝিল জনতা ব্যাংকের সামনে, মতিঝিল শাপলা চত্বরের চারদিকের ফুটপাত, ফকিরাপুল এলাকা, বায়তুল মোকাররম মসজিদের উত্তর-পশ্চিম গেটের সামনের ফুটপাতে ঈদের বেচাকেনা হয়।






শনিবার রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার ফুটপাত ঘুরে দেখা যায়, সব বয়সী নারী-পুরুষ ও শিশুদের জন্য বিভিন্ন ডিজাইনের পোশাক পাওয়া যাচ্ছে ফুটপাতের দোকানগুলিতে। প্রতিনিয়ত এসব দোকানে বাড়ছে ক্রেতাদের ভিড়।






শো-রুমগুলোতে দাম বেশি হওয়ায় নিম্ন ও মধ্য আয়ের মানুষরা ছেলে মেয়েদের জন্য ঈদের পোশাকসহ প্রয়োজনীয় পণ্য কিনতে ফুটপথকেই বেছে নিয়েছেন। ছেলেদের পাঞ্জাবি, শার্ট, টি-শার্ট, প্যান্ট, বেল্ট, লুঙ্গি, টুপি, সুগন্ধি থেকে শুরু করে মেয়েদের শাড়ি, ঘড়ি, থ্রি-পিস, টু-পিস, সিঙ্গেল কামিজ, রেডিমেড কামিজ, টপস, টাইটস, গজ কাপড়, বিভিন্ন ধরনের অর্নামেন্টস, কসমেটিকস, বাচ্চাদের পাঞ্জাবি, থ্রি-পিস, ফ্রক, স্কার্ট, প্যান্ট, গেঞ্জি, বড়-ছোট সবার জুতা, স্যান্ডেল, চশমাসহ প্রায় সব কিছুই পাওয়া যাচ্ছে এইসব ফুটপাতের দোকানগুলো থেকে।






ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত সপ্তাহের তুলনায় এ সপ্তাহে বেচাকেনা বেড়েছে। প্রতিদিন ভিড় জমাচ্ছেন ক্রেতারা। চাকরিজীবিদের হাতে বেতন বোনাস আসলে ঈদ কেনাকাটায় ভিন্নমাত্রা যোগ হবে বলে ব্যবসায়ীরা জানান।






রাজধানীর মালিবাগ মৌচাক এলাকার বিভিন্ন ফুটপাত ঘুরে দেখা যায়, ক্রেতাদের আনাগোনা এবং দরদামে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন ব্যাবসায়ীরা। ফুটপাত থেকে থ্রিপিছ কিনছেন রাজারবাগের মাহমুদা বেগম। তিনি ঢাকাটাইমসকে বলেন, ফুটপাতে তুলনামূলক দাম কম। তাই এখান থেকে কয়েকটি থ্রিপিছ কিনলাম। ফুটপাতেও কালেকশন কম থাকে না, এখানেও অনেক ভালো ভালো জিনিস পাওয়া যায়। এবার ফুটপাতে অনেক জিনিসের দাম একটু বেশি বলেও অভিযোগ করেন তিনি।






রাজধানী গুলিস্তানের ফুটপাত থেকে জুতা কিনছেন আবিদা সুলতানা। তিনি ঢাকাটাইমসকে বলেন, গুলিস্তানের ফুটপাতগুলোতে চমৎকার সব জিনিস পাওয়া যায়। তুলনামূলক কম দামেই পাওয়া যায় এই সব জিনিস। প্রায় সময় কেনাকাটা করা হয় ফুটপাত থেকে। তবে ঈদের সময় একটু বেশি কলেকশন থাকে তাই প্রায় দিনই এখানে কেনাকাটা করতে আসি।






গুলিস্তান ফুটপাতের এক ক্রেতা জহির উদ্দিন। তিনি ঢাকাটাইমসকে বলেন, দ্রব্রমূল্যের যেমন ঊর্ধ্বগতি তাতে আমাদের মত মানুষের জন্য ফুটপাতই উপযুক্ত বাজার।






যাত্রাবাড়ী থেকে কেনাকাটার জন্য গুলিস্তানে এসেছেন শারমিন আক্তার। তিনি একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। তিনি জানালেন ঈদে নিজের জন্য শাড়ি কিনেছি। এছাড়া ঈদ উপলেক্ষে আরও কেনাকাটা করবেন। প্রতিবেদকের কথা হয় তার সঙ্গে। তিনি ঢাকাটাইমসকে বলেন,  অফিসিয়াল কাজের চাপে অন্যদিন আসার সুযোগ থাকে না। তাই আজকে সুযোগ পেয়ে চলে আসলাম। সামনে হয়তো ভিড় আরো বাড়বে। তাই একটু আগেই কেনাকাটা করতে এলাম।






ঈদ কেনাকাটার খোঁজ নিতে নিউমার্কেট গিয়ে দেখা যায় ক্রেতাদের ঢল। ঈদকে সামনে রেখে রাজধানীর নিউমার্কেট এলাকার ফুটপাতে চলছে জমজমাট বিকিকিনি। ক্রেতাদের ভিড়ে পা ফেলার জায়গা নেই বললেই চলে।






মুগদা থেকে নিউমার্কেটে কেনাকাটা করার জন্য আসেন সজিব হোসেন। তার হাতভর্তি শপিং ব্যাগ। তিনি ঢাকাটাইমসকে বলেন, কাজের চাপে বের হতে পারি না। আজ হাতে তেমন কোন কাজ নেই। তাই এই সুযোগ হাতছাড়া করিনি।






গাউছিয়া মার্কেটের সামনের ফুটপাত থেকে কেনাকাটা করছিলেন সামিয়া ইসলাম। তিনি ঢাকাটাইমসকে বলেন, বড় বড় শপিং মলে দাম বেশি। একই জিনিস এখান থেকে কিনলে কিছুটা সস্তায় পাওয়া যায়। তাই এখান থেকে কিনতে এসেছি। এসব ফুটপাতে দরদাম করে জিনিস কেনার সুযোগ যেমন রয়েছে তেমনি চলছে একদামে বেচাকেনাও।






এদিকে ক্রেতাদের ভিড় বাড়তে থাকায় বিক্রেতাদের মধ্যে আনন্দ দেখা গেছে। ঈদের সময় ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে বিক্রি আরও বেড়ে যাবে বলে তারা আশা করছেন।






বায়তুল মোকাররমের সামনের রাস্তায় পাঞ্জাবি ও টুপি বিক্রি করছিলেন সাইফুল আলম। ঢাকাটাইমসকে তিনি জানালেন, আমার এখানে যেসব পাঞ্জাবি আছে সেগুলোর মান অনেক ভালো। এজন্য নিম্ন ও মধ্যআয়ের মানুষরা এখানে আসেন। বেচাকেনা ভালই চলছে। আশা করছি দুএকদিন পর বিক্রি আরও বাড়বে।






(ঢাকাটাইমস/২৫জুন/জিএম/এমআর)