logo ২৩ এপ্রিল ২০২৫
কেনাকাটার ধুম পড়েছে সবখানে
এম গোলাম মোস্তফা, ঢাকাটাইমস
২৪ জুন, ২০১৬ ২০:১২:৪৯
image



ঢাকা: ঈদ যত এগিয়ে আসছে, তত বাড়ছে কেনাকাটা। ঈদ সামনে রেখে নানা সাজে সজ্জিত রাজধানীর শপিং মল ও বিপণিবিতানগুলোতে এখন কেনাকাটার ধুম লেগেছে। ফুটপাতও এর বাইরে নয়। ক্রেতাদের পদচারণে মুখরিত হয়ে উঠেছে ফুটপাত থেকে শুরু করে বড় বড় শপিং মল।






শুক্রবার ছুটির দিনে উপচে পড়া ভিড় ছিল প্রায় সবখানে। তবে দুই দিন আগে থেকেই ঈদের বিক্রিবাট্টা জমে উঠেছে বলে জানান ব্যবসায়ীরা। তারা জানান,  ঈদ যত এগিয়ে আসছে, ততই জমে উঠছে ঈদের বাজার।






শুক্রবার বিকেলে গিয়ে দেখা যায়, রাজধানীর বসুন্ধরা সিটি শপিং মল গমগম করছে ক্রেতার সমাগমে। দোকানে দোকানে নানা বয়সী ক্রেতার ভিড়। এবারের ঈদে তরুণীদের জন্য বিশেষ আকর্ষণ বজরঙ্গি ভাইজান। এ ছাড়া বাজিরাও মাস্তানি, সারারা প্রভৃতি ভারতীয় পোশাক বাজারে টানছে তরুণীদের। বসুন্ধরা শপিং মলে এসব পোশাক বিক্রি হচ্ছে ৫ থেকে ৯০ হাজার টাকায়।






বসুন্ধরা সিটি শপিং মলে কাতানের জন্য বিখ্যাত জ্যোতি শাড়ি বিতান। এই দোকানের বিশেষ আকর্ষণ হলো ভারতীয় কাঞ্জি বুনন শাড়ি। দোকানের বিক্রয় প্রতিনিধি মিজান আহমেদ ঢাকাটাইমসকে বলেন, ১০ হাজার থেকে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকার মধ্যে কাঞ্জি বুনন শাড়ি পাওয়া যাবে। কাতানের ভেতর এবার  কাঞ্জি বুনন শাড়িই সবচেয়ে বেশি চলছে বলে জানান তিনি।






মিজান আরও বলেন, এই শাড়িটি নেটের ওপর হাতের কারুকাজে তৈরি। এ কারণে শাড়িটির প্রতি নারীদের বিশেষ আকর্ষণ। লাল, নীল ও কালো রঙে পাওয়া যাচ্ছে শাড়িটি।






ঈদকে ঘিরে মূলত স্থান পায় সারা বছরের জনপ্রিয় ফ্যাশন ট্রেন্ডগুলো। বছরের শুরু থেকেই জনপ্রিয়তা বেশি খানিকটা লম্বা ও ঘেরওয়ালা পোশাকের। এ ছাড়া পোশাকের ধরনেও এসেছে ভিন্নতা। যেমন গাউনের পাশাপাশি এখন জনপ্রিয়তার তুঙ্গে ঘের দেওয়া ও কুঁচিওয়ালা স্কার্ট। কোমরে বেল্ট আর ক্রপ টপ বা সাধারণ শার্টের সঙ্গে স্কার্ট এখন বেশ পরিচিত পোশাক।






যারা নিজেরা কামিজ বা গাউন বানিয়ে পরতে ভালোবাসেন তাদের ভিড় গজ কাপড়ের দোকানগুলোতে। নিউমার্কেট, গাউছিয়া, প্রিয়াঙ্গন, চাঁদনি চক, বসুন্ধরা সিটি শপিং মলে দেখা গেল ঈদ উপলক্ষে নানা ধরনের গজ কাপড়ের সংগ্রহ।






গাউছিয়া মার্কেটে ঈদ উপলক্ষে নিজের জন্য গজ কাপড় কিনছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শাম্মি আক্তার। তিনি ঢাকাটাইমসকে বলেন, “বাজারের তৈরি পোশাকের তুলনায় পছন্দের ডিজাইনে বানানো পোশাক পরতেই বেশি ভালো লাগে। তাই আগেই কাপড় কিনে পছন্দমতো এম্ব্রয়ডারি করিয়েছি। কিন্তু এখন এই সময়ে টেইলারদের যে ব্যস্ততা, তাতে অর্ডার নেবে কি না কিংবা ঈদের আগে পোশাক দেবে কি না চিন্তাই আছি।”






শাম্মী আরও বলেন, “বাজারে যেসব উদ্ভট নামের তৈরি পোশাক পাওয়া যায় তা দেখতে মোটেও ভালো লাগে না। এ জন্যই সেগুলো এড়িয়ে চলি। আরামদায়ক পোশাক নিজের মতো করে তৈরি করে নেওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ বলে আমি মনে করি।”






রাজধানীর নিউমার্কেট ও চাঁদনীচকে রয়েছে গজ কাপড় ও আনস্টিচ থ্রি-পিসের বিশাল সমাহার। ফ্রক, জিপসি, লেহেঙ্গা, সিনথেটিকসহ নানা ধরনের কাপড় বিক্রি হচ্ছে ৭০০ থেকে ৫ হাজার টাকার মধ্যে।






নিউমার্কেটে ঈদের জন্য কেনাকাটা করছেন আরামবাগের সিনথিয়া। ঈদের কেনাকাটা সম্পর্কে ঢাকাটাইমসকে তিনি বলেন, “ছোট ভাইয়ের জন্য শার্ট, জিন্সের প্যান্ট কিনলাম। নিজের জন্য থ্রিপিস কিনেছি, এখন একটা লেহেঙ্গা দেখছি। বাজেটের ভিতরেই আছে লেহেঙ্গার দাম, তবে একটু দেখে নিচ্ছি ভালোটার জন্য।”






সামিউল ইসলাম নামের  এক ক্রেতা অবশ্য মানসম্মত পোশাক না পাওয়ার অভিযোগ করেন। তিনি ঢাকাটাইমসকে বলেন, এখন বাজারে মনসম্মত কাপড় পাওয়া যাচ্ছে না। মানের তুলনায় বিক্রেতারা দাম নিচ্ছেন অনেক বেশি।






ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সম্পা আক্তার ঈদ কেনাকাটার বিষয়ে ঢাকাটাইমসকে বলেন, “ঈদের জন্য তিনটি পোশাক উপহার হিসেবে পেয়েছি। আজ ২টি শাড়ি ও ৩টি থ্রিপিস কিনলাম। একটি কাঞ্জি ‍বুনন শাড়ি কেনার ইচ্ছা আছে। স্যালোয়ার-কামিজের ক্ষেত্রে সুতিটাই আমি বেশি পছন্দ করি।”






রাজধানীর বিভিন্ন সড়কের ফুটপাত, নিউমার্কেট, বিপণিবিতান ও শপিং মলগুলোর সামনের খোলা জায়গার দোকানগুলোতে এখন ক্রেতার ভিড়ে পা ফেলার জায়গা নেই। কথা বলার ফুরসত নেই বিক্রেতাদের।






জিগাতলার শাহেনা বেগম নিউমার্কেটের আঙিনার দোকানগুলোতে ছেলেমেয়ের জন্য পোশাক খুঁজছেন। তিনি বলেন, “বিভিন্ন দোকানে ঘুরে দেখেছি দামে পোষায় না। তাই এখানকার দোকানগুলোতে সাধ ও সাধ্যের মধ্যে খুঁজছি।”






 






(ঢাকাটাইমস/২৪জুন/মোআ)