ঢাকা: দেশে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতিতে যাতে বিঘ্ন না ঘটে সে ব্যাপারে বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসকদের (ডিসি) সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছে সরকার। আজ বুধবার সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিবের সঙ্গে বিভাগীয় কমিশনারদের এক অনুষ্ঠানে ভিডিও কনফারেন্সে যোগ দিয়ে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব আবুল কালাম আজাদ এই নির্দেশনা দেন।
মুখ্যসচিব বলেন, এবার ঈদে নয় দিনের লম্বা ছুটিতে জেলা প্রশাসকদের সতর্ক রাখবেন। কোনো ধরনের অস্থিতিশীল পরিস্থিতি যেন সৃষ্টি না হয় সে বিষয়ে ডিসিরা যেন সজাগ থাকেন।
শবে কদরের পরদিন আগামী ৪ জুলাই সরকারি ছুটি ঘোষণা হওয়ায় আগে ও পরে শুক্র-শনি মিলিয়ে এবার টানা নয় দিনের ছুটি পাচ্ছেন সরকারি চাকরিজীবীরা।
ঈদের ছুটিতে যেকোনো ধরনের পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে সঙ্গে সঙ্গে বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসকদের জানাতে মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব। তিনি বলেন, নয় দিনের ছুটি। ছুটি যত লম্বা আপনাদের রেসপনসিবিলিটি তত বেশি।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে মুখ্যসচিবের পাশে বসে ভিডিও কনফারেন্স অংশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব সুরাইয়া বেগম বলেন, নয় দিন সরকারি ছুটিতে নিরাপত্তার বিষয়টি বড় আকারে দেখছে দরকার। তিনি বলেন, এ সময় ব্যাংকের ভল্টের নিরাপত্তা আরও জোরদার করতে হবে। ঈদের ছুটিতে মানুষ যেন জরুরি চাহিদাগুলো মেটাতে পারেন সে ব্যাপারে সবাই সতর্ক থাকবেন। নিরাপত্তার বিষয়গুলো ভালোভাবে দেখতে ডিসিদের সঙ্গে যেন কোঅর্ডিনেশন করা হয় সে নির্দেশন দেন সচিব।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে বসে ভিডিও কনফারেন্সে অর্থসচিব মাহবুব আহমেদ বিভাগীয় কমিশনারদের জানান, ব্যাংকিং বিভাগ থেকে ঈদের ছুটিতে ব্যাংকগুলোর নিরাপত্তার বিষয়ে চিঠি দেয়া হয়েছে। ঈদের ছুটিতে ব্যাংক খাতের নিরাপত্তায় বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসকদেরও সহযোগিতা চান অর্থসচিব।
প্রথমবারের মতো আট বিভাগীয় কমিশনারের সঙ্গে বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি (এপিএ) করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। মন্ত্রিসভা কক্ষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের পক্ষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম এবং আট বিভাগীয় কমিশনার বুধবার এই চুক্তিতে সই করেন।
কাজের ব্যবস্থাপনায় মন্ত্রণালয়গুলোর সঙ্গে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ২০১৫ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি প্রথমবারের মতো মন্ত্রণালগুলোর সঙ্গে এপিএ করে। এরপর মন্ত্রণালয়গুলো তাদের অধীন দপ্তর ও সংস্থার সঙ্গে এপিএ করে। এবার মাঠ প্রশাসন, অর্থাৎ বিভাগীয় কমিশনারদের সঙ্গে এপিএ করল মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি অনুযায়ী বিভাগীয় কমিশনাররা এক বছরের টার্গেট দিয়ে জানাবেন, তারা কী কী করতে চান এবং কোন কোন সূচক কোন মাত্রায় অর্জনের চেষ্টা করবেন।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ বিভাগীয় কমিশনারদের সেই লক্ষ্য অর্জনে সার্বিক সহায়তা দেবে।
চুক্তি শেষে শফিউল আলম বলেন, আগে লিগ্যাল কোনো বাইন্ডিং ছিল না। এখন যেহেতু চুক্তি করলাম পারস্পারিকভাবে দায়বদ্ধতার মধ্যে চলে এসেছি। প্রথমবারের মত মাঠ পর্যায়ের কাজকে টার্গেটের মধ্যে আনা হয়েছে।
সচিব বলেন, জনপ্রতিনিধিরা আনুষ্ঠানিকভাবে শপথ করেন। শপথ ভঙ্গ হলে তারা জনগণের কাছে দায়ী হন, আমাদের সে রকম ব্যবস্থা নেই। এখন আমরা পারস্পারিকভাবে চুক্তিবদ্ধ হয়ে নিজেদের বাইন্ড করলাম যে, উই আর কমিটেড টু পারফরম আওয়ার ডিউটিজ।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, যেসব লক্ষ্য নেয়া হয়েছে তার শতভাগ অর্জন কঠিন হলেও অসম্ভব নয়।
বিভাগীয় কমিশনারদের পক্ষে ঢাকার হেলাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, এই চুক্তির ফলে প্রশাসনিক দক্ষতা বৃদ্ধি পাবে, তথ্যপ্রযুক্তির যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত হবে। একইসঙ্গে সেবাদাতাদের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন এবং উদ্ভাবনী চর্চার মাধ্যমে মানসম্মত সেবা নিশ্চিত হবে। এপিএ বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত হবে বলেও আশা প্রকাশ করেন ঢাকার বিভাগীয় কমিশনার।
(ঢাকাটাইমস/২৯জুন/এইচআর/জেবি)