ঢাকা: বাংলাদেশের ঘরে ঘরে প্রযুক্তি পণ্যসেবা পৌঁছে দিচ্ছে ওয়ালটন। সেইসঙ্গে পৌঁছে দিচ্ছে বিশ্বমানের বিক্রয়োত্তর সেবা। বাংলাদেশে একমাত্র ওয়ালটন গ্রুপেরই রয়েছে ইলেকট্রনিক্স পণ্যের আইএসও স্ট্যান্ডার্ড বিক্রয়োত্তর সেবা কার্যক্রম। শিগগিরই চালু হচ্ছে আরও নয়টি সার্ভিস পয়েন্ট। গ্রাহকদের সুবিধার্থে সার্ভিস সেন্টারের লোকবল এ বছর ৫০ শতাংশ বাড়িয়েছে ওয়ালটন। বিক্রয়োত্তর সেবা আরও সহজ করতে চালু হতে যাচ্ছে অন লাইনে পণ্যের সার্ভিস স্ট্যাটাস জানার ব্যবস্থা।
উচ্চমানের পণ্য এবং দামে সাশ্রয়ী হওয়ার কারণে ওয়ালটন পণ্য এখন সকল শ্রেণি-পেশার মানুষের ঘরে ঘরে। এ অবস্থায় ওয়ালটন কর্তৃপক্ষ সর্বাধিক গুরুত্ব দিচ্ছে বিক্রয়োত্তর সেবাকে। ওয়ালটন প্রতিষ্ঠা করেছে আইএসও সার্টিফিকেট প্রাপ্ত ওয়ালটন সার্ভিস ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (ডব্লিউএসএমএস)। গত বছর প্রায় ১৬০০ প্রকৌশলী ও টেকনিশয়ান কাজ করতো সার্ভিস সেন্টারে। বর্তমানে সেখানে কাজ করছেন প্রায় ২৪০০ প্রকৌশলী ও টেকনিশিয়ান। নিয়মিত প্রশিক্ষণ এবং ইনসেনটিভ প্রদানের ফলে বেড়েছে তাদের কর্মদক্ষতা।
গ্রাহকদের হাতের নাগালে দ্রুত বিক্রয়োত্তর সেবা পৌঁছে দিতে প্রায় ৪৩টি জেলা শহরে ৬২ পূর্ণাঙ্গ সার্ভিস সেন্টার চালু রয়েছে। পাশাপাশি প্রায় ২৮৪টি প্লাজাতেও বিক্রয়োত্তর সেবা দেয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। শিগগিরই চালু হচ্ছে আরও নয়টি সার্ভিস সেন্টার। আরও নতুন নতুন সার্ভিস সেন্টার ও পয়েন্ট চালুর প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে। এছাড়া রয়েছে কল সেন্টার। ১৬২৬৭-এ ফোন করে সহজেই মিলছে কাঙ্খিত সেবা। কল সেন্টারে আসা সমস্যাগুলো নিষ্পত্তি এবং সেবার মান মনিটরিং করা হচ্ছে।
জানা গেছে, বাংলাদেশের ইলেকট্রনিক্স ও ইলেকট্রিক্যাল অ্যাপ্লায়েন্স খাতে একমাত্র ওয়ালটনের রয়েছে এতো বেশি সংখ্যক সার্ভিস পয়েন্ট ও আইএসও সনদপ্রাপ্ত সার্ভিস ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম। আইএসও ৯০০১:২০০৮ সনদ পেয়েছে এই সার্ভিস ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম। মূলত, অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ও যন্ত্রপাতির সমন্বয়ে সর্বোচ্চমানের বিক্রয়োত্তর সেবা দেয়ায় মিলেছে এই সনদ।
ওয়ালটন সার্ভিস ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমের প্রধান ও ওয়ালটন গ্রুপের অতিরিক্ত পরিচালক মো. নিয়ামুল হক বলেন, দরকারি সেবা পৌঁছে দিতে প্লাজা, ডিস্ট্রিবিউটর এবং কাস্টমারদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করা হচ্ছে। পণ্য বিক্রির পর এখন সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে গ্রাহক সেবাকে।
ডব্লিউএসএমএস-এর মনিটরিং বিভাগের প্রধান এবং ওয়ালটন গ্রুপের সিনিয়র উপ পরিচালক শাহ মোহাম্মদ ইমতিয়াজ বলেন, মেধাবী, দক্ষ, উচ্চ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত প্রকৌশলী ও টেকনিশিয়ানদের সমন্বয়ে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি, লেটেস্ট যন্ত্রপাতি ও সম্পূর্ণ ব্র্যান্ড নিউ স্পেয়ার পার্টস দিয়ে দ্রুত ও নিখুঁত বিক্রয়োত্তর সেবা দেয়া হচ্ছে।
জানা গেছে, কুমিল্লার গৌরিপুর, নেত্রকোনা, শরীয়তপুর, নাটোর, জয়পুরহাট, রাজবাড়ী, পটিয়া ও সুনামগঞ্জে আরো নতুন ৮টি সার্ভিস পয়েন্ট চালু হতে যাচ্ছে। তাছাড়া ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় শীঘ্রই চালু হচ্ছে একটি সেলফোন সার্ভিস পয়েন্ট। বর্তমানে রাজশাহী, সিলেট, বরিশাল, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম ও রাজধানী ঢাকার তিনটি স্থানে ওয়ালটন সেলফোনের জন্য আলাদা সার্ভিস পয়েন্ট রয়েছে।
যে সকল অঞ্চলে এখনো কোনো সার্ভিস পয়েন্ট গড়ে উঠেনি, সেখানে বিক্রয়োত্তর সেবা পৌঁছে দিতে ভ্রাম্যমান সার্ভিস সেন্টার চালু রয়েছে। ভ্রাম্যমান সেন্টারের যানবাহনটি খুচরা যন্ত্রাংশ, প্রকৌশলী, টেকনিশিয়ানসহ অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ও ইক্যুইপমেন্ট দিয়ে সুসজ্জিত করা হয়েছে। বলা চলে বাংলাদেশে বিক্রয়োত্তর সেবায় একটি নতুন যুগের সূচনা করেছে এই ভ্রাম্যমান সার্ভিস সেন্টার।
ডব্লিউএসএমএস-এর মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনা ও প্রশাসনিক বিভাগের প্রধান এসএম নাসির উদ্দিন বলেন, দ্রুত বিক্রয়োত্তর সেবা প্রদানে ওয়ালটন সার্ভিস ম্যানেজমেন্ট কিছু গুরুত্বপূর্ন উদ্যোগ ও পরিকল্পনা নিয়েছে। এরমধ্যে আছে অনলাইন টিভির মাধ্যমে টেকনিশিয়ান ও গ্রাহকদের প্রশিক্ষণ; সাভিস ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমকে শতভাগ অটোমেশনের আওতায় আনা; প্রতিনিয়ত অন লাইন প্রশিক্ষণ প্রদান এবং ভিডিও টিউটোরিয়ালের মাধ্যমেও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা।
ওয়ালটন আইটি বিভাগের ডেপুটি ডিরেক্টর মফিজুর রহমান জাকির জানান, বিক্রয়োত্তর সেবায় চালু রয়েছে ওরাকল সফটওয়্যার। এই সেবা আরো সহজ ও গতিশীল করতে সফটওয়্যারটির আপডেট ভার্সন তৈরির প্রক্রিয়া চলছে। গ্রাহক আফটার সেলস সার্ভিস চাইলে তা ওরাকল আপডেট ভার্সনে অটোমেটিক অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবে। ঘরে বসেই অন লাইনে পণ্যের সার্ভিস স্ট্যাটাস, বিল ইত্যাদি সম্পর্কে জানতে পারবেন।
উল্লেখ্য, বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হচ্ছে ওয়ালটন ব্র্যান্ডের পণ্য। সংশ্লিস্ট দেশগুলোতে বিক্রয়োত্তর সেবা দেয়ার জন্য শ’খানেক বিএসসি ও ডিপ্লোমা প্রকৌশলীর সমন্বয়ে একটি দক্ষ টিম গঠণ করা হয়েছে। তাদের প্রশিক্ষণ চলছে। এবছর ৩০০ কারিগরী শিক্ষার্থীকে ইন্টার্নশিপের সুযোগ দেয়া হবে। এছাড়া অদক্ষদের ৬ মাসব্যাপী প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ টেকনিশিয়ান এ পরিণত করার কার্যক্রমও রয়েছে ওয়ালটনের। এর বাইরে বিভিন্ন প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা তাদের ব্যবহারিক কোর্সের জন্য ওয়ালটন সার্ভিস সেন্টারের সহায়তা নিয়ে থাকেন।
(ঢাকাটাইমস/১৩জুলাই/এমআর)