logo ২০ এপ্রিল ২০২৫
‘বিএনপির জামায়াতের সঙ্গ ত্যাগ এখন সময়ের দাবি’
মহিউদ্দিন মাহী, ঢাকাটাইমস
১৭ জুলাই, ২০১৬ ১৪:০৩:২৪
image



ঢাকা: একাত্তরে স্বাধীনতাবিরোধী দল জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গ ত্যাগের পক্ষে মত দিয়েছেন বিএনপির নীতি নির্ধারণী এক নেতা। যেই মুহূর্তে দলটির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে জামায়াত ছাড়ার পরামর্শ দিচ্ছেন সমমনা বুদ্ধিজীবীরা, ঠিক সেই সময়ে এ মত দিলেন দলটির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য লে. জে. (অব.) মাহবুবুর রহমান। হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় জঙ্গিহামলা এবং শোলাকিয়া পুলিশের ওপর হামলার পরিপ্রেক্ষিতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার জাতীয় ঐক্যের ডাকের পর জামায়াত ছাড়ার বিষয়টি সামনে চলে আসে। সম্প্রতি খালেদা জিয়ার সঙ্গে বিএনপি সমমনা বুদ্ধিজীবী ও পেশাজীবীদের বৈঠকেও জামায়াতের সঙ্গ ত্যাগের প্রসঙ্গটি জোরেসোরে উঠে আসে।






এ ব্যাপারে মতামত জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই নেতা বলেন, জাতীয় ঐক্যের স্বার্থে জামায়াতকে ছেড়ে দেয়া সময়ের দাবি। ঢাকাটাইমসকে রবিবার সকালে মুঠোফোনে সাবেক এই সেনাপ্রধান বলেন, ‘এখন সময় জাতীয় ঐক্যের। জাতীয় ঐক্য গঠনের জন্য যা যা করা দরকার তাই করতে হবে।এজন্য সবাইকেই ছাড় দিতে হবে। জামায়াত যদি জাতীয় ঐক্য তৈরিতে বাধা সৃষ্টি করে, তাহলে দলটিকে অবশ্যই বাদ দিতে হবে। তারপরেও জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলতে হবে।’






গুলশান হামলার পরও জঙ্গিবাদ ঠেকাতে খালেদা জিয়া দল-মত নির্বিশেষে জাতীয় ঐক্যের আহ্বানের প্রতিক্রিয়ায় আগে তাদেরকে জামায়াতের সঙ্গ ছাড়ার শর্ত দিয়েছেন আওয়ামী লীগ নেতারা। বিএনপি সমর্থক পেশাজীবীদের কেউ কেউ স্বাধীনতাবিরোধী দলটিকে ছাড়ার পক্ষে মত দিয়েছেন। তারা এখন বিষয়টি প্রকাশ্যেই বলতে শুরু করেছেন।তবে এ নিয়ে বিএনপি এখনো মুখ খুলেনি।






শনিবার এক অনুষ্ঠানে বিএনপি সমর্থিত পেশাজীবী সংগঠনের নেতা অধ্যাপক এমাজউদ্দিন আহমেদ বিএনপিকে জামায়াতের সঙ্গ ত্যাগের বিষয়ে কথা বলেন।তিনি বলেছেন, খালেদা জিয়ার জঙ্গিবিরোধী জাতীয় ঐক্যের ডাক ফলপ্রসূ করতে জোটসঙ্গী জামায়াতে ইসলামীর ‘শুভ বুদ্ধি’ জাগ্রত হয়ে তারা বিএনপি থেকে সরে যেতে পারে।






তিনি বলেন, একটি কথা, একটি প্রশ্ন বার বার উত্থাপিত হচ্ছে যে, যতক্ষণ ২০ দলীয় জোটে জামায়াতে ইসলামী থাকবে, ততক্ষণ কোনো কোনো মহল থেকে বাধা আসতে পারে। বিএনপিমনা বুদ্ধিজীবী ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীও তাই বলেছেন।






এ ইস্যুতে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা শামসুজ্জামান দুদু ঢাকাটাইমসকে বলেছেন, ‘শর্ত দিয়ে কোনো কিছু হয় না। বিএনপি চেয়ারপারসন সন্ত্রাসবিরোধী জাতীয় ঐক্যের ডাক দিয়েছেন, এখানে জামায়াত জাতীয় ঐক্যে শামিল হবে কি না সেটি টেবিলে বসে ঠিক হতে পারে।কারণ বিএনপি চেয়ারপারসন জাতীয় ঐক্যের ডাক দিয়েছেন সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে। যারাই সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে কথা বলবেন তারাই এই ঐক্যে শামিল হবেন।’






জামায়াতকে নিষিদ্ধ করার দাবি অনেক আগের। এ দাবি ক্রমেই জোরালো হচ্ছে। মানবতাবিরোধী অপরাধীদের রায়েও জামায়াতকে ক্রিমিনাল সংগঠন হিসাবে আখ্যায়িত করা হয়েছে।সরকারের আইনমন্ত্রীসহ একাধিক মন্ত্রী একাধিকবার জামায়াত নিষিদ্ধে আইন করার পক্ষে তাদের মতামত দিয়েছে।






এর আগে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, ‘জামায়াত নিষিদ্ধে আইন সংশোধনের খসড়া চূড়ান্ত হয়ে গেছে, শিগগিরই তা মন্ত্রিসভার বৈঠকে উপস্থাপন করা হবে।’ খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলামও এ ইস্যুতে একই বক্তব্য দিয়েছেন।তিনি বলেছেন, ‘সব আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বাংলাদেশে জামায়াতে ইসলামীর রাজনীতি নিষিদ্ধ করা হবে।’






এরই মধ্যে শর্ত পূরণ না করায় হাই কোর্টের আদেশে নির্বাচন কমিশন জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বাতিল করে দিয়েছে।দলটি এখন বলতে গেলে গোপন সংগঠন হিসাবে কাজ করছেন।প্রকাশ্যে তাদের কোনো কর্মসূচি নেই।দলীয় প্রতীকে তারা কোনো নির্বাচনেও অংশ নিতে পারছেন না।






(ঢাকাটাইমস/১৭জুলাই/এমএম/এআর/ঘ.)