logo ০৫ জুলাই ২০২৫
ঘুরে আসতে পারেন অক্সবো স্কি-রিসোর্ট
হাসান মাসুম লেসথো থেকে
২৬ জুলাই, ২০১৬ ০৯:৫৮:০৩
image




দক্ষিণ আফ্রিকার পাশের একটি স্বাধীন দেশ ‘মাউনটেন কিংডম’ নামে পরিচিত লেসোথো। এর রাজধানী  মাসেরু। ঢাকা থেকে বিমানে জোহানেসবারগে এমিরেট্স, মালায়াশিয়ান, সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্সে অথবা ড্রাগন এয়ারে  আসতে পারেন। জোহানেসবারগ থেকে সাউথ আফ্রিকান এয়ারলিঙ্কে মাসেরু পৌঁছে যাবেন।



কিং মুশএসু বিমানবন্দরে নেমে মাসেরু’তে একদিন বিশ্রাম নিয়ে পরদিন ভোরে রওনা হয়ে যান লেসোথোর উত্তরের জেলা বুতাবুথির উদ্দেশ্যে। মাসেরু থেকে বুথাবুথির দূরত্ব সড়কপথে ১২২ কিলোমিটার, সময় লাগবে প্রায় দুই ঘণ্টা।



বুথাবুতি জেলা শহর থেকে যে রাস্তা দিয়ে অক্সবো যেতে হয়, সেটাকে ‘রুফ অব আফ্রিকা র্যানলি রুট’ বলা হয়। এ পথে ভ্রমণ সত্যি দর্শনীয়। বেশ কয়েকটি পর্বতময় সঙ্কীর্ণ রাস্তা পেরিয়েই অক্সবো পৌঁছানো যায়। এই রাস্তাগুলোর বেশিরভাগই সমুদ্র সমতল থেকে প্রায় দশ হাজার ফুট উপরে।



বুথাবুতি থেকে উত্তর দিকে ১৫ কিমি যাত্রা করে একটা চৌরাস্ত। সেখান থেকে পূর্বদিকে যাত্রা করে উঠে যান মালুতি পর্বতে যেটা প্রায় ১০ হাজার ২৯০ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত মটেং পাসে আপনাকে নিয়ে যাবে।



এরপর আপনি একটুখানি সমতলভূমি পাবেন যার নাম ‘মাডিমাবাটসো’- নদী উপত্যকা। এখানে ‘অক্সবো লজ’ নামে আবাসিক হোটেল যেখানে আপনি কিছুক্ষণ ব্রিশ্রাম নিতে পারেন। তারপর আর ১৫ কিমি গাড়িতে যাত্রা করলে পৌঁছে যাবেন আফ্রস্কি রিসোর্টে।  



মালুতি পর্বতমালা আরোহণ করতে হয় পাহাড়ি সর্পিল রাস্তায় গাড়ি চালিয়ে যা উঁচু পাহাড়ের গা বেয়ে ক্রমশ উঠে গেছে প্রায় দশ হাজার ফুট উচ্চতায়। এখানে মাডিমাবাটসো নদীর যে শাখাটি দেখা যাবে- সেখানে অবসরে আপনি চমৎকার রুপালি ট্রাউট মাছ ধরতে ধরতে ভুলে যেতে পারেন শহরের কোলাহল। কারণ এখানে নদীর ¯্রােত আর পাহাড়ি ঝর্ণার নির্মল শব্দ ছাড়া আর কিছুই আপনার কর্ণস্পর্শ  করবে না। ঈগল ও অন্যান্য পাখি দেখার সৌভাগ্য হবে আপনার এই অক্সবো’তে। শীতকালে অক্সবোর নদীর পানি জমে বরফ, রাস্তার বাঁকে বাঁকে দেখবেন পাহাড়ি ঝর্ণার জলধারা জমে বরফ হয়ে ঝুলে আছে এখানে-সেখানে, প্রাকৃতিক স্থাপত্যকলার অদ্ভুত সমারোহ।  



ভৌগলিক তথ্য: অক্সবো আফ্রস্কি রিসোর্ট উচ্চতা-সমুদ্র সমতল থেকে ১০৫৭১ ফুট উঁচু। স্কি-স্লোপ ১.৭ কিমি, স্কি লিফট ৩টি। জনপ্রতি টিকিট চারশ র‌্যান্ড (আড়াই হাজার টাকা), প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত স্কি করা যায়। স্ন-বোট, স্কী, বুট, হেলমেট ভাড়ায় পাওয়া যায়।



আরো আছে- পুরোপুরি কাঠ দিয়ে তৈরি গন্ডোলা রেস্তোরাঁ যেখানে কফি, কোমল পানীয়, নাস্তা, দুপুর ও রাতের খাবার।



অক্সবো নামটি এসেছে গরুর কাঁধের জোয়াল আকৃতির পর্বতমালা থেকে। ইউনাইটেড কিংডম থেকে দুই ভাই এসেছিলেন ১৯৭১ সালে লেসোথোর পর্বতমালা পর্যবেক্ষণ করতে, তারা মালুতি পর্বতমালার উপরে এই রিসোর্টের গোড়াপত্তন করেন। ১৯৭৮ সাল থেকে কস্তা ও আইরিনের দায়িত্বে পরিচালিত হচ্ছে অক্সবো লজ। খ্যাতনামা স্কি সামগ্রী নির্মাতা প্রতিষ্ঠান বারটন এখন আফ্রস্কি’র সামগ্রিক পরিকল্পনা ও পরিচালনায় নিয়োজিত আছেন। জুন, জুলাই, আগস্ট এই তিন মাস অক্সবো বেড়াতে যাওয়ার উপযুক্ত সময়। এখানে একতারা থেকে চারতারা মানের আবাসিক সুবিধা রয়েছে।



(ঢাকাটাইমস/২৬ জুলাই/প্রতিনিধি/এলএ)