ঢাকা: সাভারের হেমায়েতপুরে পরকীয়ার বলি হয়েছে তিন ভাই। মায়ের সঙ্গে এক ডাকাতকে আপত্তিকর অবস্থায় দেখে ফেলায় তাদের ভাতের সঙ্গে বিষ মিশিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় নাসরিন বেগম ও তার প্রেমিক ডাকাত কেরু মানিককে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে র্যাব গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করে।
র্যাবের একটি সূত্র জানায়, হেমায়েতপুরের প্রান্তা ডেইরি ফার্ম-২ এর কেয়ারটেকার মো. জিয়াউর রহমান তার স্ত্রী নাসরিন, দুই সন্তান জীবন, নাসির, ও ভাগিনা শাহাদৎ ওই ডেইরি ফার্মে বসবাস করত। গত ১৪ মে জিয়াউরের সন্তান ও ভাগিনা সকালে অনেক ডাকাডাকিতেও জেগে না উঠলে ফার্মের লোকজনের সহায়তায় জানালা খুলে তাদের মৃত অবস্থায় দেখতে পায়। এরপর সাভার মডেল থানার পুলিশ সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করে লাশ ময়নাতদন্তোর জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।
এ ঘটনায় সাভার থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা করা হয়।
তিন শিশুর মৃত্যুর ঘটনার রহস্য খুঁজতে ২৭ জুলাই জিয়াউর রহমান ও তার স্ত্রীকে র্যাব-৪ এর নবীনগর ক্যাম্পে ডেকে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করে র্যাব।
র্যাবের জিজ্ঞাসাবাদে নাসরিন জানান, সাভারের জয়নাবাড়ীতে জিয়াউর রহমানের পরিবার ও কেরু মানিকের পরিবার পাশাপাশি বসবাস করত। তখন তার সঙ্গে কেরু মানিকের অবৈধ সম্পর্ক গড়ে ওঠে, যা জিয়াউর রহমান জেনে যায়। তখন জিয়াউর রহমান কেরু মানিককে তাড়িয়ে দিলে কেরু মানিক মিরপুরে গিয়ে বসবাস শুরু করে। কিন্তু কেরু মানিক ও নাসরিনের অবৈধ সম্পর্ক বিদ্যমান থাকে।
জিয়াউরের অবর্তমানে সুযোগ বুঝে কেরু মানিক ডেইরি ফার্মের ওই বাসায় যেত এবং নাসরিনের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হতো। একদিন নাসরিনের বড় ছেলের চোখে তাদের অবৈধ সম্পর্ক ধরা পড়লে কেরু মানিককে তাদের বাসায় আর কোনোদিন না আসার জন্য শাসিয়ে দেয়।
হত্যাকা-ের তিন মাস আগে কেরু মানিক ও নাসরিন তার ছেলেদের ও জিয়াউর রহমানকে হত্যা করে বিয়ের করার পরিকল্পনা করে।
র্যাব আরো জানায়, গত ১৪ মে কেরু মানিক তার মেয়ের বিয়ে উপলক্ষে হেমায়েতপুরে জিয়াউরের বাসায় যায় এবং নাসরিনের কাছে একটি বিষের শিশি দেয়। পরে নিজে ভাত চেয়ে নিয়ে খায় এবং আরো ভাত নিয়ে তাতে বিষ মিশিয়ে নাসির, জীবন ও শাহাদতের রুমে গিয়ে তাদের ঘুম থেকে ডেকে তোলে।
পরের দিন ওই তিনজনকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়।
নাসরিনের এই স্বীকারোক্তির পর জিয়াউর রহমান বাদী হয়ে সাভার থানায় একটি মামলা করে। গ্রেপ্তারকৃত নাসরিন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়।
হত্যাকা-ের সঙ্গে জড়িত আসামি কেরু ডাকাতকে গত বুধবার দিবাগত রাতে সাভারের আমিনবাজার এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে র্যাব-৪। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকা-ের বিষয়ে কেরু মানিক নাসরিনের জবানবন্দির সত্যতা স্বীকার করে।
(ঢাকাটাইমস/২৮জুলাই/এএ/মোআ)