ঢাকা: বিএনপির পূর্ণাঙ্গ কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণার পর গণমাধ্যমকর্মীদের সরবরাহ করা তালিকা ও কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে রক্ষিত তালিকায় অমিল দেখা দিয়েছে। গত শনিবার মির্জা ফখরুল ৫০২ সদস্যের কমিটির নাম ঘোষণা করলেও কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে থাকা তালিকায় নাম আছে ৫০৩ জনের।
সংবাদ সম্মেলনে যে তালিকা ধরে মির্জা ফখরুল নেতাদের নাম ঘোষণা করেছেন তার ৫৫ নম্বরে মাহফুজুল ইসলামের নাম ছিল। আর কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে রক্ষিত তালিকায় এখন ওই নম্বরে দেখা যাচ্ছে কুমিল্লার নাঙ্গলকোট উপজেলার বিএনপির আহ্বায়ক মোবাশ্বের আলম ভূঁইয়ার নাম। আর এক নম্বর নিচে নেমে গেছে মাহফুজুল ইসলামের নাম।
দপ্তরের দায়িত্ব প্রাপ্ত একজন ঢাকাটাইমসকে জানিয়েছেন, যশোরের কাজী মনিরুল হুদা নামের একজন পুরনো নির্বাহী কমিটির সদস্য দল থেকে ইস্তেফা দেয়ায় তার জায়গায় মোবাশ্বের আলমকে অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে।
তবে বিএনপি ছাড়ার খবর নাকোচ করে দিয়েছেন কাজী মনিরুল হুদা। ঢাকাটাইমসকে তিনি বলেন, ‘যারা বলছে আমি দল থেকে ইস্তেফা দিয়েছি তাদের বলুন আমি কি হেটে চলে গেছি। কোথাও কোনো পদত্যাগপত্র, বা স্টেসমেন্ট দিয়েছি।’
এমন খবর প্রচারের জন্য দপ্তরের বিরুদ্ধে শীর্ষ নেতাদের কাছে অভিযোগ করার কথা জানিয়ে মনিরুল বলেন, ‘আমি বুঝি না এরা কি বিএনপি করে নাকি ব্যবসা করে।’
অভিযোগ উঠেছে, বিএনপি চেয়ারপারসনের ব্যক্তিগত একজন কর্মকর্তার নির্দেশে কমিটি ঘোষণার পর মোবাশ্বের আলম ভুঁইয়ার নাম কমিটিতে অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে। তবে কীভাবে এমনটা হলো এমন প্রশ্নে সরাসরি কথা বলতে চাননি বিএনপির দপ্তরের কেউ।
তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে দপ্তরের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট একজন ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘আপনি যা শুনেছেন তা ঠিক। কিন্তু এ নিয়ে আমাদের কিছু বলার নেই। বিস্তারিত জানতে হলে গুলশান কার্যালয়ে বা সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে কথ বলুন। এরবেশি কিছু বলতে পারবো না।’
যে মোবাশ্বেরকে নিয়ে এতকিছু, তিনি অবশ্য কেন্দ্রীয় কমিটিতে জায়গা পাবেন তা ভাবেননি কখনও। কেন্দ্রের রাজনীতিতে তার আগ্রহ ছিল না। হঠাৎ বিএনপির দপ্তরে থেকে করা টেলিফোনে জানতে পারেন তিনি কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হচ্ছেন।
ঢাকাটাইমসকে মোবাশ্বের বলেন, ‘যেদিন (শনিবার) কমিটি ঘোষণা করা হয় সেদিন দুপুরের দিকে বিএনপির দপ্তর থেকে একজন ফোন করে আমি মোবাশ্বের হোসেন না আলম লেখি তা জানতে চান। কেন- জানতে চাইলে বলা হয় আপনার কমিটিতে অন্তর্ভূক্ত করা হচ্ছে। এর বাইরে কিছু আমি জানি না। পরেও আর আমাকে কিছু জানানো হয়নি।’
কুমিল্লা বিএনপির এই নেতা বলেন,‘আমি ভাই এলাকায় রাজনীতি করি, কেন্দ্রে যেতে চাই না। আগ্রহও দেখাইনি। কিন্তু কিভাবে কেন আমার নাম দেয়া হয়েছে তা আমি বলতে পারবো না।’
এ বিষয়ে কথা বলতে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে একাধিকবার টেলিফোন করলেও তিনি ধরেননি।
জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘কমিটি বাড়ছে না কমছে জানি না। যদি এটা বাড়েও তাতে জনগণের কী। এটা আবার নিউজ করার দরকার কী।’
কাজী মনিরুল হুদার বিষয়ে গয়েশ্বর বলেন, ‘বিগত দিনে তাকে কোনো সামাজিক অনুষ্ঠানেও দেখিনি। উনি হয়তো কমিটিতে নাম দেখে এখন বলছেন আমি বিএনপি করি।’
(ঢাকাটাইমস/১১আগস্ট/বিইউ)