logo ০৪ জুলাই ২০২৫
দিল্লির রাস্তায় কাঁদছে মানবতা, দেখুন ভিডিওতে
ঢাকাটাইমস ডেস্ক
১১ আগস্ট, ২০১৬ ২৩:২০:৫৮
image



ঢাকা: নয়াদিল্লিতে মানুষের প্রতি মানুষের ভালোবাসা, প্রেম, মানবতা যে কোন পর্যায়ে গিয়ে পৌঁছেছে তার একটা নমুনা মিডিয়ার কল্যাণে জানলো বিশ্ববাসী।এ সংক্রান্ত একটি সিসিটিভি ফুটেজ ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়েছে।ঘটনাস্থল ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লির সুভাষ নগরের একটি রাস্তা।






সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যাচ্ছে, একটি দ্রুতগতির টেম্পু একজন পথচারীকে সজোরে ধাক্কা দেয়। এতে পথচারী লোকটি ছিটকে রাস্তার একপাশে পড়ে যায়। প্রচুর রক্তক্ষরণ হচ্ছিল তখন। চালক গাড়ি থেকে নেমে টেম্পুর কোনো ক্ষতি হয়েছে কী না, তা খুটিয়ে খুটিয়ে পরখ করে নিল গাড়ির চারপাশ ঘুরে ঘুরে। পরে ড্রাইভিং সিটে বসে চলে গেলেন দ্বিধাহীনভাবে। অথচ পথচারীকের কাছে গিয়ে দেখার প্রয়োজনও মনে করলেন না চালক। হায়রে মানবতা!






ফুটেজে দেখা যায়, দুর্ঘটনার কিছুক্ষণ পরেই একজন দুধওয়ালা সাইকেল চালিয়ে দুর্ঘটনাকবলিত লোকটির দিকে একনজর তাকিয়ে তার পাশ দিয়ে চলে গেল। ঐ লোকটিকে যন্ত্রণায় কাতরাতে দেখেও তার বিন্দুমাত্র ভ্রুক্ষেপ হলো না। নির্বিঘ্নে সাইকেল চালিয়ে চলে গেলেন তিনি।    






এরপরের দৃশ্যে দেখা যায়, একজন বয়স্ক লোক আহত লোকটির কয়েক গজ দূরে পড়ে থাকা মোবাইল ফোনটি নিজের পকেটে পুরে স্থান ত্যাগ করলেন। রাস্তায় একজন লোক মৃত্যুযন্ত্রণায় ছটফট করছে এই ব্যাপারটি যেন তার মনে কোনো জায়গাই পেল না। উল্টো আহত ব্যক্তির মোবাইলটি হাতিয়ে নিলেন।






দুর্ঘটনার শিকার ব্যক্তির নাম মতিবুল। বুধবার সকালে উত্তর দিল্লির সুবাস নগরে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায় তাকে। দীর্ঘ সময় কেউ তাকে সাহায্যে এগিয়ে আসেনি। 






অনেক ক্ষণ পর পুলিশ এসে মাত্র আধা কিলোমিটার দূরে একটি হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে তিনি মারা যান।ডাক্তাররা বলেছেন, অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তার মৃত্যু হয়েছে।  






রাস্তার এই সিসিটিভি ফুটেজে চমৎকারভাবে ফুটে উঠেছে ভারতের রাজধানীর নাগরিকদের মানবতার অধঃপতনের করুণ চিত্র।






এক ঘন্টার বেশি সময় রাস্তায় পড়ে ছিলেন মতিবুল। এরমধ্যে ১৪০টি গাড়ি, ৪২টি থ্রি হুইলার, ১৮১ জন মোটরসাইকেল চালক এবং ৪৫ জন পথচারী আসা-যাওয়া করেছে তার পাশ দিয়ে। কেউ তাকে উদ্ধারে এগিয়ে আসেনি শুধুমাত্র একটি পুলিশভ্যান ছাড়া।






মতিবুল চার সন্তানের বাবা। রাতের ডিউটি করে ভোর ৫টা ৪০ মিনিটে তিনি বাড়ি ফিরছিলেন। তখনই একটি তিন চাকার টেম্পু তাকে সজোরে ধাক্কা দেয়। তিনি মেরুদণ্ডে আঘাত পান এবং সিটকে পড়েন।  






পুলিশের একটি দল সকাল ৭টার দিকে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় এবং মতিবুলকে হাসপাতালে নিয়ে যায়। ততক্ষণে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে মতিবুল মারা গেছে বলে চিকিৎসকরা নিশ্চিত করেন।






মতিবুল পশ্চিমবঙ্গ থেকে দশ বছর আগে দিল্লিতে আসেন। দিনে রিকশা চালাতেন আর রাতে নৈশ প্রহরির চাকরি করতেন। তার দুই ছেলে ও দুই মেয়ে রয়েছে।






মতিবুলের পরিচিত এক দোকানদার বলেন, ‘মতিবুল এই রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন বাড়ি ফেরেন। আমার দোকানে বসে চা খান।’ 






পুলিশ টেম্পুচালক এবং মতিবুলের মোবাইল ফোন চোরকে খুঁজছে। দুজনের কাউকে এখনো শনাক্ত করা যায়নি।












(ঢাকাটাইমস/১১আগস্ট/এসআই/ এআর/ ঘ.)