logo ০৪ জুলাই ২০২৫
পরিচিত হোন গাছের সঙ্গে, মাটির সঙ্গে
জহির রায়হান, ঢাকাটাইমস
২৮ আগস্ট, ২০১৬ ২২:৪৮:২৫
image



আগস্টের শুরু থেকে চলছে বৃক্ষমেলা। মেলা এখন শেষ পর্যায়ে। প্রথম থেকেই যাবো যাবো করে যাওয়া হয় নি। শনিবার সকালে যখন ঠিক করলাম বৃক্ষ মেলায় যাবো তখন আবার শুরু হলো বৃষ্টি। না আজ বৃষ্টি হলেও যাবো। ভাগ্য মনে হয় সুপ্রসন্ন, বৃষ্টি থেমে গেল। রাজধানীর শের-ই বাংলানগরে বৃক্ষমেলায় যখন প্রবেশ করলাম ঘড়ির কাঁটাটা তখন নয়টার কাছে। গেট দিয়ে ঢুকতেই বামে দেখা গেল আমাজন লিলি পানিতে ভাসছে। জাতীয় উদ্ভিদ উদ্যান ও বলধা গার্ডেনের স্টলে এটি শোভা পাচ্ছে। তখনও প্রস্তুত হতে পারেননি বিক্রেতারা, স্টলের গাছগুলো সাজাতে ব্যস্ত তারা। অনেককে আদুল গায়েও দেখা গেল। মেলা সকাল ১০টা থেকে শুরু হওয়ার কথা। কিন্তু ক্রেতাদের তো তর সয় না।






বরিশাল নার্সারিতে এক লম্বা লিস্ট নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেল একজনকে। লিস্টের দিকে তাকিয়ে দেখলাম প্রায় ২০ রকমের গাছের নাম আছে এখানে। ফলজ গাছের সংখ্যাই বেশি দেখা গেল লিস্টে। কোথা থেকে এসেছেন জিজ্ঞাসা করতেই বললেন নরসিংদী থেকে। এতদূর থেকে এখানে গাছ কিনতে আসার কারণ কী? সাইফুর রহমান বললেন, ‘আসলে বৃক্ষমেলায় ভালো চারা পাওয়া যায়। গত বছরও মেলা থেকে চারা নিয়েছি। চারাগুলোর কোনো সমস্যা হয়নি। পিকআপ ভ্যানে করে নিয়ে যাই চারাগুলো।’






একটু সামনে এগোতেই পাখির কিচির মিচির শব্দ শোনা গেল। দেখলাম একটি গাছে কতগুলো পাখি বসে রয়েছে। গাছটি স্থায়ী। পাখির ডাক শুনে গ্রামের কথা মনে পড়ে গেল। এমন ডাক তো ঢাকায় শোনা যায় না। চারিদিকে শুধু সবুজ আর সবুজ। বৃষ্টির পানিতে চারাগুলো যেন আরও সতেজ লাগছে। জাম্বুরার গায়ে বৃষ্টির ফোঁটা এখনো শুকায়নি।






মেলা ঘুরে দেখা গেল হরেক রকমের ফুলের গাছ। বনসাই, অর্কিড ও বাসাবাড়িতে শোভাবর্ধক হিসেবে রয়েছে বিভিন্ন গাছের চারা। আরও আছে বিভিন্ন মৌসুমী ফল আম-আমড়া, কামরাঙা, জাম, জামরুল, বেদানা, সফেদা, পেঁপে, পেয়ারা, কমলা, লেবু, লটকনসহ আরও কত কী! আকারভেদে চারার দাম ১৫০ থেকে ১০০০ টাকা।






মেলার বিভিন্ন স্টলে বাসা কিংবা অফিস সাজানোর অর্ডারও দেয়া যায়। তারা আপনার মনের মতো করে সাজিয়ে দেবে।






প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত আনুষ্ঠানিক সূচি থাকলেও সকাল ৭টা থেকেই চাইলে চারা কেনা যাবে বলে জানান এক বিক্রয় প্রতিনিধি। তিনি বলেন, মেলা আগস্ট মাসে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও আমরা কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করবো যেন আমরা আগামী শুক্রবার পর্যন্ত এখানে থাকতে পারি।






‘জীবিকার জন্য গাছ, জীবনের জন্য গাছ’ প্রতিপাদ্যে নিয়ে শুরু হওয়া এ মেলায় ৭৫টি স্টল বসেছে। এর মধ্যে পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বনশিল্প উন্নয়ন করপোরেশন, বন গবেষণা ইনস্টিটিউট চট্টগ্রাম, কৃষি সসম্প্রসারণ অধিদপ্তর, বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরসহ আটটি সরকারি প্রতিষ্ঠান ব্যক্তি মালিকানাধীন ৫৭টি নার্সারি ও ১০টি নন- নার্সারি প্রতিষ্ঠানের স্টল রয়েছে।






নতুন নতুন প্রজাতির গাছের সঙ্গে পরিচিতি হওয়ার সুযোগ করে দেয় বৃক্ষমেলা। তাই আর দেরি না করে সপরিবার ঘুরে আসুন মেলায়। সন্তানদের পরিচয় করান গাছের সঙ্গে, মাটির সঙ্গে।






(ঢাকাটাইমস/২৮আগস্ট/জেআর/জেবি)