ঢাকা: কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী বাংলাদেশের কৃষিখাতের উৎপাদনশীলতা বাড়াতে অত্যাধুনিক কৃষি যন্ত্রপাতি ও প্রযুক্তি উদ্ভাবনে যৌথ বিনিয়োগে এগিয়ে আসতে চীনের প্রতি আহবান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, কৃষি উৎপাদনে চীনের অভিজ্ঞতা বাংলাদেশে খাদ্য নিরাপত্তা জোরদারের ক্ষেত্রে ইতিবাচক অবদান রাখতে পারে। তিনি পানি ব্যবস্থাপনা, রাবার ড্যাম নির্মাণ, বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ, খরা ও লবণাক্ততা সহিষ্ণু জাত উদ্ভাবনে চীনের প্রযুক্তি হস্তান্তরের ওপর গুরুত্ব দেন।
কৃষিমন্ত্রী আজ চীন প্রজাতন্ত্রের ৬৪তম গৌরবময় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ আহবান জানান। বাংলাদেশের সাম্যবাদী দল (এম.এল.) রাজধানীর একটি হোটেলে এ সভার আয়োজন করে। শিল্পমন্ত্রী দিলীপ বড়ুয়া এতে সভাপতিত্ব করেন।
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রী আবুল কালাম আজাদ, বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত লি জুন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বক্তব্য রাখেন। প্রধানমন্ত্রীর পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভী, ইংরেজি দৈনিক দ্য নিউজ টু ডে’র সম্পাদক রিয়াজ উদ্দিন আহম্মেদ, কলামিস্ট সৈয়দ আবুল মকসুদসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কেন্দ্রিয় নেতারা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) কৃষিখাতের অবদান শতকরা ২৫ ভাগ। মোট জাতীয় শ্রম শক্তির শতকরা ৪৫ ভাগ এখাতেই কাজ করছে। এ খাতের আধুনিকায়নের মাধ্যমে বাংলাদেশের কাক্সিক্ষত অর্থনৈতিক অগ্রগতি অর্জন সম্ভব। আধুনিক কৃষি প্রযুক্তি হস্তান্তরের লক্ষ্যে তিনি দু’দেশের গবেষক ও বিজ্ঞানীদের মধ্যে জ্ঞান ও অভিজ্ঞতার আদান-প্রদানের পরামর্শ দেন।
শিল্পমন্ত্রী বলেন, আশিয়ান ও সার্ক অঞ্চলের মধ্যবর্তী দেশ হিসেবে বাংলাদেশে বিনিয়োগের অপার সম্ভাবনা রয়েছে। প্রায় ১৬ কোটি জনসংখ্যার বাংলাদেশ এ অঞ্চলের বিনিয়োগ ও শিল্পায়নের তীর্থস্থানে পরিণত হচ্ছে। তিনি আঞ্চলিক উন্নয়নের সুফল কাজে লাগাতে চট্টগ্রাম-কুনমিং সড়ক ও রেল যোগাযোগের পাশাপাশি সোনাদিয়ায় গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণের ওপর গুরুত্ব দেন। তিনি শিল্পায়নের মাধ্যমে জনগণের সুষম উন্নয়ন নিশ্চিত করতে চীনের বিনিয়োগ ও প্রযুক্তিগত সহায়তা কামনা করেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, বিশ্ব মন্দার মাঝেও চীনের অব্যাহত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনের ধারা সকলের জন্য একটি অনুকরণীয় উদাহরণ। এর ফলে চীন অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে গোটা বিশ্বের নেতা হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। চীনের এ সমৃদ্ধি বিশ্ব শান্তি, সমৃদ্ধি ও উন্নয়নের পথ সুগম করেছে। চীনা কমিউনিস্ট পার্টির দুরদর্শি নেতাদের গৃহিত সমাজতান্ত্রিক বাজার অর্থনীতির ফলে এ অর্জন সম্ভব হয়েছে। তিনি বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে চীনের সাথে অংশীদারিত্ব বৃদ্ধির ওপর গুরুত্ব দেন।
চীনা রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশ ও চীনের জনগণের মধ্যে ঐতিহাসিকভাবেই অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাস্কৃতিক দিক দিয়ে গভীর সম্পর্ক বিদ্যমান। সম্প্রতি বাংলাদেশের সাথে চীনের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের বিশাল সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে। চলতি বছরের প্রথম পাঁচ মাসে গত বছরের একই সময়ের তুলনায় দু’দেশের মধ্যে বাণিজ্যের পরিমাণ শতকরা ৩০ শতাংশ বেড়ে ৪ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলারে পেঁৗঁছেছে। চীনে বাংলাদেশি পণ্যের রপ্তানি বাড়াতে বাংলাদেশকে শূন্য শুল্কে রপ্তানির সুবিধা শতকরা ৬৫ ভাগ থেকে বাড়িয়ে শতকরা ৯৭ ভাগ করার প্রক্রিয়া চলছে বলে তিনি জানান।
(ঢাকাটাইমস/২৯ সেপ্টেম্বর/এজেড/১৭.৩৫ঘ.)