ঢাকা: বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি ফ্রিজ বিক্রি হয় কোরবানির ঈদে। এ সময় ফ্রিজ বিক্রেতাদের ব্যস্ততা থাকে সবচেয়ে বেশি। এবারো ঈদকে সামনে রেখে প্রস্তুত বিক্রেতারা।
সরেজমিনে বিভিন্ন মার্কেট ও শো-রুম ঘুরে দেখা গেছে, ঈদকে সামনে রেখে দেশি-বিদেশি ব্র্যান্ডের ইলেক্ট্রনিক্স কোম্পানিগুলো ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে। বিশেষ করে সরগরম হয়ে উঠেছে দেশের প্রধান ফ্রিজের বাজার বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম মার্কেট। এসব মার্কেটে উন্নত মান ও দামে সাশ্রয়ী দেশে তৈরি ফ্রিজের দিকেই ক্রেতাদের আগ্রহ বেশি।
শো-রুমের দায়িত্বে থাকা ব্যবস্থাপকরা জানালেন, বিক্রি বাড়তে শুরু করেছে। বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দামে সাশ্রয়ী, স্বনামধন্য ব্র্যান্ড ও গুণগত দিক থেকে উচ্চমানের দিকেই ক্রেতাদের ঝোঁক বেশি। এখন আর নিম্নমানের বিদেশি পণ্যের প্রতি ক্রেতাদের আগ্রহ নেই।
এ প্রসঙ্গে ওয়ালটন কর্তৃপক্ষ ঢাকাটাইমসকে জানান, ক্রমবর্ধমান চাহিদা পূরণ ও গুণগত মান নিশ্চিত করতে নতুন কারখানা স্থাপন করা হয়েছে। এবার ফ্রিজ বিক্রির লক্ষ্যমাত্রাও দ্বিগুণ। গত বছরের মতো এবারো রেকর্ড পরিমাণ ফ্রিজ বিক্রি হবে বলে আশা করছেন তারা।
ওয়ালটন সূত্র জানায়, গুণগত উচ্চমান, পছন্দসই ডিজাইন ও কালার এবং হাতের কাছে বিক্রয়োত্তর সেবার কারণে ওয়ালটন ফ্রিজের বিক্রি বেড়েছে। আরো উন্নত প্রযুক্তিনির্ভর এবং আধুনিকায়ন করা হয়েছে ওয়ালটনের সেবা কেন্দ্রগুলো। ক্রেতারা হাতের নাগালেই পাচ্ছেন সেবা। দেশব্যাপী সেবা নেটওয়ার্ক আরো বিস্তৃত করা হয়েছে।
ওয়ালটন কর্তৃপক্ষের দাবি-সেরা মান এবং সাশ্রয়ী মূল্যের কারণে সব সময় ক্রেতা চাহিদার শীর্ষে থাকে ওয়ালটন। এবারো রেকর্ড পরিমাণ পণ্য বিক্রি হবে বলে প্রত্যাশা তাদের।
এছাড়া দেশীয় ব্র্যান্ড মার্সেল, মাইওয়ানসহ অন্যরাও ঈদকে সামনে রেখে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে।
মার্সেলের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা শামীম আল মামুন ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘ফ্রিজ বিক্রির ক্ষেত্রে ওয়ালটনের পরেই মার্সেলের অবস্থান। এরই মধ্যে মার্সেল শো-রুমগুলোকে আকর্ষণীয় ডিজাইনের ফ্রিজ দিয়ে সাজানো হয়েছে।’
ফ্রিজের প্রধান বাজার গুলিস্তান স্টেডিয়াম মার্কেটে আবাবিল ইলেকট্রনিক্সের মালিক আবুল হোসেন ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘কোরবানির ঈদেই সবচেয়ে বেশি ফ্রিজ বিক্রি হয়। এ কারণে ব্যাপক প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। শো-রুমগুলোতে আগেভাগেই ফ্রিজ আনা শুরু হয়েছে।’
রাজধানীর মুগদা বিশ্বরোডের হিটাচি ব্র্যান্ডের শো-রুমের ব্যবস্থাপক মিজানুর রহমান ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘ঈদকে ঘিরে প্রতিবছর আলাদা প্রস্তুতি থাকে। এবারো তার ব্যতিক্রম ঘটেনি।’
তিনি বলেন, ‘দেশিয় কোম্পানিগুলোর ফ্রিজের দাম হাতের নাগালে হওয়ায় ক্রেতারা ঝুঁকছেন সে দিকেই। হিটাচির ফ্রিজের দাম সর্বনিম্ন ৫০ হাজার টাকা। এ কারণে নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্তরা দেশি ব্র্যান্ডের দিকেই ঝুঁকছেন।’
মিজানুর রহমান বলেন, ‘দেশিয় কোম্পানিগুলো দ্রুত উঠে আসায় এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে বিদেশি ব্র্যান্ডগুলোয়। এ কারণে বিদেশি ব্র্যান্ডগুলো গ্যারান্টির মেয়াদ বাড়াতে বাধ্য হচ্ছে।’
স্টেডিয়াম মার্কেটের এলজি শো-রুমের ব্যবস্থাপক ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘ঈদ নিয়ে গতবারের মতো এবারো ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছি। হোম সার্ভিসের পরিধি বাড়ানো হয়েছে। রাজধানীতে চারটি সার্ভিস সেন্টার স্থাপন করা হয়েছে।’
একই মার্কেটের সিঙ্গার শো-রুমের ব্যবস্থাপক সৈয়দ জামাল আবেদিন ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘ঈদের প্রস্তুতি চলছে জোরেসোরে। তবে দামে সাশ্রয়ী হওয়ার কারণে দেশিয় ব্র্যান্ডের দিকেই মানুষ ঝুঁকছে।’
অন্যান্য ব্র্যান্ড মাইওয়ান, কনকা, ভিকন, শার্প ও হেইজসহ অনেকেই ঈদ উপলক্ষে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে।
ওয়ালটন মালিবাগ প্লাজার ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ বাতেন ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘প্রতিবছর ঈদের সময় নানা প্রস্তুতি নেয়া হয়। এবার বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা দ্বিগুণ করা হয়েছে। আশা করছি, লক্ষ্যমাত্রা পূরণ সম্ভব হবে।’
তিনি বলেন, ‘ওয়ালটন সর্বোচ্চ ১৮ মাস কিস্তির সুবিধা দিচ্ছে। নগদ কিনলে রয়েছে আকর্ষণীয় ছাড়। শুধু ঈদ নয়, বছরের প্রতিটি দিনেই ওয়ালটনের ক্রেতারা ছাড় পেয়ে থাকেন।’
(ঢাকাটাইমস/৩০ সেপ্টেম্বর/এজে/২০.১২ঘ.)