logo ০৬ মে ২০২৫
অন্ধকার কানাগলিতে জামায়াত
হাবিবুল্লাহ ফাহাদ, ঢাকাটাইমস
১২ অক্টোবর, ২০১৩ ১৫:১৮:৫১
image


ঢাকা: দলের শীর্ষস্থানীয় প্রায় সব নেতাই মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার আসামি। চারজনের বিরুদ্ধে ফাঁসির রায় হয়ে গেছে। আপিল বিভাগ রায় দেয়ায় একজনের দণ্ড কার্যকর এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র। ট্রাইব্যুনালে দলের আমিরের বিচারও শেষ পর্যায়েই। অথচ বিএনপির জোটে থেকে জামায়াতকে আন্দোলন করতে হচ্ছে নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকার নিয়ে।

 

এখানেই শেষ না, জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল করে রায় দিয়েছে হাইকোর্ট। রায়ের বিরুদ্ধে আপিল আটকে আছে আপিল বিভাগে। আবার ট্রাইব্যুনাল সন্ত্রাসী দল বলায় জামায়াত নিষিদ্ধ চেয়ে আপিল বিভাগে আবেদনও করেছে ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশন শাখা। বর্তমান সরকারের আমলেই জামায়াত নিষিদ্ধ হতে পারে, এমন আশঙ্কাও আছে দলের নেতাদের মধ্যে। কিন্তু এতসব চাপ থেকে বের হয়ে আসবে কীভাবে- জবাব নেই কারও কাছে।

 

জামায়াতের বর্তমান নেতৃত্ব যারা আছেন, তারা প্রকাশ্যে আসেন কেবল বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার জনসভায়। মধ্যম সারির নেতারাই এখন আঠারোদলীয় জোটের বৈঠকে জামায়াতকে প্রতিনিধিত্ব করছেন। দলের কেন্দ্রীয় এবং ঢাকা মহানগরীর কার্যালয় তো বটেই, জেলা এমনকি উপজেলা কার্যালয়গুলোও বন্ধ থাকে বলতে গেলে মাস জুড়ে।

 

অথচ বর্তমান সরকার আসার আগে জামায়াতের সাংগঠনিক এবং আন্দোলনের শক্তি নিয়ে সব মহলেই এক ধরনের উচ্চ ধারণা ছিল। মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার শুরু হলে দলটি কী রকম প্রতিক্রিয়া দেখায়, তা নিয়েও ছিল নানা ধরণের শঙ্কা। জামায়াত নেতারাও নানা সময়ে এই বিচার রাজপথ এবং আদালত-দুই জায়গাতেই মোকাবেলার ঘোষণা দিয়েছিলেন। কিন্তু পরে দেখা গেলো, আদালতে তারা করতে পেরেছেন কমই। কেবল নানা কৌশলে সময়ক্ষেপণ ছিল জামায়াত নেতাদের আইনজীবীর মূল চেষ্টা। আর রাজপথে আন্দোলন বলতে পুলিশের ওপর চোরাগুপ্তা আর একেবারেই সাধারণ মানুষের সম্পদের ওপর হামলা করে বিশৃঙ্খলাই জামায়াতের আন্দোলনের মূল কৌশল। এতে স্বাধীনতাবিরোধী দলটির ওপর মানুষের সহানুভূতি আসার বদলে প্রকাশ্য সমালোচনাই হয়েছে বেশি। এমনকি জামায়াতের জোট বিএনপির নেতারাও প্রকাশ্যে একাধিকবার বলেছেন, জামায়াতের আন্দোলন এবং কর্মকাণ্ডের দায় নেবেন না তারা।

 

গত দুই বছরে গঠনতন্ত্র সংশোধন নিয়ে নির্বাচন কমিশনের চিঠিকে পাত্তা দেয়নি যে দল তারা নিবন্ধন বাতিল করে হাইকোর্টের রায়ের পর রীতিমতো চিঠি দিয়ে আবেদন করে নির্বাচন কমিশনের সাথে কথা বলেছে। আপিল বিভাগের রায়ের পর নিবন্ধন নিয়ে সিদ্ধান্ত না নিতে কমিশনকে অনুনয় করে আসলেও কমিশন তাদেরকে কোনো আশার কথা বলেনি।

 

এই অবস্থায় জামায়াতের অপেক্ষা করা ছাড়া কোনো বিকল্প নেই। জানতে চাইলে দলটির সহকারী প্রচার সম্পাদক মতিউর রহমান আকন্দ ঢাকাটাইমস টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ‘জামায়াতের নিবন্ধনকে অবৈধ ঘোষণার রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে আবেদন করা হবে। এ ব্যাপারে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গেও আমাদের কথা হয়েছে। তারা বলেছেন, বিষয়টি পুরোপুরি নিষ্পত্তি হওয়ার আগ পর্যন্ত জামায়াত নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল হিসেবেই বিবেচিত হবে।’

 

নির্বাচনের প্রস্তুতির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আগে নির্দলীয় সরকার। তার পর নির্বাচন। এখন দাবি আদায়ের আন্দোলনের জন্যই প্রস্তুতি নিচ্ছি। পরে নির্বাচন নিয়ে ভাবা যাবে।’

 

জামায়াতের আইনজীবী তাজুল ইসলাম বলেন, হাইকোর্টের রায় বাতিল চেয়ে করা আমাদের আবেদন খারিজ করা হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের অবকাশ শেষে আমরা আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে আপিল করব।

 

 

(ঢাকাটাইমস/ ২০ অক্টোবর/ এইচএফ/এসআর/১৪.২৭ঘ.)