ঢাকা: গত পাঁচ বছরে নিজের সম্পদ বেড়েছে প্রায় আটগুণ। আয় বেড়েছে ১৩ গুণের বেশি। সঙ্গে ৩০ কাঠার একটি প্লটের মালিকও হয়েছেন। অন্যদিকে স্ত্রীর সম্পদও বেড়েছে সাতগুণের বেশি। সঙ্গে পূর্বাচলে মিলেছে সাড়ে সাত কাঠার প্লট। এছাড়া স্বামী-স্ত্রী দুজনেই দুটি ল্যান্ড ক্রুজার গাড়ির মালিক বনে গেছেন বিগত মহাজোট সরকারের সময়ে। এই ‘ভাগ্যবান’ দম্পতি হচ্ছেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব রুহুল আমিন হাওলাদার এবং তাঁর স্ত্রী সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য নাসরিন জাহান রতনা।
নির্বাচন কমিশনে জমা দেয়া হলফনামার তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, গত পাঁচ বছরে বেশ ফুলে ফেঁপেই উঠেছে রুহুল আমিন দম্পতির সম্পদ। ২০০৮ সালে রুহুল আমিন হাওলাদারের মোট সম্পদ ছিল দুই কোটি ১১ লাখ ৯৩ হাজার ৮৪৫ টাকা। ২০১৩ সালে এসে সম্পদের মোট পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৬ কোটি ৮৫ লাখ ১২ হাজার ৩৭ টাকা। অন্যদিকে ২০০৮ সালে স্ত্রী নাসরিন জাহানের সম্পদ ছিল ৩৬ লাখ ২৭ হাজার ৮৩৫ টাকা। ২০১৩ সালে এসে দুই কোটি ৫৯ লাখ ১৬ হাজার ৮৪৭ টাকার সম্পদের মালিক হয়েছেন তিনি। ‘বাড়ি ভাড়া ব্যবসায়ী’ রুহুল আমিন হাওলাদার ২০০৮ সালে বছরে বাড়ি ভাড়া থেকে আয় করতেন ১৩ লাখ আট হাজার ৯৩৮ টাকা। সেখানে ২০১৩ সালে এসে তা সাড়ে ১২ গুণ বেড়ে হয়েছে এক কোটি ৬২ লাখ ৬৬ হাজার টাকা। এছাড়া বছরে সংসদ সদস্য হিসেবে পারিতোষিক ও ভাতা পেয়েছেন ১৩ লাখ ৮৯ হাজার ৬২৫ টাকা।
২০০৮ সালে রুহুল আমিন হাওলাদারের হাতে নগদ টাকা ছিল ১৭ লাখ ৬৮ হাজার ৯২৮ টাকা। সেখানে ২০১৩ সালে এসে তা হয়েছে ছয় কোটি ৬৬ লাখ ২৬ হাজার ৫৯০ টাকা। আগের তুলনায় নগদ টাকা বেড়েছে প্রায় ৩৮ গুণ। এছাড়া ২০০৮ সালে স্ত্রীর নগদ টাকা ছিল ১৬ লাখ ৮৮ হাজার ১৬৮ টাকা। তবে ২০১৩ সালে স্ত্রীর নগদ টাকা কিছুটা কমে ১১ লাখ ৪২ হাজার ৬৫০টাকা হয়েছে। ২০০৮ সালের নির্বাচনের আগে কোনো বন্ড বা শেয়ারের মালিক ছিলেন না রুহুল আমিন দম্পতি। সেখানে ২০১৩ সালে এসে সাত কোটি টাকার বন্ড বা শেয়ারের মালিক হয়েছেন জাপা মহাসচিব। অন্যদিকে স্ত্রী নাসরিন জাহানের আছে দেড় কোটি টাকারও বেশি বন্ড বা শেয়ার।
পাঁচ বছর আগে নিজেদের কোনো গাড়ি ছিল না রুহুল আমিন দম্পতির। কিন্তু সম্প্রতি নির্বাচন কমিশনে দেয়া হলফনামায় দেখা গেছে দুজনের দুটি ল্যান্ড ক্রুজার গাড়িও আছে। রুহুল আমিনের নিজেরটির মূল্য ৬৭ লাখ ৯৪ হাজার ৫৩০ টাকা। স্ত্রীর গাড়িটির মূল্য ৫৯ লাখ ৪৪ হাজার ৫৩০ টাকা। এছাড়া রুহুল আমিন হাওলাদারের নিজের নাইন এম এম পিস্তল, ২২ বোর রাইফেল, দোনালা বন্দুক, ৩২ রিভলবার ও শর্ট গানও আছে। যার মূল্য এক লাখ ৯০ হাজার টাকা। এছাড়া ইলেক্ট্রনিক সামগ্রী আছে দুই লাখ টাকার। আসবাবপত্রও আছে সম পরিমাণ মূল্যের। স্ত্রীর আছে ১০০ ভরি স্বর্ণ। ইলেক্ট্রনিক ও আসবাবপত্র আছে লাখ টাকার।
অস্থাবর সম্পদের পাশাপাশি স্থাবর সম্পদও বেড়েছে গত পাঁচ বছরে। ২০০৮ সালে রুহুল আমিন হাওলাদারের নামে কৃষি জমি দেখানো হয়েছিল ৩০ কাঠা। তবে ২০১৩ সালে এসে কৃষি জমি হয়েছে ১৩২ দশমিক ৬৭ শতাংশ। অন্যদিকে পৈত্রিক সূত্রে ৩০ কাঠা জমির মালিক হয়েছেন তিনি। তার নামে গুলশানের ১২ দশমিক ৭ সাত কাঠার প্লটটি আগেও ছিল। তবে স্ত্রী নাসরিন জাহানের অতীতে কোনো প্লট না থাকলেও এবার পূর্বাচলে পেয়েছেন সাড়ে সাত কাঠার একটি প্লট। যার সরকারি মূল্য প্রায় ১৯ লাখ।
এদিকে কথা বলার জন্য জাতীয় পার্টির মহাসচিব রুহুল আমিন হাওলাদারের মুঠোফোন নম্বরে একাধিকবার ফোন করলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
(ঢাকাটাইমস/ ২২ ডিসেম্বর/ এইচএফ/ ২২.৫৬ঘ.)