logo ২২ মে ২০২৫
সুর পাল্টে তারা এখন রওশনমুখী
তানিম আহমেদ, ঢাকাটাইমস
১৬ ডিসেম্বর, ২০১৩ ০০:১৯:১৪
image

ঢাকা:কিছুদিন আগেও তারা ছিলেন এরশাদের পক্ষের লোক। এরশাদ সব কথায় তারা জি.জি..করতেন। কিন্তু দলের চেয়ারম্যান আটক হওয়ার পর এসব নেতারা সুর পাল্টেছেন। জাতীয় পার্টির সুবিধাবাদী এসব নেতারা এখন দৌড়াদৌড়ি করছেন রওশন এরশাদের বাসায়।বর্তমান সরকারের অধীনে নির্বাচনে অংশ নিতে দলের সিনিয়র প্রেসিডিয়াম সদস্য রওশন এরশাদের সঙ্গে যোগাযোগও বাড়িয়ে দিয়েছেন।


গত ৩ ডিসেম্বর জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ নির্বাচনে না যাওয়ার ঘোষণা দেন। এরপর থেকেই এরশাদের বারিধারার বাসায় দলের নেতাকর্মীদের ভিড় লক্ষ্য করা যায়। গত ১২ই ডিসেম্বর এরশাদ আটক হওয়ার পর নেতারা এখন তারা যাতায়াত শুরু করেছেন রওশন এরশাদের গুলশানের বাসায়।


এসব নেতাদের মধ্যে রয়েছেন,জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ, সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, মুজিবুল হক চুন্নু, গোলাম কিবরিয়া টিপু, তাজুল ইসলাম চৌধুরী, গোলাম হাবিব দুলাল, স্বেচ্ছাসেবক পার্টির আহ্বায়ক লিয়াকত হোসেন, যুব সংহতির সভাপতি রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, মহিলা এমপি নূরে হাসনা লিলি চৌধুরী।


এদের মধ্যে আনিসুল ইসলাম মাহমুদ,তাজুল ইসলাম চৌধুরী, লিয়াকত হোসেন এবং রওশন এরশাদসহ জাতীয় পার্টির ১৮জন প্রার্থী দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিতও হয়েছেন।


এরশাদ আটকের আগে তার বাসভবনে দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ সাংবাদিকদের বলেছিলেন- ‘আমাদের দল নির্বাচনে যাবে না। সবাই মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করবে।আমিও মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছি।’


কিন্তু জাপা চেয়ারম্যান আটকের পর কাজী ফিরোজ এখন তার সুর পাল্টে নিয়মিত রওশন এরশাদের বাসায় যাতায়াত করছেন।


নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জাতীয় পার্টির এক প্রেসিডিয়াম সদস্য বলেন, ‘আমাদের কিছু করার নেই। আমরা বাধ্য হয়ে এই নির্বাচনে অংশ নিচ্ছি।’


দলের আরেক প্রেসিডিয়াম সদস্য মুজিবুল হক চুন্নুও ওই সময় বলেছিলেন- ‘আমরা স্যারের নিদের্শ অনুযায়ী মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করবো। তিনি আমাদের দলের নেতা। কিন্তু এরশাদের অবর্তমানে তিনি এখন রওশন এরশাদের নির্দেশ মেনে চলছেন।


মুজিবুল হক চুন্নু গতকাল শনিবার সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা ম্যাডামের (রওশন এরশাদ) নির্দেশে চলবো। তিনি আমাদের যে নির্দেশ দেবেন তা আমরা মানতে বাধ্য।


শনিবার বিকালে রওশন এরশাদের গুলশানের বাসা থেকে বের হয়ে দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও দপ্তর সম্পাদক তাজুল ইসলাম চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, আমরা রওশন এরশাদের নেতৃত্বে নির্বাচনে যাচ্ছি। তবে কাজী ফিরোজ রশীদ সাংবাদিকদের বলেন,নির্বাচনে যাওয়া নিয়ে এখনো কোন সিদ্ধান্ত হয়নি।


এদিকে দলের সুবিধাবাদী এসব নেতারা মিডিয়াকে এড়িয়ে চলছেন। রবিবার দুপুরে রওশন এরশাদের বাসায় যান মুজিবুল হক চুন্নু। সাংবাদিকদের উপস্থিতি টের পেয়ে  বাসা থেকে বের হয়েই দ্রুত গাড়ি নিয়ে গুলশান এলাকা ত্যাগ করেন।


এছাড়াও রওশন এরশাদের বাসায় গত কয়েকদিন ধরে নিয়মিত বৈঠক করছেন ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ এবং জিয়া উদ্দিন আহমেদ বাবলু। তারাও সবসময় গণমাধ্যমকে এড়িয়ে চলছেন।


জাতীয় পার্টির এক নেতা ঢাকাটাইমসকে বলেন, দলের সুবিধাবাদী এইসব নেতারা সবসময় ক্ষমতার কাছাকাছি থাকতে চান।তারা এরশাদকে বাদ দিয়েও এমপি হতে চান। এসব নেতারা কখনোই দলকে ভালবাসে না। তারা মূলত পার্টিকে ধ্বংস করার ষড়যন্ত্র করছে্। তবে তারা সফল হবে না বলে মন্তব্য করেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই নেতা।


(ঢাকাটাইমস/১৬ডিসেম্বর/টিএ/জেডএ.)