logo ০১ মে ২০২৫
কোন্দল সামলাতে ভাগ হচ্ছে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ


তানিম আহমেদ, ঢাকাটাইমস
১৩ মে, ২০১৪ ১২:০৭:১৯
image


ঢাকা: কোন্দল সামাল দিতে এবার ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগকে দুই ভাগে ভাগ করা হচ্ছে। একটি কমিটি হলে নেতৃত্ব নিয়ে বিরোধ সামাল দিতে কঠিন হবে বলেই মনে করছেন দলের নেতারা। এ জন্যই আপাতত সমাধান বের করেছেন তারা। তারা বলছেন ছাত্রলীগ, যুবলীগ স্বেচ্ছাসেবক লীগসহ দলের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলোকে আগেই উত্তর-দক্ষিণে ভাগ করে কমিটি গঠন করা হয়েছে। এতে সুফল মিলেছে।

ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের কমিটির মেয়াদ শেষ হলেও দলের  নেতাদের মধ্যে বিরোধের আশঙ্কায় ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের আগে তা ঘোষণা করা হয়নি। যদিও দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল- আলম হানিফ একাধিকবার কমিটি ঘোষণার সময় জানিয়েছিলেন।

আওয়ামী লীগ নেতারা জানিয়েছেন, ঢাকা মহানগরীর দুটি কমিটির নাম হবে যথাক্রমে ঢাকা উত্তর এবং ঢাকা দক্ষিণ। আগামী মাসের যেকোনো সময় কমিটি ঘোষণা করা হবে। আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির এক সভায় এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

ওই বৈঠকে দুই কমিটির তদারকি করতে একটি সমন্বয় কমিটি গঠনেরও সিদ্ধান্ত হয়েছে। আর সে কমিটির সমন্বয়কের দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে বর্তমান ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়াকে।

তবে এই সম্পর্কে কথা বলতে নারাজ ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনামন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া। তিনি ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘আমাদের এখনও মহানগরীর থানা সম্মেলন শেষ হয়নি। শেষ হলেই আমরা নগর কমিটি নিয়ে বসব এবং সিদ্ধান্ত নিয়ে কেন্দ্রীয় কমিটিকে জানাব। কেন্দ্রীয় কমিটি পরে সে সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নিবে।’

ঢাকা মহানগরের ৪৯টি প্রশাসনিক থানা এলাকা নিয়ে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক থানা ২৬টি। থানার নি¤œস্তরে মোট ১০৩টি ইউনিট ও ১৭টি ইউনিয়ন কমিটি আছে। দলের ২৬টি সাংগঠনিক থানার কমিটি গঠনের লক্ষ্যে এখন সম্মেলন শেষের পথে। ৪৯টি থানার মধ্যে ৪১টি থানার সম্মেলন শেষ হয়েছে, যে কটির বাকি আছে সেগুলোরও প্রস্তুতি চলছে। কোতোয়ালি থানার সম্মেলনের মাধ্যমে শুরু হয়ে এই মাসেই শেষ হবে বাকি আটটি থানার সম্মেলন।  

ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘আমাদের সাংগঠনিক থানাগুলোর সম্মেলন এ মাসের মধ্যেই শেষ করা হবে। পরবর্তী সময়ে ঢাকা মহানগরীর থানা কমিটির সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের পদমর্যাদা জেলা কমিটির ন্যায় হওয়ায় এই কমিটি করবেন দলের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।’

ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্রে জানা গেছে, থানা কমিটিগুলোর কাউন্সিল শেষে গঠিত হবে মহানগর কমিটি। মহানগরের দীর্ঘদিনের নেতা মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া এবার নতুন কমিটিতে থাকবেন না বলে জানা গেছে তার নিকটজনদের কাছ থেকে। পুরো মহানগরের নেতা থাকার পর অর্ধেকের নেতা থাকা মর্যাদাপূর্ণ নয় বলেই এ সিদ্ধান্ত তার। তবে তিনি দুই কমিটির সমন্বয়ক থাকতে পারেন।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক পদে আগ্রহী জাতীয় সংসদের ঢাকা-৭ আসনের সাংসদ হাজী সেলিম। তবে মনোনয়ন না পেয়ে ‘বিদ্রোহী’ হয়ে নির্বাচন করায় তার পক্ষে এগোনো কঠিন। এ পদে মাঠে আছেন বর্তমান সাংগঠনিক সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ ও সাবেক ছাত্রনেতা আকতার হোসেন। সভাপতি হতে পারেন মহানগর আওয়ামী লীগের বর্তমান ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এম এ আজিজ।  

সভাপতি পদে এম এ আজিজের থেকে যাওয়ার মূল কারণ হিসেবে সে সূত্রটি ঢাকাটাইমসকে জানিয়েছে, এক-এগারোর পর ঢাকা মহানগরে দলের হাল ধরায় প্রধানমন্ত্রী তার ওপরই আস্থা রাখতে চান।

এই সম্পর্কে জানতে চাইলে শাহে আলম মুরাদ ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘আমি বর্তমান কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক। দল যদি ভালো মনে করে আমাকে দায়িত্ব দেয় আমি তা নিতে প্রস্তুত আছি।’

ঢাকা উত্তরের সভাপতি পদে আগ্রহী ঢাকা-১০ আসনের সাংসদ একেএম রহমতউল্লাহ, ঢাকা-১৫ আসনের সাংসদ কামাল আহমেদ মজুমদার এবং বাড্ডা থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি ওসমান গনি। এখানে সাধারণ সম্পাদক পদের জন্য আগ্রহী স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, ঢাকা-১৪ আসনের সাংসদ আসলামুল হক ও ঢাকা মহানগর ছাত্রলীগ উত্তরের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাইফুল্লাহ সাইফুল।



(ঢাকাটাইমস/ ১৩ মে/ টিএ/ জেডএ.)