logo ০১ মে ২০২৫
লঞ্চ দুর্ঘটনা: কর্তৃপক্ষের ঘুম ভাঙবে কবে?
হাবিবুল্লাহ ফাহাদ ও মহিউদ্দিন মাহী, ঢাকাটাইমস
২৬ মে, ২০১৪ ১৬:১৮:১২
image


ঢাকা: ‘ভাই বহু কষ্টে সনদ পাইছি। এইবার একটু বেশি লাগছে। কী করুম, না দিয়াও তো উপায় নাই।’ রাজধানীতে সমুদ্র পরিবহন অধিদপ্তর ভবনের নিচে দাঁড়িয়ে মুঠোফোনে কথাগুলো বলছিলেন মেরাজ মিয়া। তিনি পটুয়াখালীর এক লঞ্চ মালিকের আত্মীয়। ঢাকায় এসেছেন লঞ্চের সার্ভে সনদ (ফিটনেস সনদ) নিতে। লঞ্চে সামান্য সমস্যা আছে। কিন্তু তাতে সনদ আটকে থাকেনি। টাকা দিয়ে মোটামুটি ‘ম্যানেজ’ করে ফেলেছেন। টাকা দিয়েও ফিটনেস সনদ মেলে নাকি? এমন প্রশ্নের জবাবে পাশে দাঁড়িয়ে থাকা নুরুল ইসলাম একগাল হেসে বলেন, ‘টাকায় কি না হয় ভাই?’

তবে সমুদ্র পরিবহন অধিদপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের দাবি, টাকা দিয়ে সার্ভে সনদ পাওয়ার প্রশ্নই আসে না। মাঠ পর্যায় থেকে সার্ভেয়াররা লঞ্চের যাবতীয় দিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে যে প্রতিবেদন পাঠান তার ওপর নির্ভর করে সনদ দেওয়া হয়। প্রতিবছর সার্ভে করা হয় এবং সেই মতে সনদ দেওয়া হয়।

নৌযানের সার্ভে সনদ নিয়ে মাঠপর্যায় থেকে ওপর পর্যন্ত বিভিন্ন স্তরে ঘুষ লেনদেন হয়। অনেক সময় মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে সার্ভে না করেই প্রতিবেদন পাঠান সার্ভেয়াররা। এ নিয়ে পরবর্তী সময়ে কোনো যাচাই বাছাই হয় না। তবে কোনো লঞ্চ বা নৌযান ডুবে গেলেই তা নিয়ে তদন্ত হয়। যাতে দেখা যায়, দুর্ঘটনাকবলিত নৌযানটি বাস্তবে পুরোপুরি ফিট ছিল না বা এর আগেও একবার ডুবেছিল লঞ্চটি।

গত চার বছরে লঞ্চডুবির ঘটনায় তদন্ত কমিটি হয়েছে ৫৩টি। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো তদন্ত প্রতিবেদনই প্রকাশ করা হয়নি। এমনকি লঞ্চডুবির কারণে কোনো মালিক সাজা পেয়েছে কি না সে ব্যাপারেও কিছু জানা যায়নি। তবে সমুদ্র পরিবহন অধিদপ্তরের প্রধান পরিদর্শক শফিকুর রহমান ঢাকাটাইমসকে জানান, সর্বশেষ দুটি ঘটনা ছাড়া এখন পর্যন্ত সব তদন্ত কমিটি তদন্ত শেষ করে তাদের প্রতিবেদন মেরিন আদালতের কাছে জমা দিয়েছে। ব্যবস্থা নেওয়ার এখতিয়ার আদালতের।

সূত্র জানায়, খুব কম তদন্ত প্রতিবেদনেই লঞ্চ মালিকদের দোষী হিসেবে দেখানো হয়। এখানেও চলে লেনদেন। টাকার বিনিময়ে মূল দুর্ঘটনা চেপে যাওয়ার ঘটনাও ঘটে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে তীব্র ঝড়ের কারণে দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে চালিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু লঞ্চটিতে অতিরিক্ত যাত্রী ছিল কি না বা ফিটনেসে ত্রুটি ছিল কি না সে বিষয়টির খুব একটা গুরুত্ব দেওয়া হয় না।

তবে এসব অভিযোগ ঠিক নয় বলে দাবি করেছেন সমুদ্র পরিবহন অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী এ কে এম ফখরুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘ফিটনেস ঠিক নেই এমন কোনো নৌযানকেই সার্ভে সনদ দেওয়া হয় না। এখানে সর্বোচ্চ স্বচ্ছতা বজায় রাখা হয়। মাঝেমধ্যে মাঠপর্যায় থেকে পাঠানো প্রতিবেদনে সন্দেহ হলে পুনরায় বিষয়টি দেখার জন্য বলা হয়। কিন্তু কোনো দুর্বল লঞ্চকেই সনদ দেওয়া হয় না।’ মাঠ পর্যায়ের সার্ভেয়াররা উৎকোচের বিনিময়ে ভুল তথ্য দেনÑএমন অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘এমন কোনো অভিযোগ এখন পর্যন্ত পাইনি। পেলে ব্যবস্থা নেব।’

দায় এড়ানোর সুযোগ নেই বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষেরও (বিআইডব্লিউটিএ)। কারণ লঞ্চটি ঘাট থেকে নির্দিষ্ট সংখ্যক যাত্রী ও মালামাল নিয়ে রওনা হলো নাকি অতিরিক্ত যাত্রী বহন করলো এটি দেখার দায়িত্ব তাদের। অভিযোগ আছে, ঘাটে নিয়োজিত বিআইডব্লিউটিএর এক শ্রেণির অসাধু কর্মকর্তা ঘুষ নিয়ে ক্লিয়ারেন্স সনদ দেন। প্রতিনিয়তই এ ধরনের ঘটনা ঘটছে।

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যায় অ্যাকসিডেন্ট ইনস্টিটিউটের সাবেক পরিচালক ও পূরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক শামসুল হক ঢাকাটাইমসকে বলেন, লঞ্চ দুর্ঘটনার মূল কারণ অতিরিক্ত যাত্রীবহন এবং আবহাওয়া পূর্বাভাস না মানা। ঝড়ের সময় লঞ্চ ছাড়লেই দুর্ঘটনা ঘটে। তাই দুর্ঘটনা রোধে মালিকদের সচেতন হতে হবে। যত ভালো এবং বড় লঞ্চই হোক না কেন ঝড়ের সময় নিয়ন্ত্রণ রাখা কঠিন। তাই দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার সময় লঞ্চ ছাড়া যাবে না। এক্ষেত্রে আবহাওয়া পূর্বাভাস মানে চলতে হবে। কেউ যদি এগুলো অমান্য করে তাহলে তাকেই ধরতে হবে। এভাবে সমুদ্র পরিবহন কর্তৃপক্ষ যদি শক্ত অবস্থান নেয় তাহলে অনেক দুর্ঘটনা থেকে আমরা রেহাই পেতে পারব।  



দুর্ঘটনার ঝুঁকি নিয়েই চলতে হয়

নৌযান দুর্ঘটনার ইতিহাস নতুন নয়। গত ৩৭ বছরে এ সব দুর্ঘটনা ঘটেছে সাড়ে পাঁচ শ। এতে প্রাণ হারিয়েছেন ৪ হাজার ৪৭৮ জন। আহত হয়েছেন পাঁচ শর বেশি মানুষ। নিখোঁজ আছেন প্রায় পাঁচ শ। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ও প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে গত ১৪ বছরে। ওই সময়ে ৩০৮টি লঞ্চডুবির ঘটনা ঘটেছে। সলিল সমাধি হয়েছে প্রায় আড়াই হাজার মানুষের। একের পর এক লঞ্চডুবির ঘটনা ঘটলেও এখানে অনিয়ম ও দুর্নীতি কমছে না। কোনো দুর্ঘটনার পর সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কিছুটা সরব হলেও পরে আবার নিশ্চুপ হয়ে যায়।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন লঞ্চ মালিকদের কাছে মানুষের জীবনের চেয়ে টাকাই বড়। যে কারণে লঞ্চ চলাচলের অনুপযোগী হলেও বিভিন্ন জায়গায় টাকা-পয়সা দিয়ে ম্যানেজ করে ঠিকই ব্যবসা করে যাচ্ছেন। হয়ত সব সময় দুর্ঘটনা ঘটে না। কিন্তু যখন ঘটে তখন আর কিছু করার থাকে না।

থামছে না অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহন

সমুদ্র পরিবহন অধিদপ্তরের কার্যালয়ে ঢুকতেই চোখে পড়বে বড় একটি ব্যানার। যেখানে লেখা ‘অতিরিক্ত যাত্রী হয়ে লঞ্চে চড়বেন না।’ এই বিজ্ঞাপন দেখে সাইদুর রহমান নামে এক বেসরকারি চাকরিজীবী বলেন, ‘সমুদ্র পরিবহন অধিদপ্তরে আসেন লঞ্চ মালিক, চালকরা। এখানে তো যাত্রীরা আসেন না। তাহলে কাদের উদ্দেশে এই বিজ্ঞাপন? বিজ্ঞাপন যদি দিতেই হয় তবে লেখতে হতো ‘লঞ্চে অতিরিক্ত যাত্রী তুলবেন না।’

টিভি বিজ্ঞাপন, পত্রিকার পাতায় প্রায়ই এ ধরনের বিজ্ঞাপন চোখে পড়ে। কিন্তু এ সব বিজ্ঞাপন মেনে চলার উপায় থাকে না যাত্রীদের। বরিশালের বাসিন্দা হাসিবুল ইসলাম বলেন, ‘কী আর বলবো ভাই। কেউ কি চায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে লঞ্চে উঠতে। কিন্তু করার কিছু থাকে না। লঞ্চ কম। বাধ্য হয়েই উঠতে হয়।’

সূত্রে জানা গেছে, সিন্ডিকেটের মাধ্যমে বাই রোটেশন পদ্ধতিতে লঞ্চ চলাচলের সময় নির্ধারণ করেন মালিকরা। এটি করা হয় অতিরিক্ত লাভের জন্য। দেখা যায় দুটি লঞ্চের যাত্রী একটিতে করে নিতে পারলে জ্বালানিসহ অন্যান্য খরচ কম হয়। লাভের কথা চিন্তা করতে গিয়ে মানুষের জীবনের মূল্য তাদের কাছে খুবই তুচ্ছ হয়ে দাঁড়ায়। অথচ বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠানের একাধিক লঞ্চ ইয়ার্ডে বসিয়ে রাখা হয়। আবার যাত্রী তোলার প্রতিযোগিতা তো আছেই।

তাছাড়া ঘাট থেকে ছাড়ার সময় লঞ্চে অতিরিক্ত যাত্রী বা মালামাল নেওয়া হচ্ছে কি না তা পরীক্ষা করে দেখার কথা বিআইডব্লিউটিএর কর্মকর্তাদের। আবহাওয়া অনুকূলে আছে কি না সেটা দেখেও ঘাট  থেকে ছাড়পত্র দেওয়ার নিয়ম। অথচ অভিযোগ আছে, এ সব কর্মকর্তা পুরোপুরি দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়ার কারণে কোনো ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়াই টাকার বিনিময়ে ছাড়পত্র দিয়ে থাকেন। তা না হলে অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে লঞ্চ কখনই ঘাট ছাড়তে পারত না।  

ঘটনা বিশ্লেষণে দেখা যায়, প্রতিটি দুর্ঘটনার পরই এই তথ্য বেরিয়ে আসে যে, লঞ্চে অতিরিক্ত যাত্রী বা মালামাল ছিল। কিন্তু অতিরিক্ত যাত্রীসহ কেন লঞ্চটিকে ঘাট থেকে ছাড়পত্র দেওয়া হলো তা নিয়ে কথা বলারও কেউ থাকে না। গত ১৫ মে মেঘনা নদীতে ডুবে যাওয়া এমভি মিরাজ-৪-এর বেলায় ঘটেছে একই ধরনের ঘটনা।

সমুদ্র পরিবহন অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী এ কে এম ফখরুল ইসলাম ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘ঘটনার দিন আবহাওয়া খুব ভালো ছিল না। যে কারণে সদরঘাট থেকে লঞ্চ ছেড়ে যেতে নিষেধ করা হয়। কিন্তু এক রাজনৈতিক নেতার লঞ্চ এমভি মিরাজ-৪ ঠিকই ছেড়ে গেছে।’

এখন পর্যন্ত সাজা হয়েছে দুই মালিকের

লঞ্চডুবির পর এর জন্য প্রথমেই দোষারোপ করা হয় মালিককে। কারণ ত্রুটিপূর্ণ লঞ্চটি চলাচলের জন্য দায়ী তিনিই। মামলাতে আসামিও করা হয় মালিককে। কিন্তু এখন পর্যন্ত লঞ্চডুবির ঘটনায় কোনো মালিককে সাজা পেতে হয়েছে কি না তা কখনো প্রচার করা হয়নি। গণমাধ্যমেও এ ধরনের খবর আসে না বললেই চলে। তবে এলে বাস্তবতাও এ রকমই। মালিকদের বিরুদ্ধে মামলা হলেও নানা ফাঁকফোকর গলিয়ে ঠিকই বেরিয়ে যান তারা। তবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দাবি, দোষী সাব্যস্ত হলে মালিকদের অবশ্যই শাস্তি পেতে হয়। জানতে চাইলে ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘এখন পর্যন্ত দুই মালিককে লঞ্চডুবির ঘটনায় শাস্তি পেতে হয়েছে বলে আমার জানা আছে।’ অথচ তথ্য মতে, গত ৩৭ বছরে নৌযান দুর্ঘটনা হয়েছে সাড়ে পাঁচ শ।

নামমাত্র ক্ষতিপূরণ

লঞ্চে ডুবে নিহতদের জন্য ক্ষতিপূরণের পরিমাণ খুবই কম। এখন পর্যন্ত সরকারের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ ২০ হাজার টাকা করে নিহতের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা করা হয়। মালিকরা সরকারি তহবিলে ক্ষতিপূরণের টাকা জমা দেন। সেখান থেকেই এই ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়। তবে সম্প্রতি এমভি মিরাজ-৪ লঞ্চটি ডুবে যাওয়ার পর নৌপরিবহনমন্ত্রী নিহতের পরিবারকে ৫০ হাজার টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। পাশাপাশি স্থানীয় প্রশাসন ২০ হাজার টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেবেন বলে জানা গেছে। তবে ইতিপূর্বে এসব ক্ষতিপূরণের টাকা নিয়েও অনেক নয়ছয় হয়েছে বলে অভিযোগ আছে।

গতিরোধ করা যায়নি ‘ডি’ ক্যাটাগরির অনেক লঞ্চের

কোকোসহ ‘ডি’ ক্যাটাগরির পাঁচ শতাধিক লঞ্চকে নৌপথে চলাচলের অযোগ্য ঘোষণা করা হলেও কোনো সরকারের আমলেই এদের চলার গতি রোধ করতে পারেনি কোনো সংস্থা। ২০০৫ সালে লঞ্চের সঙ্গে মূল নকশার অমিল, লঞ্চের তলদেশ হালকা, ত্রুটিপূর্ণ ও মরচে ধরার কারণে সমুদ্র পরিবহন অধিদপ্তর কোকো নামের তিনটি লঞ্চকে চলাচলে অযোগ্য ও ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করে। কিন্তু কোকোসহ অন্য বেশ কয়েকটি লঞ্চকে এক দিনের জন্যও চলাচল বন্ধ করতে পারেনি কর্তৃপক্ষ।

‘ডি’ ক্যাটাগরির উল্লেখযোগ্য লঞ্চগুলো হচ্ছেÑএমভি কোকো-১, কোকো-২, কোকো-৩, কোকো-৪, এম ভি তরিকা-১, এম ভি তরিকা-২, পারাবত-১, পারাবত-২, মতলব-১, মতলব-২, গ্লোরী অব শ্রীনগর-২, এম ভি সালাউদ্দিন-১, সৈকত-৮, বোগদাদিয়া-৭, বোগদাদিয়া-৮, পাতারহাট-৩, পাতারহাট-৪, পায়রা-৩, এম ভি মোস্তফা, ফ্লাইং বোর্ড, টুম্পা এক্সপ্রেস, সালিমাবাদ-১, এম ভি নার্গিস, চিশতিয়া, মাছরাঙ্গা, সিনথিয়া, সাইনিং সান, রানিং সান, স্বর্ণদ্বীপ, শরীয়তপুর-২, এম এল কুইন অব মধ্যপাড়া, নাজির এক্সপ্রেস, ফাতেয়া নূর, আরিচা, সিদ্দিক খান, লোপা এক্সপ্রেস, দরবার এক্সপ্রেস, প্রিন্স অব ধাউরপাড়া, বিউটি অব বাসুদিয়া, এম ভি আসা-যাওয়া ইত্যাদি।

তবে সমুদ্র পরিবহন অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলীর দাবি, ‘ডি’ ক্যাটাগরির কোনো লঞ্চই এখন চলছে না। তিনি ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘ডি ক্যাটাগরির তালিকা হয়েছে চারদলীয় জোট সরকারের সময়। এরপর এ সব লঞ্চ ইয়ার্ডে নিয়ে কেটে ফেলা হয়েছে। এগুলো এখন আর চলাচল করছে না।’  

প্রসঙ্গত, ২০০৯ সালের ২৭ নভেম্বর নাজিরপুরে ডুবে যাওয়া এম ভি কোকো-৪ লঞ্চের যাত্রী ধারণক্ষমতা ছিল ৪৪৬ জন। কিন্তু লঞ্চটিতে আড়াই হাজার যাত্রী বহন করা হয়েছিল। ২০০৫ সালের ১৫ মে আরিচার যমুনা নদীতে ৪০০ যাত্রী নিয়ে ডুবে যাওয়া এম এল রায়পুরা লঞ্চের ধারণক্ষমতা ছিল এক শরও কম। দুর্ঘটনায় পতিত এম এল প্রিন্স অব পটুয়াখালী, চাঁনপুর, এম ভি সালাউদ্দিন, এম ভি নাসরিন লঞ্চেও ধারণক্ষমতার মাত্রাতিরিক্ত যাত্রী বোঝাই করা হয়েছিল।

মে মাসেই দুই লঞ্চডুবি

 এ বছরের চলতি মাসেই ১২ দিনের ব্যবধানে দুটি লঞ্চডুবির ঘটনা ঘটেছে। গত ৩ মে পটুয়াখালীর গলাচিপার কলাগাছিয়া নদীতে ডুবে যায় এমভি শাথিল। উদ্ধার হয় ১৭ জনের মরদেহ। এরপর গত ১৫ মে মুন্সিগঞ্জের গজারিয়ায় মেঘনা নদীতে ডুবে যায় এমভি মিরাজ-৪। এ ঘটনায় ৫৪ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। লঞ্চটিতে দুই শ যাত্রী ছিল। জীবিত উদ্ধার হয়েছে অর্ধশত আর নিখোঁজের সংখ্যাও একই। এই দুই দুর্ঘটনায় পাঁচটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। কমিটি শিগগির প্রতিবেদন জমা দেবে বলে জানা গেছে।  

(ঢাকাটাইমস/ ২৬ মে/ এমএম/ এফএইচ/ জেডএ.)