logo ৩০ এপ্রিল ২০২৫
আন্দোলন নিয়ে সন্দেহ, সিদ্ধান্ত দিবেন খালেদা
কিরণ সেখ, ঢাকাটাইমস
০৭ আগস্ট, ২০১৪ ১৯:৪৫:৫১
image


ঢাকা: রমজানে বিভিন্ন ইফতার পার্টিতে বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া ঈদের পর সরকার পতনের আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করবেন বলে জানিয়েছিলেন। ঈদ অতিবাহিত হলেও এখন পর্যন্ত কোন কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়নি। আন্দোলন কর্মসূচি নিয়ে বিএনপির শীর্ষস্থানীয় নেতারা অনেকটাই সন্দিহান রয়েছেন। এই বিষয়ে বেগম খালেদা জিয়া যে সিদ্ধান্ত দিবেন তাই কার্যকর হবে বলে জানিয়েছেন বিএনপির নীতি নির্ধারণী ফোরাম।

তবে আগামী রবিবার বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠক ও পরদিন ২০ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের পর বেগম খালেদা জিয়া আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করবেন বলে জানিয়েছেন ২০ দলীয় জোটের নীতি নির্ধারনি ফোরামের নেতারা।

তারা বলেন, দ্রুত নির্বাচনের দাবিতে চলমান সরকার বিরোধী আন্দোলনের কর্মকৌশল চূড়ান্ত করতেই এই বৈঠক ডাকা হয়েছে। বৈঠকের পর পরই সরকার বিরোধী আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। এই কর্মসূচিতে ২০ দলীয় জোট সার্বিকভাবে সহযোগিতা করবে ও আন্দোলন কর্মসূচিতে রাজপথে থাকবে।

তবে এক্ষেত্রে ভিন্ন মত পোষণ করে বিএনপির নীতি নির্ধারণী ফোরাম বলছে, সরকার বিরোধী আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে কি না সেটা একমাত্র বলতে পারবেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

এই বিষয়ে জানতে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলগীরের মুঠফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি।

আন্দোলন কর্মসূচি নিয়ে বিএনপির অবস্থান

আন্দোলন নিয়ে বিএনপির শীর্ষ নেতাদের মধ্যেও কিছুটা ক্ষোভ থাকার কথা স্বীকার করে দলের নীতি নির্ধারণী পর্যায়ের কয়েকজন নেতা ঢাকাটাইমসকে বলেছেন, আন্দোলনের নিয়ে সন্দেহ কিছুটা রয়েছেই। এছাড়াও দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ঈদের পর আন্দোলনের যে হুংকার তা বেগম খালেদা জিয়ার ঘোষণাতেই সীমাবদ্ধ রয়েছে। আন্দোলন কর্মসূচি নিয়ে বেগম জিয়া যা বলবেন তাই হবে। তাই এই বিষয়ে কথা বলতে বিএনপির অনেক শীর্ষস্থানীয় নেতারা নারাজ।

এই বিষয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আ স ম হান্নান শাহ ঢাকাটাইমসকে বলেন, সরকার বিরোধী আন্দোলন চলমান ও চলছে। পর্যায়ক্রমে আন্দোলন আরো তীব্র থেকে তীব্রতর হবে। আর সময় এখনও শেষ হয়নি। সময় হলেই আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।

একই বিষয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া ঢাকাটাইমসকে বলেন, বেগম খালেদা জিয়া বলেছিলেন ঈদের পর সরকার বিরোধী আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। কিন্তু সময় এখনও যায়নি। তবে আন্দোলন আদৌ ঘোষণা করা হবে কিনা  তা বলতে পারবেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

সরকার বিরোধী আন্দোলন প্রসঙ্গে জাতীয়তাবাদী যুবদলের সভাপতি সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল ঢাকাটাইমসকে বলেন, যুবদলকে সরকার পতনের আন্দোলনের বিষয়ে কেন্দ্রীয় কমিটি থেকে এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হয়নি। এই বিষয়ে কেন্দ্রীয় কমিটি থেকে জানানোর কোন প্রয়োজনও নেই। তবে আমরা আন্দোলনের মাঝেই আছি, আমাদের আন্দোলন চলছে। আন্দোলনের যখন সময় আসবে তখনই আন্দোলনের প্রস্তুতি নিয়ে রাজপথে নামবো।

তবে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সভাপতি আব্দুল কাদের ভুঁইয়া জুয়েল ঢাকাটাইমসকে আন্দোলন প্রসঙ্গে বলেন, আনুষ্ঠানিকভাবে ছাত্রদলকে আন্দোলনের বিষয়ে অবগত করা হয়নি এটা ঠিক। তবে এর কোনো প্রয়োজনও নেই। কারণ ছাত্রদল সরকার পতনের আন্দোলনের জন্য প্রস্তুত রয়েছে।

কর্মসূচি নিয়ে ২০ দলীয় জোটের অবস্থান

জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির সভাপতি শফিউল আলম প্রধান ঢাকাটাইমসকে বলেন, ফ্যাসিস্ট সরকারের জুলুম-নির্যাতনের হাত থেকে রক্ষা পেতে দেশবাসী উন্মুখ হয়ে আছে। তাই মূলত বেগম খালেদা জিয়া রমজান মাসে আন্দোলন কর্মসূচির কথা বলেছিলেন।

তিনি বলেন, আগামী ১০ আগস্ট বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠক ও পরদিন ২০ দলীয় জোটের বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। এই বৈঠকের মধ্যে দিয়েই পরবর্তি আন্দোলনের কর্মকৌশল নির্ধারন করা হবে। তবে বেগম খালেদা জিয়া যে কর্মসূচি ঘোষণা করবেন তাতে বিএনপির শরীক দল হিসাবে জাগপার অংশগ্রহণ সর্বোচ্চ থাকবে।

একই বিষয়ে ইসলামী ঐক্যজোটের মহাসচিব আবদুল লতিফ নেজামী ঢাকাটাইমসকে বলেন, কর্মসূচি কবে ঘোষণা করা হবে তা নির্ধারিত হবে বিএনপির স্থ্ায়ী কমিটির বৈঠক ও ২০ দলীয় জোটের বৈঠকে। তবে ২০ দলীয় জোটের সাথে কথা বলেই বেগম খালেদা জিয়া রমজান মাসে কর্মসূচি ঘোষণা দিয়েছিলেন। তাই সরকার বিরোধী আন্দোলনে জোটের পক্ষ থেকে ইসলামী ঐক্যজোটের যে ভূমিকা রাখার কথা রয়েছে আমরা সেই ভূমিকাই রাখবো।

খেলাফত মজলিসের চেয়ারম্যান মাওলানা মুহাম্মদ ইসহাক একই প্রসঙ্গে ঢাকাটাইমসকে বলেন, আগামী ১১ আগস্ট জোটের বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত খেলাফত মজলিসকে এই বিষয়ে অবগত করা হয়নি। তবে আগামী দিনে বিএনপির পক্ষ থেকে সরকার বিরোধী যে কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে সেই কর্মসূচিতেই খেলাফত মজলিসের ভূমিকা থাকবে।

(ঢাকাটাইমস/ ০৭ আগস্ট/কেএইচ/এআর)