logo ১৯ এপ্রিল ২০২৫
আন্দোলনে অংশ নিতে মুখিয়ে আছে জনগণ: নজরুল ইসলাম খান
২৪ আগস্ট, ২০১৪ ২২:৪১:৫৩
image


ঢাকা: তিনি বিএনপির স্থায়ী কমিটির অন্যতম সদস্য। ১/১১ তে দলের দুঃসময়ে হাল ধরেছিলেন শক্তহাতে। নীতি-নির্ধারণের ক্ষেত্রে এখন রাখছেন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের পর পুনরায় আওয়ামী লীগ ক্ষমতা গ্রহণ করায় বিএনপি অনেকটাই কোণঠাসা। আবার আন্দোলন শুরুর কথা বলছেন দলটির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। কেমন হবে আন্দোলন, কি করবে বিএনপি, কি লক্ষ্য এবার দলটির- এসব বিষয় নিয়ে ঢাকাটাইমসের সঙ্গে খোলামেলা আলোচনা করেন নজরুল ইসলাম খান। সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন কিরণ সেখ



 





ঢাকাটাইমস: আন্দোলন শুরুর কথা বলছে বিএনপি ঈদুল ফিতরের আগে থেকেই। বলা হয়েছিল ঈদের পর পরই কঠোর আন্দোলন। রাজপথে নেমে গণজোয়ার সৃষ্টি করবেন নেতারা। কিন্তু সেই গণজোয়ার তো আর হলো না।



 





নজরুল ইসলাম খান: ২০ দলীয় জোটের কর্মসূচি অব্যাহত রয়েছে। আর এসব কর্মসূচি নেতা-কর্মীরা সফলভাবে পালন করছে। কিন্তু আন্দোলন বলতে সবাই হরতাল ও অবরোধের কথা বোঝে, সেসবও শিগগির দেওয়া হবে।



 





ঢাকাটাইমস: রোজার সময় দেওয়া ঘোষণা অনুযায়ী আন্দোলনের কোনো কর্মসূচিই তো এখনো দেননি আপনারা।

নজরুল ইসলাম খান: সরকারবিরোধী আন্দোলন চলছে। নানা ঘটনার মধ্য দিয়ে জনগণকে সম্পৃক্ত করে বৃহত্তর আন্দোলনের ডাক দেওয়া হবে। এই বৃহত্তর আন্দোলন ডাক কবে নাগাদ দেওয়া হবে তার সিদ্ধান্ত নিবেন ২০ দলীয় জোটের নেতারা।



 





ঢাকাটাইমস: বিএনপির পুনর্গঠন নিয়ে ৫ জানুয়ারির পর অনেক কথা হয়েছে। ঢাকা মহানগরে দেওয়া হয়েছে নতুন আহ্বায়ক কমিটিও। কিন্তু এরই মধ্যে আহ্বায়ক মির্জা আব্বাস এবং সদস্য সচিব হাবিব-উন-নবী খান সোহেলের দ্বন্দ্ব সামনে চলে এসেছে। এই পরিস্থিতিতে আন্দোলনে যাওয়া আদৌ কতটা সম্ভব?



 





নজরুল ইসলাম খান: এসব দ্বন্দ্বের গুজব ছড়ানো হয়। মির্জা আব্বাস ও হাবিব-উন-নবী খান সোহেলের মধ্যে এখন কোনো বিরোধ নেই। একটা সময় হয়ত ছোটখাটো কিছু ভুল বোঝাবুঝি ছিল। সেটার সমাধান হয়ে গেছে। বিএনপির মধ্যে বিভক্তি সৃষ্টি ও বিএনপিকে দুর্বল করতে এখনো সেসব কথা ছড়ানো হচ্ছে। এর আগেও মির্জা আব্বাস ও সাদেক হোসেন খোকার মধ্যে দ্বন্দ্বের কথা ছড়ানো হয়েছিল। সেগুলোও ছিল অসত্য।



 





ঢাকাটাইমস: জেলা কমিটি পুনর্গঠনের কাজ কতদূর? সেগুলোর সবগুলো কি পুনর্গঠন হবে নাকি যে কমিটিগুলো অকার্যকর কেবল সেগুলোই পুনর্গঠিত হবে?

নজরুল ইসলাম খান: সারা দেশেই বিএনপিকে সুসংগঠিত করার কাজ শুরু  হয়েছে। এই কমিটিগুলো নতুনভাবে গঠনের জন্য সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে যেখানে যেখানে পাল্টানো দরকার, কেবল সেখানেই তা করা হবে, অন্য কোথাও নয়।



 





ঢাকাটাইমস: সরকার বলছে বিএনপি জামায়াতকে ছেড়ে এলে আলোচনা হতে পারে। বিষয়টি আপনি কীভাবে দেখছেন?

নজরুল ইসলাম খান: এটা আলোচনায় না বসতে আওয়ামী লীগের অজুহাত ছাড়া আর কিছুই নয়। তাছাড়া বিএনপি কার সঙ্গে জোটবদ্ধভাবে থাকবে সেটা নিয়ে আওয়ামী লীগের কথা বলার যুক্তি নেই। ১৯৯৬ সালে এই আওয়ামী লীগই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে জামায়াতের সঙ্গে বিএনপির বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছিল। আমরাও তো বলতে পারি আওয়ামী লীগ স্বৈরাচার এরশাদকে নিয়ে সরকার গঠন করেছে, তাই তাদের সঙ্গে আমরা কোনো আলোচনা করব না। কিন্তু আমরা তো সেই কথা বলছি না।



 





ঢাকাটাইমস: প্রধানমন্ত্রী বলেছেন ৫ জানুয়ারির আগে সংলাপে বসতে তার টেলিফোনে সাড়া দেননি বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। এখন সংলাপে বসার বিষয়ে তেমন আগ্রহ দেখাচ্ছে না ক্ষমতাসীন দল। এই অবস্থায় সমঝোতার কোনো সম্ভাবনা কি দেখতে পাচ্ছেন?



 





নজরুল ইসলাম খান: বিএনপি অনেক বড় রাজনৈতিক দল। কিন্তু সংলাপের মাধ্যমে জাতীয় নির্বাচনের দাবি শুধু বিএনপি ও জামায়াতের নয়, এই দাবি দেশের ১৭ কোটি মানুষের। কিন্তু ক্ষমতাসীনরা উস্কানিমূলক বক্তব্য দিয়ে এই দাবি থেকে সরে যাওয়ার অপচেষ্টা করছে। কারণ তারা জানে, নির্বাচন দিলে তাদের অস্তিত্ব থাকবে না।



 





ঢাকাটাইমস: ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের আগে দেশব্যাপী জ্বালাও-পোড়াও করে সমালোচিত হয়েছে বিএনপি-জামায়াত জোট। এবার আপনাদের কৌশল কী হবে?

নজরুল ইসলাম খান: গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠিত করার আন্দোলনে জ্বালাও- পোড়াও হবেই। শুধু একতরফাভাবে বিএনপিকে দোষ দিলে হবে না, এই সংস্কৃতির জন্য আওয়ামী লীগও দায়ী। তবে জনগণের কথা ভেবে বিএনপি সব সময় সহিংসতা পরিহারের চেষ্টা করেছে। আগামীতেও করবে।



 





ঢাকাটাইমস: আপনাদের কর্মসূচিতে কেন সাধারণ মানুষ অংশ নেবে?

নজরুল ইসলাম খান: জনগণ এই সরকারকে আর ক্ষমতায় দেখতে চায় না। আন্দোলনে অংশ নিতে মুখিয়ে আছে তারা। ক্ষমতাসীনরা তাদের পেশীশক্তি ব্যবহার করে জনগণকে আন্দোলনে সম্পৃক্ত হতে বাধা দিচ্ছে। কিন্তু এতে কাজ হবে না।



 





ঢাকাটাইমস: সরকার যদি মধ্যবর্তী নির্বাচন না দেয় এবং আপনাদের আন্দোলনও যদি সফল না হয় তবে কি বিএনপি ৫ বছর পর এই সরকারের অধীনেই নির্বাচনে যাবে?

নজরুল ইসলাম খান: বর্তমান সরকার জনগণের ভোটে নির্বাচিত সরকার নয়। যারা জনগণের সমর্থন নিয়ে ক্ষমতায় আসেনি তাদের ক্ষমতায় থাকারও অধিকার নেই। তাদের অধীনে বিএনপি নির্বাচনে যাবে কি না সেটা জনগণ নির্ধারণ করবে।



 





(ঢাকাটাইমস/ ২৪ আগস্ট/কেএইচ/ এআর/ ঘ.)