logo ১৯ এপ্রিল ২০২৫
আন্দোলনের জন্য প্রস্তুত সিলেট : কয়েস লোদী
২৬ জুলাই, ২০১৪ ১৪:৪২:৪৪
image


রেজাউল হাসান কয়েস লোদী। সিলেট সিটি করপোরেশনের ৪নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও প্যানেল মেয়র (১ম)। তিনি মহানগর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদকও। সাবেক অর্থ ও পরিকল্পনা মন্ত্রী প্রয়াত এম.সাইফুর রহমানের অন্যতম আস্থাভাজন ও পরিচ্ছন্ন রাজনীতিবিদ হিসেবেও নগরজুড়ে খ্যাতি তাঁর। সদা হাস্যোজ্জল এই জনপ্রতিনিধি কয়েস লোদী নামেই পরিচিত নগরবাসীর কাছে। সাম্প্রতিক সময়ের সিলেটের রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও নগরীর বিভিন্ন উন্নয়ন কার্যক্রম নিয়ে খোলামেলা কথা বলেছেন ঢাকাটাইমস টোয়েন্টিফোর ডটকমের সাথে। বিস্তারিত জানাচ্ছেন আমাদের সিলেট প্রতিনিধি সাইফুর তালুকদার।

ঢাকাটাইমস: বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ঈদের পরে চূড়ান্ত অন্দোলনের ঘোষণা দিয়েছেন। এক্ষেত্রে সিলেট বিএনপি কতটুকু প্রস্তুত?

 কয়েস লোদী: আন্দোলনের জন্য আমরা সব সময় প্রস্তুত আছি। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ডাকে যে কোন আন্দোলন কর্মসূচি পালন করতে সিলেট মহানগর বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের সর্বস্তরের নেতাকর্মীসহ সাধারণ মানুষ প্রস্তুত রয়েছে। বিশেষ ভাবে কোন প্রস্তুতি নেওয়ার প্রয়োজন নেই। তবে নেত্রীর এই ঘোষণার মধ্য দিয়ে সিলেটের নেতাকর্মীরা আরো উজ্জীবিত হবে। সাধারণ নেতাকর্মীদের মাঝে এরইমধ্যে প্রাণচাঞ্চল্য ফিসে এসেছে। তারা নব উদ্যেমে মাঠে কাজ করছে।

ঢাকাটাইমস: বিএনপির সিনিয়ির ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান লন্ডন থেকে নেতাকর্মীদের কাছে ঈদ কার্ড পাঠাচ্ছেন। তিনি দেশের বাইরে বসে আন্দোলনের রোডম্যাপ তৈরি করেছেন। আপনাদের কাছে সে রকম কোন নির্দেশনা আছে কি?

কয়েস লোদী: প্রত্যেকটি মহানগর বিএনপির সভাপতি, সিনিয়র সহ-সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, যুগ্ন-সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদকদের নামে ঈদ কার্ড আসার কথা। কিন্তু এখনও হাতে এসে পৌঁছেনি। আশা করি দুই এক দিনের মধ্যে পৌঁছে যাবে। তবে ঈদের পর আন্দোলন প্রসঙ্গে আমাদের কাছে দলের সর্বোচ্চ পর্যায়ের একটি নির্দেশনা রয়েছে। আমরা সে লক্ষেই কাজ করছি।

ঢাকাটাইমস: বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ও সিলেট জেলা সভাপতি এম. ইলিয়াস আলী নিখোঁজ ইস্যু দিন দিন চাপা পড়ে যাচ্ছে। সিলেট বিএনপিও ভুলতে বসেছে তাকে। বিষয়টি আপনি কিভাবে দেখছেন?

কয়েস লোদী: ইলিয়াস আলী সিলেট বিএনপির অবিচ্ছেদ্য অংশ। অন্দোলন অব্যাহত আছে। আমাদের বিশ্বাস ইলিয়াস আলী ও চৌধুরী আলমের মতো নেতাদেরকে সরকার গুম নামক কারাগারে বন্দী করে রেখেছে। কঠোর আন্দোলনের মাধ্যমে ইলিয়াস আলীসহ গুম হওয়া সকল নেতাকর্মীদের উদ্ধার করা হবে। দেশে জগণের সরকার প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর প্রত্যেকটি গুম ও খুনের বিচার করা হবে ইনশাআল্লাহ।

ঢাকাটাইমস: সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। তিনি নগর বিএনপির সাবেক সভাপতি ছিলেন। বর্তমানে কৃষক দলের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য। সিটি করপোরেশন পরিচালনা এবং তার দলীয় কর্মকা-ে অংশগ্রহণকে আপনি কিভাবে দেখছেন?

কয়েস লোদী : প্রশ্নটি অত্যন্ত জটিল ও গুরুত্বপূর্ণ। মেয়র হিসেবে নগর ভবনের দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি হয়তো চেষ্টা করছেন দলীয় কর্মকা-ে অংশগ্রহণ করার কিন্তু সেভাবে পারছেন না। ১৮ দলীয় জোট ও ধর্মপ্রাণ আলেম উলামাদের অক্লান্ত পরিশ্রমে তিনি মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন। কিন্তু মেয়রের কাছে দল ও জোটের প্রত্যশা এবং প্রাপ্তির মধ্যে বিস্তর ফারাক রয়েছে। এজন্য দলের তৃণমূল নেতাকর্মীরা কিছুটা হতাশ। আমি আশা করি মেয়র দলীয় কর্মকা-ে সক্রিয় হলে হতাশা দূর হবে। আর করপোরেশন চালাতে গিয়ে তিনি ব্যক্তিগত পছন্দ অপছন্দকে বেশি প্রাধান্য দিচ্ছেন। আমার বিরুদ্ধেও নাকি তিনি করপোরেশনে অনাস্তা প্রস্তাব এনেছেন কিন্তু এখন পর্যন্ত এর কোন ভিত্তি পাচ্ছি না।

ঢাকাটাইমস: আপনার উপর অনাস্তা প্রস্তাব নিয়ে দলের তৃণমূল নেতাকর্মী ও আপনার নিজ ওয়ার্ডবাসীর মধ্যে যে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে তা কি আগামী আন্দোলনে প্রভাব ফেলবে?

কয়েস লোদী: দেখেন আরিফুল হক চৌধুরী সিটি মেয়র আর দলের জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য। সিলেটে আন্দোলন হবে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নির্দেশনা অনুযায়ী। আর এতে প্রত্যেকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে ভূমিকা রাখবেন। এজন্য আমার মনে হয় এতে প্রভাব পড়বে না। আমি পত্রিকায় দেখেছি গত ১০ জুন আমার বিরুদ্ধে করপোরেশনে অনাস্থা প্রস্তাব আনা হয়েছে। কিন্তু আজ পর্যন্ত এর কোন রেজুলেশন আমি পাইনি। আর এই অনাস্থা প্রস্তাব যে কেতটুকু সত্য তাও আমার কাছে পরিষ্কার নয়। তবে পত্রিকায় দেখেছি মেয়র অনাস্থা এনেছেন।

ঢাকা টাইমস : আপনার বিরুদ্ধে কেন অনাস্থা অনা হলো?

কয়েস লোদী: দেখুন বিষয়টি আমার কাছে পরিষ্কার নয়। পত্রিকার মাধ্যমে জানলাম প্যানেল মেয়র হিসেবে আমার ওপর অনাস্থা আনা হয়েছে। যেখানে আমি এক মুহূর্তের জন্যও মেয়রের দ্বায়িত্ব পালন করিনি সেখানে অনাস্থা প্রস্তার অনার কোন যুক্তিকতা নেই। সিটি কপোরেশনের আইনেও এটি নেই। মেয়র যে কেন এটি করছেন তিনিই ভাল জানেন।

ঢাকা টাইমস : নেতাকর্মীদের অভিযোগ রয়েছে, মেয়র দলীয় কর্মসূচিতে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন না। আপনি কী মনে করেন?

কয়েস লোদী: দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ডাকে ঈদের পর সরকার বিরোধী আন্দোলন হবে। মেয়র এবং দলের নেতা হিসেবে আরিফুল হক চৌধুরীর দ্বায়িত্ব দলীয় সকল কর্মসূচীতে অংশগ্রহণ করা। আর মেয়রের ভূমিকা নিয়ে দল ও জোটে ক্ষোভ থাকলেও আগামী আন্দোলন সংগ্রামে বলিষ্ট ভূমিকা রাখলে সেই ক্ষোভ আর থাকবে না।

ঢাকাটাইমস : শোনা যাচ্ছে আগামীতে আপনি মেয়র পদে নিবাচন করবেন। সে প্রসঙ্গে কিছু বলুন।

কয়েস লোদী: দেখুন নির্বাচনের এখনো অনেক বাকি। দীর্ঘ দিন থেকে আমার এলাকার পক্ষে কর্পোরেশনে প্রতিনিধিত্ব করছি। এই নগরীর প্রতিটি মানুষের সাথে আমার আত্মার সম্পর্ক রয়েছে। তাই নগরবাসী যদি চায় আমি নির্বাচন করতেও পারি। সব কিছু নির্ভর করবে পরিবেশ পরিস্থিতি আর দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সিদ্ধান্তের উপর।

ঢাকা টাইমস : নগরবাসী ও দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে কিছু বলবেন কী?

কয়েস লোদী : ঈদের পরে দেশনেত্রীর ডাকে সরকার পতনের চূড়ান্ত আন্দোলন শুরু হবে। তাই এই আন্দোলনে সক্রিয় অংশগ্রহনের জন্য বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের প্রত্যেক নেতাকর্মীদের প্রতি অমার অহ্বান রইল। আর দীর্ঘ একমাস সিয়াম সাধনার পর আমাদের সামনে পবিত্র ঈদুল ফিতর হাজির। তাই আসুন আমরা সবাই ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নেই। ঢাকাটাইমসের মাধ্যমে নগরবাসীকে জানাই অগ্রিম ঈদের শুভেচ্ছা।

ঢাকা টাইমস : সময় দেয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।

ঢাকা টাইমস: আপনাকেও ধন্যবাদ।