তিনি সিলেট-২ (বালাগঞ্জ, বিশ্বনাথ ও ওসমানীনগর) আসনে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য। জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাংগঠনিক সম্পাদক পদেও দায়িত্ব পালন করেছন ইয়াহ্ইয়া চৌধুরী। মুখোমুখি হয়েছিলেন ঢাকাটাইমস টোয়েন্টিফোর ডটকমের। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন হাবিবুল্লাহ ফাহাদ
আপনি কেন জাতীয় পার্টির রাজনীতি করেন?
মানুষ রাজনীতি করে জনগণের কল্যাণ ও উন্নয়নের জন্য। কিন্তু আমাদের দেশের রাজনীতির প্রধান দুটি দলের সঙ্গে যারা আছেন তাদের মধ্যে এই বিষয়টি চর্চা কম। একমাত্র জাতীয় পার্টিই উন্নয়নের রাজনীতিতে বিশ্বাস করে। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে দেশে যত উন্নয়ন হয়েছে তার অর্ধেকের বেশি হয়েছে সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের সময়। তাই একজন আদর্শিক রাজনীতিবিদ হিসেবে জাতীয় পার্টিকেই বেছে নিয়েছি।
কিন্তু জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের বক্তৃতা-বিবৃতি নিয়ে বিতর্কের শেষ নেই।
এটা ঠিক নয়। জাতীয় পার্টি গণতান্ত্রিক চর্চাটা ধরে রেখেছে। তাই সবাই তাঁর মত প্রকাশ করতে পারে। দলের চেয়ারম্যান যেটা ভাল মনে করেন সেটা বলেন। তবে এ ব্যাপারে দলের নেতাদের মতামতের ওপর ভিত্তি করে পরবর্তীতে তিনি সিদ্ধান্ত নেন। এনিয়ে বিতর্কের কিছু নেই।
হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ কদিন আগে বললেন তাঁকে জোর করে নির্বাচনে নেয়া হয়েছে।
নির্বাচনে যাওয়া নিয়ে দলের মতো দুটি পক্ষ তৈরি হয়েছিল। কিন্তু সংখ্যাগরিষ্ঠ মত ছিল নির্বাচনের পক্ষে। তাই জাতীয় পার্টি নির্বাচনে গিয়েছে। এতে দলের চেয়ারম্যানের অনুমতিও ছিল। এনিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বের কিছু নেই।
জাতীয় পার্টির ভবিষ্যৎ কী?
জাতীয় পার্টির ভবিষ্যৎ মানুষের হৃদয়ে। আগের চেয়ে এখন দলের সাংগঠনিক শক্তি বেড়েছে। অপ্রিয় হলেও সত্য যে, বিগত সময়ে জাতীয় পার্টির সাংগঠনিকভাবে অনেক দুর্বল হয়ে পড়েছিল। অতীতে যারা দল ছেড়ে গিয়েছিলেন, এখন নিজেদের ভুল বুঝতে পেরে ফিরে আসছেন। তাই ভবিষ্যতে জাতীয় পার্টি আরও এগিয়ে যাবে বলে স্বপ্ন দেখি।
সরকার ও বিরোধীদল দুটোতেই জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্যরা আছেন। এই পরিস্থিতিতে সংসদ বিরোধীদলের ভূমিকা পালন কতটুকু সম্ভব?
সরকার ও বিরোধীদলে একই দলের সাংসদের উপস্থিতি দেশের সরকার ব্যবস্থার জন্য নতুন একটি ধারণা। এটি উন্নত বিশ্বের অনেক দেশেই আছে। সরকারের সমালোচনার প্রয়োজন হলে সমালোচনা করবো। আবার সহযোগিতার দরকার হলে তা করবো। এখানে সরকারে থাকলে যে সমালোচনা করা যাবে না, এটা আমরা মনে করি না।
অতীতের সংসদ বয়কটের সংস্কৃতি এখন নেই। যখন সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নিয়েছি, তখন বলিনি যে সংসদ বয়কট করবো। তাই যা কিছু বলার সংসদে দাঁড়িয়েই বলতে হবে। জাতীয় পার্টি এই কাজটিই করবে।
বিএনপি বলছে সরকারকে মধ্যবর্তী নির্বাচন দিতে বাধ্য করা হবে। আপনি কী মনে করেন?
বিএনপির এই দাবি অযৌক্তিক। ধরুণ আবার নির্বাচন হলো এবং বিএনপি সরকার গঠন করলো। কিন্তু তখন যদি আওয়ামী লীগ আবার মধ্যবর্তী নির্বাচনের দাবি তোলে তখন কি এটা মেনে নেয়া যাবে? এভাবে চলতে থাকলে তো আর কোনো সরকারই পাঁচ বছর ক্ষমতায় থাকতে পারবে না। বিএনপিকে তো নির্বাচনে আসতে বলা হয়েছিল। তারা নিজেদের ভুলের কারণে পস্তাচ্ছে। এই দায় তো অন্য কেউ নেবে না।
সংসদে তরুণ সাংসদের ভূমিকা কী হওয়া উচিত?
তরুণরা দেশের যেই পর্যায়েই কাজ করুক না কেন, তারা দেশের মর্যাদাকে উঁচু করতে চায়, উন্নয়ন চায়। তরুণ সাংসদদের মধ্যেও এ বিষয়টি প্রবল। তারাও চান দেশের উন্নয়ন, বিশ্বের বুকে দেশের মর্যাদাকে উঁচু করতে। আসলে রাজনীতির যে দুর্বৃত্তায়নে কথা বলা হয়, এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে তরুণদেরই সক্রিয় ভূমিকা রাখতে হবে। আমরা যারা এই প্রজন্মের তরুণরা রয়েছি, আমাদের হাত ধরেই এ সাফল্য আসবে।
আপনার নির্বাচনী এলাকার উন্নয়নে কী পরিকল্পনা আছে?
যোগাযোগ ব্যবস্থা, শিক্ষা ব্যবস্থার দিকে বিশেষ নজর দেব। কারণ, যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন হলে ব্যবসা-বাণিজ্য, অবকাঠামোগত সব ধরনের উন্নয়ন হবে। আর জাতিকে শিক্ষিত করে তোলা গেলে তাদের দিয়ে উন্নত দেশ গড়ে তোলা সম্ভব। আমি মনে করি এই দুটি খাতে উন্নয়ন করা গেলে অন্য দিকেও ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।
অতীতের সাংসদের চেয়ে আপনি ভাল কিছু করতে পারবেন বলে মনে করেন?
অবশ্যই আমি আশাবাদী ও আত্মবিশ্বাসী। বিগত সময়ে যারা ক্ষমতায় ছিলেন তাদের সমালোচনা করব না। শুধু এটাই বলবো যে, আমার কাছে জনগণের প্রত্যাশা আরও বেশি। জনগণ বিশ্বাস করে তরুণ সাংসদ হিসেবে আমি চাইলে অনেক কিছু করতে পারবো।