তিনি আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক (ঢাকা বিভাগ)। সম্প্রতি মুখোমুখি হয়েছিলেন ঢাকাটাইমসের। কথা বলেছেন হাবিবুল্লাহ ফাহাদ
বিএনপি আগেই ঘোষণা দিয়েছিল ঈদের পর আন্দোলনে যাবে। বিষয়টিকে কীভাবে দেখছেন?
বিএনপির আন্দোলনের ঘোষণা কাগজে বাঘের গর্জন। এটার কোনো বাস্তব ভিত্তি নেই। কারণ বিএনপির আন্দোলনের কোনো ইস্যু নেই।
বিএনপি বলছে নির্দলীয় ও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে তাদের আন্দোলন।
বিএনপি আন্দোলনের নামে যে কথাগুলো বলছে সেটা তাদের ষড়যন্ত্রের অংশ। অতীতেও এসব ষড়যন্ত্র করে সফল হতে পারেনি। আগামীতেও এসব ষড়যন্ত্র টিকবে না। তথাকথিত আন্দোলনের নামে তাদের যে হুমকি-ধমকি এগুলো আমাদের কাছে অর্থহীন, মূল্যহীন। সরকার সাংবিধানিকভাবেই ক্ষমতায় এসেছে। এই সরকার তার নির্দিষ্ট মেয়াদ পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকবে।
তাহলে মধ্যবর্তী নির্বাচনের কোনো সুযোগ নেই?
মধ্যবর্তী নির্বাচনের দাবি হচ্ছে ধোঁয়াশা। এসব হচ্ছে অর্থহীন, অযৌক্তিক ও বাস্তবতাবিবর্জিত কথা। মধ্যবর্তী নির্বাচনের কোনো সুযোগ নেই। নির্বাচন হবে আবার পাঁচ বছর পর সাংবিধানিকভাবে। এটা আমাদের দলের অবস্থান। বিএনপি তো বর্তমান সরকারকে অবৈধ বলছে। তাহলে দাবিটা কার কাছে করছে? এসব তাদের অগণতান্ত্রিক দাবি।
তাহলে বিএনপি গণতান্ত্রিক দল নয়?
সাবেক বিরোধী দল সংবিধানকে যদি বিশ্বাস করে তাহলে পাঁচ বছর অপেক্ষা করবে। অপেক্ষা করে পাঁচ বছর পরই এই সংবিধানের অধীনে নির্বাচনে অংশ নেবে।
আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সহিংসতা সৃষ্টি হতে পারে বলে কি আপনি মনে করেন?
বিএনপি অতীতেও আন্দোলন করেছে। আন্দোলনের নামে ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত ছিল। নৈরাজ্য ও সন্ত্রাস সৃষ্টি করেছিল। আগুন দিয়ে জীবন্ত মানুষ পুড়িয়ে মেরেছে।
সহিংসতা হলে মোকাবিলা করবেন কীভাবে?
বিএনপির সহিংসতা অতীতেও সরকার দক্ষ হাতে মোকাবিলা করেছে। আবারও এ ধরনের পরিস্থিতি সৃষ্টির চেষ্টা করা হলে প্রয়োজনে আরও কঠোরভাবে মোকাবিলা করা হবে।
বিএনপির সঙ্গে আলোচনায় বসার ব্যাপারে আওয়ামী লীগের কোনো সিদ্ধান্ত কি আছে?
বিএনপির সঙ্গে সংলাপের কোনো পরিবেশ নেই।
আপনারা বলেছিলেন জামায়াতকে ছেড়ে আসলে সংলাপ হতে পারে।
সংলাপে বসার জন্য এটা পূর্বশর্ত নয়। তবে বিএনপি আগে জামায়াতকে ছেড়ে আসুক। তখন আমরা দেখি যে তারা মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষে রাজনীতি করছে কি না। মূলত বিএনপি কখনও জামায়াতকে ছাড়তে পারবে না। আর মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষে রাজনীতিও করতে পারবে না। বরং বিএনপি জামায়াতকে ক্ষমতায় বসিয়ে জঙ্গিবাদকে প্রশ্রয় দিয়েছে।
জামায়াতকে ক্ষমতায় না বসালে জঙ্গিবাদের সৃষ্টি হতো না বলে কি আপনি মনে করেন?
হ্যাঁ, বিএনপি যদি জামায়াতকে সঙ্গে না নিতেন তাহলে জঙ্গিবাদের সৃষ্টি হত না। পৃথিবীতে এই জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চলছে। সেই জায়গায় বিএনপি কেন নিজেদের জায়গায় দাঁড়িয়ে কথা বলতে পারে না?
জামায়াত নিষিদ্ধের ব্যাপারে সরকার এখনই খুব বেশি আগ্রহী নয় বলে অভিযোগ তোলা হচ্ছে...
এসব অভিযোগ মৌখিক। এগুলো অবান্তর ও মনগড়া। এসবের কোনো মূল্য নেই। জামায়াতের ব্যাপারে আওয়ামী লীগের অবস্থান অতীতে যা ছিল, এখনও তাই আছে। ভবিষ্যতেও তাই থাকবে। জামায়াত মুক্তিযুদ্ধবিরোধী অপশক্তি। তাদের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক লড়াই অব্যাহত থাকবে।
জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে আওয়ামী লীগের সম্মেলনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। এই প্রক্রিয়া কতদূর এগিয়েছে?
আগস্ট মাস চলছে। শোকের এই মাসে আমরা বিভিন্ন ধরনের কর্মসূচি নিয়ে ব্যস্ত থাকব। এই মাস পার হলে পর্যায়ক্রমে সম্মেলনগুলো করা হবে।
অনেকে বলছেন দলের সাংগঠনিক বিপর্যয়ের কারণে নারায়ণগঞ্জ, ফেনী, লক্ষ্মীপুরে সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে।
এগুলো কোনোটাই দলের অভ্যন্তরীণ বিষয় নয়। সবই সন্ত্রাসী ঘটনা। সন্ত্রাসী যেই হোক না কেন সরকার তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে।
দল ক্ষমতায় থাকলে সাংগঠনিক কর্মকা- গতি হারায় বলে অভিযোগ করা হয়। আওয়ামী লীগের ক্ষেত্রে কি এমনটা ঘটছে?
মোটেও নয়। সাংগঠনিক কর্মকা-গুলো তো আমরা ঠিকভাবেই পালন করছি। পুরো আগস্ট মাস দলের যে কর্মকা- এগুলো তো রাজনীতিরই অংশ। এর বাইরেও তো আমরা নানা কর্মসূচি পালন করছি।
(ঢাকাটাইমস/০৪ আগস্ট/ এইচএফ/ এআর/ ঘ.)